রবিবার, ১৫ মে ২০১৬
‘এমন কোনও মাদক নেই যা নেইনি’
Home Page » বিনোদন » ‘এমন কোনও মাদক নেই যা নেইনি’তার জীবন যে কোনও গল্প-উপন্যাসকে হার মানাবে। তিনি নিজে রুপালি পর্দায় যে সব চরিত্রে অভিনয় করেন, তার থেকে কোনও অংশ কম রোমাঞ্চকর নয় তার নিজের জীবন। ড্রাগ, বিয়ে ভাঙা, মায়ের মৃত্যু, টাডা, জেল - কী দেখেননি তিনি! তিনি সঞ্জয় দত্ত।তার জীবনী নিয়ে সিনেমা শুরু হয়েছে। তার আগেই খানিকটা অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন মুন্নাভাই।
দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরলেন।
বলেন, ‘আমি কোনও অজুহাত দিতে চাই না। মাকে হারানোর পর ড্রাগ নেওয়া শুরু করি। কিন্তু সেটা অজুহাত ছাড়া আর কিছু নয়। আসলে এই অজুহাত খাড়া করে নেশা করাটা ভয়ঙ্কর। এটাই ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। ১২ বছর আমি ড্রাগের কবলে ছিলাম। এমন কোনও মাদক নেই যা নেইনি। বাবা যখন আমায় আমেরিকায় নিয়ে যান, রিহ্যাবে আমায় একটা ড্রাগের তালিকা দেওয়া হয়। আমি সেই সবক’টা ড্রাগেই টিক করেছিলাম। কারণ আমি সেই সব ড্রাগ ব্যবহার করেছিলাম। চিকিত্সকরা আমায় দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, আমার হিসেব মতো বেঁচে থাকারই কথা ছিল না। এত ড্রাগ নিলে কেউ বাঁচতে পারে না।’
‘আমি পরিবারের জন্য ড্রাগ ছাড়িনি, ছেড়েছি কারণ আমি এর থেকে বের হতে চেয়েছি। আমি ওই জীবন চাইনি। রিহ্যাব চলাকালীন সব থেকে কঠিন সময় নেশা থেকে বেরিয়ে আসর ঠিক পর। তখন ভেতর থেকে প্রচণ্ড একটা ইচ্ছে জন্ম নিত। একবার ড্রাগ নিলে কী হবে! বারবার এটাই মনে হত। তখনই মনের জোর প্রয়োজন হয়। আমি তরুণ প্রজন্মের সকলকে বলছি, নিজেকে ভালোবাসো, কাজকে ভালোবাসো, পরিবারকে ভালোবাসো। ড্রাগ নিয়ে বেঁচে থাকা কোনও জীবন নয়।’
জেলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জীবনের অন্যতম কঠিন সময় এটাই মনে হয়েছে। ‘জীবনে ২ বার অনেকটা সময় জেলে কাটিয়েছি। প্রথমে বাবা এবং বোন প্রিয়ার পক্ষে সে সময়টা খুব কঠিন ছিল। প্রিয়া রাখির দিন আমার সঙ্গে দেখা করতে আসত। শেষ বার পুনের জেলে কাটিয়েছি। সেখানে লক্ষ লক্ষ মাছির বাস। পোশাক থেকে খাবার সবেতেই মাছি। প্রতি দিন ডাল থেকে মাছি তুলে সেটা খেয়ে নিতাম। আমার সঙ্গে যে সেল ভাগ করত সে ঘেন্না পেত সেই ডাল খেতে। আমি বলতাম তুই কত দিন না খেয়ে থাকবি? আরে জেলে প্রোটিন পাবি কোথায়, ডালে প্রোটিন থাকে।’
সঞ্জয় আরও জানান, তিন বছর সন্তানদের না দেখে থাকাটা খুব কষ্টের ছিল। মাসে ২ বার তিনি সন্তানদের সঙ্গে কথা বলতেন। প্রতিবারই তাঁদের বলতেন, তিনি এখন পাহাড়ে শ্যুটিং করছেন। সেখানে নেটওয়ার্ক খুব খারাপ। তাই কথা বলার সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী বলত বাচ্চাদের জেলে নিয়ে আসার কথা। আমি সঙ্গে সঙ্গে বারণ করতাম। আমি চাইনি ওরা আমায় ছেঁড়া পোশাকে মাথায় টুপি পড়ে দেখুক। এই ছবি সঙ্গে করে ওরা বাঁচুক আমি চাই না।’
বাংলাদেশ সময়: ১২:০১:১৬ ৪৪৪ বার পঠিত