রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০১৬
ব্যতিক্রমী দুই বলিউডের ছবি
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ব্যতিক্রমী দুই বলিউডের ছবিবঙ্গনিউজ ডটকমঃ বাণিজ্য কিংবা সংবাদ শিরোনাম— কোনো দৌড়েই এগিয়ে ছিল না এই দুই ছবি। কিন্তু প্রশংসার হিসেবে শীর্ষ ১০ ছবির তালিকায় আছে এই দুই ছবির নাম। এর একটি ‘মাঝি’ এবং অন্যটি ‘দৃশ্যম’। একই সঙ্গে এ ছবি দুটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি চরিত্রে অভিনয় করে দৃষ্টি কেড়েছেন বেশ কয়েকজন শিল্পী। পুরস্কারের দৌড়ে হয়তো তাঁদের নামগুলো আগেই থাকবে।
মধুর প্রেমকাহিনি, ‘মাঝি: দ্য মাউন্টেন ম্যান’। এক সত্য কাহিনি। মর্মস্পর্শী, রুদ্ধশ্বাস,কেন্দ্রীয় দুটি চরিত্র দশরথ আর ফাগুনিয়া। যে প্রেমের শপথ রাখতে সারা জীবন বাজি রাখতে পারে এক পাগল প্রেমিক। অর্ধ মৃতা, অন্তঃসত্ত্বা ফাগুনিয়াকে পাহাড় পেরিয়ে বয়ে নিয়ে যেতে যেতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। বাঁচাতে পারেননি দশরথ। সেদিন থেকেই তাঁর প্রতিজ্ঞা সেই পাহাড় ভাঙার। প্রতিদিনই একটু একটু করে পুরো পাহাড়টাকেই ভেঙে ফেলার শপথে দশরথ পাহাড় কাটেন। যাতে একটা রাস্তা তৈরি হতে পারে, শহরে যাওয়ার। যুগের পর যুগ ধরে, সমাজ সংসার ও রাষ্ট্রের নিন্দা, তামাশাকে প্রত্যাখ্যান করে, শুধুই লক্ষ্যে অটল থাকার।
বাইশ বছর ধরে বাস্তবের দশরথ পাহাড় কেটে পথ করেছিলেন। শুধুমাত্র হাতুড়ি, শাবল সম্বল করে। এই সত্য কাহিনির শেষ হয়েছিল ২০০৭ সালে। বাস্তবের দশরথ মাঝি মারা গিয়েছিলেন সেই বছরেই। তারও চার বছর বাদে সরকারি উদ্যোগে কাটা পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও এত দিন এ ছবির জন্য অপেক্ষা করতে হলো কেন, তা ছবির দশরথকে দেখলেই বুঝতে পারা যায়। নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির মুখ আর অবয়ব এবং অভিব্যক্তি ছাড়া এ ছবি তৈরিই হতো না। সারা ছবি জুড়ে দর্শক মন্ত্রমুগ্ধ, স্তব্ধ হয়ে থাকবেন।
কখনো ভয়ংকর, কখনো প্রতিদ্বন্দ্বী, কখনো প্রেমিকার মতো স্নিগ্ধ। রাধিকা আপ্তে ও নওয়াজের প্রেম দৃশ্যের সারল্য আর সাবলীলতাকে মাটির রঙে বর্ণে ও শোভায় মিলিয়ে দিয়েছেন নির্মাতা। রাধিকা আপ্তের সরল সৌন্দর্য টাকেও যেন পুরোপুরি ব্যবহার করেছেন তিনি।
‘দৃশ্যম’ ছবিটির কাহিনি যেন বলিউডের ধারণা মেনে আবারও এক সাধারণ মানুষের অসাধারণ দিক নিয়েই। ‘দৃশ্যম’ আসলে দূরদৃষ্টির সঙ্গে ক্ষমতার লড়াইয়ের কাহিনি। সীমিত ক্ষমতার সঙ্গে রাষ্ট্রের লড়াইয়ের কাহিনি। ছোট পরিবারের মূল্যবোধের সঙ্গে আইনের ধৃষ্টতার লড়াই। আর এই লড়াইয়ে, রক্তক্ষয় মেনে নিয়েও জয়ী হয় সাধারণের সংহতি। এই ছোট পরিবারটির সংহতি কীভাবে এক অপ্রতিরোধ্য আইনের, রাষ্ট্রের মোকাবিলা করে, সেটাই দেখানো হয়েছে ছবিটিতে। ১৬৩ মিনিটের লম্বা ছবি, যেন শেষ হয় এক নিমেষেই। রুদ্ধশ্বাস, গতিময়।
ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন অজয় দেবগণ। প্রায় পুরো ছবিতে গভীর এক অভিব্যক্তি নিয়ে ছিলেন তিনি। ছবিতে ডিআইজি-র চরিত্রে টাবু। অনেক দিন পর পর্দায় এক শক্তিশালী বুদ্ধিমতী একরোখা নারী চরিত্রে অপূর্ব লাগবে টাবুকে। ভালো লাগবে রজত কাপুরের অভিনয়ও।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২০:৪০ ৩২০ বার পঠিত