বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৬
৩ জনের ফাঁসি কার্যকর আজ রাতে
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ৩ জনের ফাঁসি কার্যকর আজ রাতেবঙ্গনিউজ ডটকমঃ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফ আহমেদসহ দলটির পাঁচ নেতা হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এ জন্য যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ফাঁসি কার্যকর হতে পারে বলে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া নয়জনের মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। একজন কারাগারে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন।
যে তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হতে চলেছে, তাঁরা হলেন কুষ্টিয়ার মিরপুরের রাজনগর গ্রামের হাবিবুর রহমান, কুর্শা গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও রাশেদুল ইসলাম।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক শাহজাহান আহমদ গতকাল বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে জানান, ‘ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত। যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর করা হবে। ওই তিনজনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হয়েছে।’
তিনজনের পরিবার ও মিরপুর থানার ওসি কাজী জালাল উদ্দীন প্রথম আলোকে জানান, কাল শুক্রবার সকাল সাতটায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনটি পরিবারের সদস্যদের উপস্থিত হয়ে তাঁদের ওই তিন স্বজনের মরদেহ গ্রহণ করতে বলেছে যশোর কারা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ফাঁসি কার্যকর হতে যাওয়ার খবরে খুশি নিহত নেতাদের পরিবার ও জাসদের নেতা-কর্মীরা। জাসদের নিহত নেতা এয়াকুব আলীর ছেলে ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমার বাবাসহ যাঁরা সেদিন নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের খুনিদের ফাঁসি কার্যকর হবে জানতে পেরে আমরা খুব খুশি। ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা করছি।’
তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হাবিবুর রহমানের ভাই হাসিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই দিনমজুর ছিলেন। হত্যার ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন না। দারিদ্র্যের কারণে ভাইয়ের পক্ষে তাঁরা কোনো আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেননি।
১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাসবিরোধী এক জনসভা চলছিল। এ সময় একদল সন্ত্রাসী গুলি চালালে ঘটনাস্থলে নিহত হন কাজী আরেফ আহমেদ, তৎকালীন জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরায়েল হোসেন ও শমসের মণ্ডল। ওই দিনই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ আসামির ফাঁসি ও ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট নয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন, একজনকে খালাস দেন ও ১২ জনের সাজা মওকুফ করেন। এরপর এ রায়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিদের দুজন রাশেদুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। পরে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া নয়জনের সাজা বহাল রাখেন। এই নয়জনের মধ্যে পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। একজন কারাগারে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন। এখন বাকি তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৬:৪৪ ২৮২ বার পঠিত