বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৬

টেন্ডুলকার একজনই, আসবে না আর

Home Page » ক্রিকেট » টেন্ডুলকার একজনই, আসবে না আর
বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০১৬



যখন দুজনে এক সঙ্গে ব্যাটিং করতেন। সংগৃহীত ছবি

যখন দুজনে এক সঙ্গে ব্যাটিং করতেন। সংগৃহীত ছবিবঙ্গনিউজডটকমঃ ২০০১-০২ মৌসুমে ভারতের ম্যাচ মানেই দর্শকদের চোখ কপালে ওঠা। এক টেন্ডুলকার মাত্রই কভারে বল ঠেলে এক রান নিলেন। পরের বলে অন্যজন ঠিক একই শট খেলে কভার দিয়েই মারলেন চার! আরে হচ্ছেটা কী? মাঠে দুই-দুজন টেন্ডুলকার এল কী করে!


শুরুর বীরেন্দর শেবাগকে যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের সবারই মনে পড়ার কথা কোন দৃশ্যের কথা বলা হচ্ছে। শচীন টেন্ডুলকারকে আদর্শ মেনে বড় হওয়া শেবাগ হতে চেয়েছিলেন পরবর্তী টেন্ডুলকার। সে জন্য ব্যাটিং স্ট্যান্স, স্টাইল, শট এমনকি হাঁটাচলাও নকল করতেন প্রথম দিকে। দুজনের শারীরিক গঠনও প্রায় একই হয়ে যাওয়ায় গ্যালারি থেকে বোঝার উপায় ছিল না, ব্যাটিং আসলে করছেন কে—শেবাগ নাকি টেন্ডুলকার।

 

কিন্তু কিছুদিন পরেই নিজের ব্যাটিং স্টাইল পরিবর্তন করে ফেলেন শেবাগ। আসল শেবাগের দেখা মেলে এরপরই। ধ্বংসাত্মক ব্যাটিং দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজের নাম আলাদা করেই লিখিয়েছেন এই ভারতীয় ওপেনার।

 

কিন্তু কী এমন ঘটেছিল যে, এত দিনের চেষ্টায় যে ব্যাটিং স্টাইল তৈরি করেছিলেন, তা পুরোপুরি পরিবর্তন করে ফেললেন শেবাগ? এত দিন পর শেবাগ নিজেই সেই রহস্যের সমাধান দিলেন। ক্রিকইনফোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানালেন, ‘যখন দলে ঢুকলাম, দ্রুত রান নিতে হবে কিংবা আমাকে ভিন্ন কিছু করতে হবে—এসব নিয়ে কোনো ভাবনা ছিল না। আমি শুধু আমার মতো খেলতাম, টেন্ডুলকারের মতো ব্যাটিং করতে চাইতাম। তবে কিছুদিনের মধ্যেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, টেন্ডুলকার কেবল একজন হতে পারবে।’

 


‘টেন্ডুলকার’ হওয়ার স্বপ্নের ইতি তাই সেখানেই টেনে দিয়েছিলেন শেবাগ। একজন টেন্ডুলকার, একজন আইনস্টাইন কিংবা একজন রবীন্দ্রনাথ একবারই জন্মে। আসে না আর। তাই টেন্ডুলকারের নতুন সংস্করণ না হয়ে বীরু হয়ে উঠতে চাইলেন ‘শেবাগ’। তাতেই মিলল সাফল্য।

 

শেবাগের ভাগ্য ভালো ক্যারিয়ারের শুরুতেই ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। টেন্ডুলকার হওয়া সম্ভব নয় ভেবে তিনি ‘শেবাগ’ হওয়াতেই মনোযোগ দিয়েছেন, ‘আমি বুঝলাম, আমাকে খেলার ধরন পাল্টাতে হবে। স্ট্যান্স ও ব্যাক লিফটে পরিবর্তন আনলাম। তারপর আমি নিজেই একটা স্টাইল সৃষ্টি করেছি এবং সেই অনুযায়ী খেলেছি।’

 

শেবাগের কথা থেকে উঠতি ক্রিকেটাররা বার্তা নিতে পারে। এখন যারা কিশোর, যারা কিনা একদিন তামিম, সাকিব কিংবা মুশফিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে; সেই স্বপ্নের তাড়না নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অবশ্যই ভালো। তবে হুবহু আরেকজন সাকিব হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে নিজের পরিচয়ে পরিচিত হওয়াই উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪২:০৫   ২৭০ বার পঠিত