রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৬
কৃত্রিম দ্বীপে চিন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে
Home Page » প্রথমপাতা » কৃত্রিম দ্বীপে চিন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবেবিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে চিন। দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের বরাত দিয়ে গতকাল এ কথা জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ চিন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপটিতে রাডার সিস্টেম, লাইট হাউস, সেনা ব্যারাক, নৌবন্দরÑ সর্বোপরি পুরো অবকাঠামো সচল রাখার জন্য বিদ্যুৎ অপরিহার্য। কিন্তু হাজার মাইল দূরে অবস্থিত চিনের জাতীয় গ্রিড থেকে এই দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ বেশ কষ্টসাধ্য। এ কারণে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত চিনা শিপবিল্ডিং কোম্পানি ভাসমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এ উদ্দেশ্যে কোম্পানিটি ইতোমধ্যে নৌবহর নির্মাণ করেছে। এই নৌবহরে উৎপাদিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ কৃত্রিম দ্বীপ ও চিনের অফশোর তেল কোম্পানিগুলোতে সরবরাহ করা হবে।
একটি কোম্পানির নির্বাহী লিউ ঝেংগুয়োর উদ্ধৃতি দিয়ে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দাবিটি খুবই বাস্তবসম্মত ও প্রকট। চিনা পারমাণবিক শক্তি কর্তৃপরে পরিচালক ঝু দাজহে কয়েক মাস আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করছে চিন। এ জন্য কঠোরভাবে বৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন করা হবে। তবে ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চিনের সেরা ‘সমুদ্র শক্তি’ হওয়ার উচ্চাকাক্সক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
ওই সময় ঝু দাজহে আরও বলেন, চিনের পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন-সমতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে যাবে। অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় চিনে নির্মাণাধীন বেসামরিক পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা বেশি।
ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ইতিহাসে চিনই প্রথম দেশ নয়; ১৯৬০-এর দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর উত্তেজনার মধ্যেই পানামা খাল অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ভাসমান পরমাণু চুল্লি ব্যবহার করে। জাহাজে পরমাণু শক্তির ব্যবহার হচ্ছে সেই ১৯৫৫ সাল থেকে। মার্কিন সাবমেরিন নটিলাসে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। তখন থেকে জাহাজের জন্য বিদ্যুৎ উৎস হিসেবে পরমাণু চুল্লির ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চিন সাগরে দ্বীপের মালিকানা নিয়ে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধিতা চলে আসছে। চিন ও জাপান উভয়ই নিজেদের দ্বীপের মালিক হিসেবে দাবি করে থাকে। কোনো দ্বীপে মালিকানা নিয়ে ফিলিপাইনের সঙ্গেও চিনের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই চিনকে হুশিয়ারি দিয়ে থাকে। বিরোধী শক্তিগুলো হুশিয়ারি তোয়াক্কা না করেই চিন কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ করেছে। গত সপ্তাহে ওই দ্বীপে প্রথমবারের মতো সামরিক বিমান অবতরণ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০:৩০:০৬ ৩৬০ বার পঠিত