রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৬

এবার দেশে আনা হচ্ছে ইন্টারনেট ফিল্টারিং যন্ত্র।

Home Page » এক্সক্লুসিভ » এবার দেশে আনা হচ্ছে ইন্টারনেট ফিল্টারিং যন্ত্র।
রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৬



 01

বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ

ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে শিগগিরই ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন (কনটেন্ট ফিল্টারিং) আনা হচ্ছে দেশে। এই টুলের মাধ্যমে ইন্টারনেট, ওয়েব পোর্টাল ও কনটেন্ট ফিল্টারিং করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বিনিয়োগ করবে সরকার। সবকিছু চূড়ান্ত হলে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোতে (আইআইজি) স্থাপন করা হবে কনটেন্ট ফিল্টারিং প্রযুক্তি। আইআইজিগুলোয় এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংযোজন করা হলে ওয়েব ইন্টারফেসের মাধ্যমে এর মূল নিয়ন্ত্রণ থাকবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) হাতে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়, সমাজ, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে জড়িত ওয়েবসাইটগুলো থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এমন বিষয় শনাক্ত করে তা বন্ধ করে দেয়া হবে। এর আগে সরকার ইন্টারনেট নজরদারি করার ঘোষণা দিয়েছিল। এর আওতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে কে কী করছেন বা কী ধরনের পোস্ট করা হচ্ছে সেসব মনিটরিং করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এবার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ফিল্টারিং করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এর আগে ডিসেম্বরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী তারানা হালিম ইন্টারনেট ফিল্টারিংয়ের ঘোষণা দেন। ওই সময় তিনি বলেন, যারা ইন্টারনেটের অপব্যবহার করছে, তাদের এ কাজ থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। বিভিন্নভাবে সাইবার অপরাধ হয়। ইন্টারনেটে উত্ত্যক্ত করার অনেক পদ্ধতি আছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তরুণীরা। ৭৩ শতাংশ নারী সাইবার অপরাধের শিকার হন। এদের মধ্যে মাত্র ২৩ শতাংশ অভিযোগ করেন। ৩৫ শতাংশ নারী কোনো অভিযোগই করতে চান না। তিনি বলেন, আমরা একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যাতে দেশের বাইরে থেকে কোনো আপত্তিকর বিষয় ইন্টারনেটে যাচাই-বাছাই হয়ে আসে। লাইসেন্সধারী ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীদের তথ্য আমাদের কাছে আছে। ইন্টারনেট সেবা দিতে হলে অন্যদের লাইসেন্স নিতে হবে। সেবা প্রদানকারীদের তথ্য তাদের রাখতে হবে। ফলে সবকিছু একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে। মন্ত্রীর ওই ঘোষণার পরই নড়েচড়ে বসে বিটিআরসি। তৎপরতা শুরু করে ইন্টারনেট ফিল্টারিং করার উদ্যোগে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করেন এমন কয়েকজন এই প্রযুক্তিকে ব্যক্তি ও ইন্টারনেট স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন। তারা বলেন, সাইবার সিকিউরিটির নামে এটা বাড়াবাড়ি। বিষয়টি এখন পর্যালোচনা করছে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি। এ প্রসঙ্গে বিটিআরসির সচিব ও মুখপাত্র মো. সারওয়ার আলম মানবজমিনকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শিগগিরই এ নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিটিআরসির দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ৫ কোটি ৩৯ লাখ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ। প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখতেই এ উদ্যোগের কথা ভাবা হচ্ছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আর এটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির। বিটিআরসি জানিয়েছে, এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে যে কোনো কনটেন্ট ফিল্টারিং করা যাবে। এর ফলে কোনো ধরনের খারাপ তথ্য বা সাইট আসবে না। এলেও সরিয়ে ফেলা যাবে। ফিল্টারিং করার পরও যে কোনো সাইটে ঢোকা এবং চিহ্নিত করা যাবে। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট সাইট ব্লক করা যাবে। দেশে যে ডিজিটাল অপরাধ হচ্ছে, তার বাহন কিন্তু ইন্টারনেট। সরকার যদি রাষ্ট্র, নাগরিককে নিরাপদ রাখতে চায়, তাহলে তাদের ইন্টারনেট নিরাপদ রাখতে হবে। ফলে ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। সংশ্লিষ্টরা জানান, দিন দিন মোবাইল কলের ব্যবহার কমছে। বাড়ছে মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার। অনেক ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সক্রিয় হওয়ায় এ তথ্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, লাইন, স্কাইপ ইত্যাদির ব্যবহার বেড়ে চলেছে। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই এসবের মাধ্যমে বিনা খরচে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছেন গ্রাহকরা। এ অবস্থায় সরকার যদি ফিল্টারিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ২০০২ সালে যেখানে গ্রাহক সংখ্যা ৭০ হাজার, ২০০৪ সালে ১ লাখ, ২০০৯ সালে ৭০ লাখ, ২০১১ সালে ২ কোটি, ২০১৩ সালের জুলাই মাসে ২ কোটি ৬০ লাখ, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ৩ কোটি ৯৪ লাখ ছিল।।

বাংলাদেশ সময়: ০:৪০:৩৬   ৩৫৮ বার পঠিত