সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

ভাষার বিকৃতি রোধে সচেতন থাকতে হবে

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ভাষার বিকৃতি রোধে সচেতন থাকতে হবে
সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬



রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে গতকাল শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন অনুষ্ঠানে ওই ইনস্টিটিউটকে ইউনেসকোর ক্যাটাগরি-২ ইনস্টিটিউট হিসেবে প্রতিষ্ঠার চুক্তিপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয় l ছবি: পিআইডিবঙ্গনিউজ ডটকমঃবিকৃত উচ্চারণে বাংলা শব্দ ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকাল একটা সংস্কৃতি দেখা যাচ্ছে। বাংলা ভাষা ভুলে যাওয়াটাই যেন একটা বিরাট কাজ। বাংলাকে বিকৃত করে ইংরেজি অ্যাকসেন্টে বাংলা বলাটাকেই কেউ কেউ গৌরবের মনে করেন।’ ভাষার বিকৃতি রোধে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে গতকাল রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান। শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের তিন দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষাশহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। খবর বাসসের।

ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কষ্ট হয় তখনই, যখন দেখি মানুষের মধ্যে বাংলা ভাষাকে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা। যেন বাংলা ভুলে যাওয়া গুণের কাজ! মানুষ আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করবে। এটি তার নিজস্ব এলাকার ভাষা, কিন্তু বাংলাকে ভুলে যাবে না। এ ছাড়া জীবন-জীবিকার জন্য নতুন নতুন ভাষা শিখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভাষা শেখায় অপরাধ নেই। যে যত ভাষা শিখতে পারবে, ততই উন্নতি। কিন্তু এখনকার মানুষজনের মধ্যে একটি জিনিস লক্ষ করি তা হলো, ইংরেজি মাধ্যমে সন্তানদের না পড়ালে যেন ইজ্জতই থাকে না।’

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রাখেন, ‘এ সময় কয়টা ছেলেমেয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করেছে?’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানটি হবে সারা বিশ্বের মাতৃভাষা চর্চার, মাতৃভাষা গবেষণা করার পাদপীঠ। এই প্রতিষ্ঠান যেন কেউ বন্ধ করতে না পারে, সে লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করেছি। এ প্রতিষ্ঠানটা যাতে ভালোভাবে কার্যক্রম চালাতে পারে, সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। প্রয়োজনীয় ফান্ডের ব্যবস্থাও করব।’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ভাষা রক্ষার কাজ এবং গবেষণা বাড়াতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের সব ভাষা রক্ষার দায়িত্ব এখন আমাদের ওপর।’

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ আন্দোলনের শুরুতেই চারবার কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। এ আন্দোলনে প্রাণ বিসর্জনকারী রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কোনো অর্জনই সহজে আসে না। তাদের রক্তেই আমরা মাতৃভাষা বাংলাকে পেয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সারা পৃথিবী আজ বাংলাদেশকে জানে। বাংলা ভাষার গৌরবের কথা জানে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারির কথা জানে। বাঙালির বীরত্বের কথা জানে। সে এক মহান অর্জন।’

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আতিউর রহমান অনুষ্ঠানে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি মননের বাতিঘর’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ইউনেসকোর ঢাকা অফিসের প্রধান বিয়াট্রিস কালডুন শুভেচ্ছা বক্তৃতায় ইউনেসকোর মহাপরিচালক ইরিনা বুকোভার শুভেচ্ছা বাণী অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৫১:৪৮   ৩৬৭ বার পঠিত