বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
বিশ্ব অর্থনীতিতে মোবাইল ফোন দিয়েছে ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার
Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » বিশ্ব অর্থনীতিতে মোবাইল ফোন দিয়েছে ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার
বঙ্গনিউজ ডটকমঃকর্মসংস্থান, দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্যসেবা কিংবা বিশ্ব জিডিপিতে অবদান—সব ক্ষেত্রেই সুসংহত প্রবৃদ্ধির জোগান দিচ্ছে মোবাইল ফোন খাত। সব মিলিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে এই খাতের অবদান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার। মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
স্পেনের বার্সেলোনায় চলছে চার দিনের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস। মেলা উপলক্ষে ‘মোবাইল অর্থনীতি’ নামে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জিএসএমএ। এতে বলা হয়, শুধু উন্নত বিশ্ব নয়, উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোতেও এখন ছড়িয়ে পড়ছে ফোরজি মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক। গত বছর বিশ্বব্যাপী ফোরজি সংযোগ ১০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করেছে। ২০২০ সাল নাগাদ মোবাইল ফোন সংযোগের এক-তৃতীয়াংশ হবে ফোরজি। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ক্রমেই জোরদার হচ্ছে মোবাইল ফোন খাতের অবদান। উৎসাহিত হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যবহার ও নতুন নতুন উদ্ভাবন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে মোবাইল ফোন শিল্প থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে ৩.১ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্ব জিডিপির ৪.২ শতাংশ। ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্ব অর্থনীতিতে মোবাইল ফোন শিল্পের অবদান বেড়ে হবে ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলার।
কর্মসংস্থানেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এই খাত। ২০১৫ সালে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তিন কোটি ২০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে মোবাইল ফোন খাত থেকে। এটি ২০২০ সাল নাগাদ বেড়ে হবে তিন কোটি ৬০ লাখ। এ ছাড়া এই খাত থেকে ২০১৫ সালে বিভিন্ন দেশের সরকারি কোষাগারেও জমা হয়েছে ৪৩০ বিলিয়ন ডলার। কর ও বিভিন্ন রাজস্ব বাবদ এই অর্থ সরকার পাচ্ছে, যা ২০২০ সাল নাগাদ বেড়ে হবে ৪৮০ বিলিয়ন ডলার।
জিএসএমএর মহাপরিচালক ম্যাটস গ্র্যানরিড বলেন, ‘আমাদের নতুন রিপোর্ট বলছে, মোবাইল ব্রডব্যান্ড এখন সত্যিকার অর্থেই বিশ্ব অর্থনীতিতে বিস্ময়কর হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের সব প্রান্তেই গ্রাহকরা এখন উচ্চগতিসম্পন্ন সংযোগ ও সেবা পাচ্ছে। তিনি বলেন, গত বছর মোবাইল ব্রডব্যান্ডের বিস্ময়কর প্রবৃদ্ধি এই খাতসংশ্লিষ্টদের বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে উৎসাহিত করছে। মোবাইল সেবা এখন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষের জন্য একটি সর্বব্যাপী প্ল্যাটফর্ম, যা ক্রেতা-বিক্রেতারা সংযোগ ঘটাচ্ছে এবং উত্পাদন ও উদ্ভাবনে উৎসাহিত করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বে মোবাইল ফোন সংযোগ দাঁড়িয়েছে ৭.৩ বিলিয়ন। এর মধ্যে এক বিলিয়ন হচ্ছে ফোরজি। গত বছর বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নেটওয়ার্ক উন্নয়নের কারণে ফোরজি সংযোগ দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের আওতায় থ্রিজি ও ফোরজি সংযোগ দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। ২০২০ সাল নাগাদ তা বেড়ে ৭০ শতাংশ হবে।
গত বছর মোবাইল ফোনের একক গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৪.৭ বিলিয়ন, যা বিশ্ব জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশ। ২০২০ সাল নাগাদ একক গ্রাহক দাঁড়াবে ৫.৬ বিলিয়ন, যা হবে বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ। এ ছাড়া বর্তমানে মোবাইল ফোন সংযোগের ৪৫ শতাংশ স্মার্টফোনে। তবে কয়েক বছর স্মার্টফোন জোরালো প্রবৃদ্ধি করলেও গত বছর তা কমেছে। প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ডফোর্স বলছে, এ বছরটি স্মার্টফোন কম্পানিগুলোর জন্য আরো প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে। গত বছর স্মার্টফোনের বাজারে ১০.৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এসেছে। এ বছর তা আরো কমে হবে ৮.১ শতাংশ।
গত সোমবার স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হয়েছে চার দিনের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস। এবারের মেলায় দুই হাজার প্রতিষ্ঠান পণ্য বা প্রযুক্তি প্রদর্শনের জন্য নিবন্ধন করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৫:৫৯ ৩৫৯ বার পঠিত