মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০১৬

নতুন-পুরনো সবাইকে নিয়ে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » নতুন-পুরনো সবাইকে নিয়ে চলতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০১৬



12__0.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের নতুন নেতাদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কেবল পদ-পদবী কিংবা বক্তৃতাবাজি নয়, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নতুন-পুরনো সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। কোনও ত্যাগী নেতা যাতে বাদ না পাড়ে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক থাকতে নগর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, নগরবাসীকেও সজাগ ও সচেতন করতে হবে। কেউ যাতে সন্ত্রাস কিংবা জঙ্গিবাদে লিপ্ত হতে না পারে, সেজন্য সর্বত্র কঠোর নজরদারি করতে হবে। প্রতিটি এলাকায় নজর রাখতে হবে, কেউ এ ধরনের অপতৎপরতায় জড়িত হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে।

সোমবার গণভবনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ এবং মহানগরীর সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নতুন নেতৃত্বের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী কেবল বক্তৃতাই নয়, সামাজিক দায়িত্বও পালন করতে হবে। আমরা শক্ত হাতে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন করেছি বলেই দেশের মানুষ আজ সুখে-শান্তিতে রয়েছে। দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে চলেছে। এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগের ওপর বারবার আঘাত এসেছে। কিন্তু কেউ এ দলের ভিত নড়াতে পারেনি। কেননা আওয়ামী লীগের শিকড় অত্যন্ত গভীরে ও শক্তিশালী। তাই জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন এবং উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। দেশের জনগণের জন্য যে কোনও ত্যাগ স্বীকারে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

সরকার উৎখাতের আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের জ্বালাও-পোড়াও ও নির্বিচারে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে এভাবে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যার বীভৎসতা অতীতে দেশের মানুষ কখনও দেখেনি। যা বিএনপি-জামায়াত জোট মিলে করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একমাত্র বঙ্গবন্ধুর আমলে ৭ ভাগের ওপর প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। এরপর এবার তার হাতে গড়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের আমলে দেশ ৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে। এটি আর কেউ করতে পারেনি।

তিনি বলেন, দেশে নির্বাচন হচ্ছে। এটি হতেই থাকবে। আগামীতেও নির্বাচন হবে। আমরা স্থানীয় সরকারগুলোও দলীয় প্রতীকের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করছি।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আবেগজড়িত কন্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাবা-মা, ভাইসহ সবাইকে রেখে আমরা দু’বোন বিদেশে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে আর কাউকে পাইনি। দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেই আমি হারানো বাবা-মা, ভাইসহ সবাইকে পেয়েছি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থকরাই তো আমার পরিবার, দেশের জনগণই আমার পরিবার। তাই দেশ ও জনগণের কল্যাণে আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।’

সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগরীতে খুব স্বল্প সময়ে ২৫ লাখ মানুষের স্বাক্ষর গ্রহণ ও জমা দেওয়ার ঘটনারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশ ও জনগণের কল্যাণে তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে চলেছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। এ উন্নয়নের গতিধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। স্বাধীনতার ২৫ বছর পূর্তি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে আমরা পালন করেছিলাম। আগামী ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করা হবে। আমরা সুবর্ণজয়ন্তী এমনভাবে পালন করতে চাই, যাতে সারাবিশ্ব তাকিয়ে দেখবে বাংলাদেশ আর গরিব নয়, উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশ। বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে আমরা গড়ে তুলবোই।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই নবনির্বাচিত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মহানগর উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ এমপি ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এবং মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত ও শাহে আলম মুরাদ প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় মঞ্চে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং উত্তর-দক্ষিণ কমিটির গঠনে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনকারী কেন্দ্রীয় নেতা ড. আবদুর রাজ্জাক ও লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে নবনির্বাচিত নগর এবং থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন নেতাদের পোড়াবাড়ীর চমচম দিয়ে আপ্যায়িত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময়: ০:৪৭:৪১   ৩৪৩ বার পঠিত