সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

রাজধানীজুড়ে একুশের সাংস্কৃতিক আয়োজন

Home Page » বিনোদন » রাজধানীজুড়ে একুশের সাংস্কৃতিক আয়োজন
সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬



 

বঙ্গনিউজ ডটকমঃনানা আয়োজনে বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষাশহীদদের স্মরণ করল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে রাজধানীর সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আয়োজন ছিল উৎসবমুখর। তারই কয়েকটি অনুষ্ঠান নিয়ে আমাদের এই প্রতিবেদন।

ছায়ানট: ছায়ানটের আয়োজনটি ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। সংগীত পরিবেশনা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী দিয়ে সাজানো হয়েছিল অনুষ্ঠানটি। ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের শিরোনাম ছিল ‘একুশের শ্রদ্ধার্ঘ্য’। শুরুতে শিশুশিল্পীদের কণ্ঠে ছিল সম্মেলক গান ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’। শিশুদের কণ্ঠেই ছিল ‘মানুষ হ, মানুষ হ, আবার তোরা মানুষ হ’ গানটিও। গানের পর প্রদর্শিত হয় সেন্টু রায় নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র মধুর আমার মায়ের হাসি। সম্মেলক কণ্ঠে শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘মিলিত প্রাণের কলরবে’ ও ‘রক্ত শিমুল তপ্ত পলাশ দিল ডাক’। ঐতিহ্য অনুযায়ী সব শেষে পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত।

শহীদ মিনার: কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছিল ব্যতিক্রমী এক আয়োজন। ছিল বাংলার সঙ্গে বিদেশি ভাষার গান ও কবিতার বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় বিদেশিদের নিয়ে ভাষার গান ও কবিতাপাঠের অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে শিল্পকলা একাডেমি। শহীদ মিনারের বিপরীত প্রা‌ন্তের গগন শিরীষ বৃক্ষতলটি ছিল অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। ঢাকা সাংস্কৃতিক দলের ১০ জন শিল্পী পরিবেশন করেন ১২টি দেশের গান। এর আগে বাউলসাধক শাহ আবদুল করিমের ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’ গানটি পরিবেশন করেন শিল্পীরা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী। আড়াই ঘণ্টা ব্যাপ্তির অনুষ্ঠানে ১৫টি পরিবেশনায় অংশ নেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা ও তাঁদের সন্তানেরা।  বাংলাদেশের আদিবাসী গান পরিবেশন করেন সোয়ে সোয়ে ইউ মারমা। ভিয়েতনামের অবিসংবাদিত নেতা হো চি মিন স্মরণে ‘ভিয়েতনাম-হো চি মিন’ শীর্ষক সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী আবিদা সুলতানা।

শিল্পকলা একাডেমি: নানা পরিবেশনায় বসন্তসন্ধ্যায় মুখরিত হয়ে ওঠে শিল্পকলা একাডেমির নন্দন মঞ্চ। জাতীয় সংগীতের পরিবেশনা দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর সমবেত কণ্ঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সুরে পরিবেশিত হয় নৃত্য। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বিদেশি দূতাবাসের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সংগীত পরিবেশনা ও কবিতা পাঠ। একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের শিল্পীরা পরিবেশন করেন ভাওয়াইয়া। ‘এই আমাদের বাংলাদেশ’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে আইরিন পারভীনের পরিচালনায় নৃত্যদল বাংলার মাটি। কবি নির্মলেন্দু গ‌ুণ রচিত ‘তোমার পায়ের নীচে আমি’ কবিতা অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশন করে দীপা খন্দকারের দল। একক সংগীত পরিবেশন করেন রথীন্দ্রনাথ রায়, অণিমা মুক্তি গোমেজ, আকরামুল ইসলাম, চন্দনা মজুমদার, ইয়াসমিন আলী প্রমুখ। দলীয় সংগীত পরিবেশন করে ঋষিজ।

রবীন্দ্রসরোবর: ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরের উন্মুক্ত মঞ্চটিতে ছিল দেশাত্মবোধক গান, নাচ, আবৃত্তি, পথনাটকসহ রকমারি পরিবেশনা। ‘রাষ্ট্র চলবে বাংলায়, না চলা অন্যায়’ স্লোগানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ১৪ দিনব্যাপী একুশে অনুষ্ঠানমালার শেষ দিন ছিল গতকাল রোববার। সমাপনী দিনে বিকেল থেকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। ‘বর্ণমালা আমার বর্ণমালা’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য দিয়ে শুরু হয় আংগিকালের পরিবেশনা। ‘বিহান বেলার গান’ আবৃত্তি প্রযোজনা নিয়ে মঞ্চে আসে ঢাকা স্বরকল্পের শিল্পীরা। এরপর সম্মেলক কণ্ঠে ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল’ গানটি পরিবেশন করে দোয়েল ললিতকলা একাডেমি। একক কণ্ঠে গান শোনান শ্যামল কুমার নট্ট ও ফেরদৌসী কাকলী। কিশোর থিয়েটারের দলীয় আবৃত্তি প্রযোজনায় ছিল ‘লাল টুকটুক বর্ণমালা লাল সবুজের স্বাধীনতা’। নৃত্যজন সংগঠনের শিল্পীদের ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশনার পর একক গান পরিবেশন করেন ভারতীয় শিল্পীদ্বয় এরিনা মুখার্জী ও শীর্ষ রায়। দলীয় গান পরিবেশন করে কলকাতার গানের দল দোহার, ঢাকার স্বভূমি ও আনন্দ সংগঠনের শিল্পীরা। ছিল একক কবিতা ও গান পরিবেশনা।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৫:৪৯   ৩৫৯ বার পঠিত