বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫

‘পাগলাটে’ ম্যাচে ইউনাইটেডের বিদায়

Home Page » খেলা » ‘পাগলাটে’ ম্যাচে ইউনাইটেডের বিদায়
বুধবার, ৯ ডিসেম্বর ২০১৫



নালদোর এই গোলেই নিশ্চিত হয় ইউ​নাইটেডের বিদায়। ছবি: এএফপি।  বঙ্গনিউজ ডটকমঃ রোলার কোস্টারে চড়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে কখনো আপনার? না থাকলে কোনো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থককে জিজ্ঞেস করে দেখুন। চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট কাল এমন উত্থান-পতনের অনুভূতির মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছে ইউনাইটেড সমর্থকদের। এই এক মিনিটে মনে হয়েছে ‘হুররে, আমরা পরের রাউন্ডে!’ , তো পরের মিনিটেই ‘আফসোস, হলো না!’

রোলার কোস্টারের অনুভূতিটাও অনেকটা এই ‘হুররে-আফসোসে’র মতো। যদিও এর শেষটা হয়ে আনন্দ দিয়ে, ইউনাইটেড সমর্থকদের কালকের অভিজ্ঞতাটা শেষ হয়েছে আক্ষেপ নিয়েই। ভলফসবুর্গের মাঠে ৩-২ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্ব থেকে বাদ পড়ে গেছে লুই ফন গালের দল।

হিসেবের জটিলতা কিছুটা ছিল ম্যাচের আগে। জিতলে কোনো সমস্যা নেই, সরাসরি শেষ ষোলোতে। তা না হলে অন্তত গ্রুপের অন্য ম্যাচে হল্যান্ডে পিএসভি আইন্দহোফেন-সিএসকেএ মস্কো ম্যাচে আইন্দহোফেনের ফলের সঙ্গে মিল রাখতে হবে। হলো সম্পূর্ণ উল্টো। ওদিকে আইন্দহোফেন জিতল, আর এদিকে হেরে গেল ইউনাইটেড। ইংলিশ দলটিকে ইউরোপা লিগে ঠেলে দিয়ে পরের রাউন্ডে চলে গেছে ফিলিপ কোকুর আইন্দহোফেন ও জার্মান ভলফসবুর্গ।

অবশ্য তার আগে ওই যে শেষ ১৫ মিনিটের নাটকীয়তা ছিল। দ্বিতীয়ার্ধটা ইউনাইটেড শুরু করেছিল ২-১ এ পিছিয়ে থেকে। প্রথমার্ধের ১০ মিনিটে অ্যান্থনি মার্শিয়ালের গোলের পর ভলফসবুর্গের হয়ে গোল দুটি করেন ডিফেন্ডার নালদো ও পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ভেইরিনহা। ইউনাইটেড হারছিল ঠিকই, কিন্তু ওদিকে হল্যান্ডে ম্যাচের ৭৫ মিনিটের সময় সিএসকেএ মস্কো এক গোল করে ফেলে। আইন্দোহোফেনও হারছিল দেখে ইউনাইটেড সমর্থকেরা একটু আশায় বুক বাঁধতে শুরু করে।

এরপরই বাঁক বদল। ৭৮ মিনিটে লুক ডি ইয়ং-এর গোলে আইন্দহোফেন সমতায় চলে আসে। ইউনাইটেড ২-১ এ পিছিয়ে, আইন্দহোফেন ১-১ ড্র। অবস্থা এমন থাকলে ইউনাইটেড বাদ। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের তিন বার শিরোপা জয়ীরা এত সহজে বাদ পড়ে যাবে এটা বোধহয় ফুটবল বিধাতারও ইচ্ছে ছিল না। ভলফসবুর্গ অ্যারেনায় ৮২ মিনিটে স্বাগতিক মিডফিল্ডার করে বসলেন আত্মঘাতী গোল! ইউনাইটেড আবার সমতায়। ইউনাইটেডই যাচ্ছে পরের রাউন্ডে!

ইউনাইটেড সমর্থকদের মুখের হাসি মিলিয়ে গেল দুই মিনিট পরই। একেবারে ‘জোড়া’ আঘাত-একটি জার্মানিতে, আরেকটি হল্যান্ডে। জার্মানিতে ইউনাইটেডের স্বপ্নঘাতক আবারও নালদোই। কর্নার থেকে মার্সেল শেফারের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে বল জড়িয়ে দিলেন ইউনাইটেডের জালে। তাও হয়তো একটু ক্ষীণ আশা ছিল, ওদিকে যদি মস্কো উদ্ধার করতে পারে। একটা গোল করে আইন্দহোফেনকে হারিয়ে দিলেই তো হয়। হলো উল্টোটা। ৮৫ মিনিটে আইন্দহোফেনের ডেভি প্রপার বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে মস্কোর সব প্রতিরোধ ভেঙে দিলেন। ভেঙে দিলেন ইউনাইটেড সমর্থকদের মনও।

গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা হয়নি। এই মৌসুমে গ্রুপপর্বে এসেছে প্লে-অফ খেলে। ইউনাইটেডকে ঘিরে হয়তো তবু বড় স্বপ্ন ছিল সমর্থকদের। কিন্তু তা আর সত্যি হলো না। গত কয়েকদিন ধরে যেমন ‘ঘুমপাড়ানি’ ফুটবল খেলছে ইউনাইটেড, তার চেয়ে কাল অনেক ভালো খেলেছে। তাতেও শেষরক্ষা হলো না। অবশ্য কিছুটা হতভাগাও ভাবতে পারে নিজেদের। হুয়ান মাতার গোলটা অফসাইডের কারণে ওভাবে বাতিল না হয়ে গেলে ভাগ্যটা অন্যরকমও হতে পারত। আর রাইট ব্যাক মাত্তেও দারমিয়ানের চোটটা ওভাবে না ভোগালেও ভিন্ন কিছু হতেই পারত।

ম্যাচ শেষে কোচ ফন গালের কণ্ঠেও উঠে এল ম্যাচের নাটকীয়তার গল্পটা, ‘এটা বেশ পাগলাটে একটা ম্যাচ ছিল। আমরা গোল করছিলাম, ওরা আবার গোল করে সেগুলোকে মূল্যহীন করে দিচ্ছিল। তারপরও আমাদের সুযোগ ছিল, ওদেরও ছিল। আমরা গোল করলাম, ওরাও দুই মিনিট পর গোল করল। আমরা জয়ের জন্য খেলেছিলাম, কিন্তু শেষ দিকে চোটের কারণে দশ জন নিয়ে খেলতে হওয়ায় এর বেশি কিছু করতে পারিনি।’

এই করতে না পারাটা এখন বেশ ভোগাবে। শনি-রোববার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচের আগে বৃহস্পতিবার গুলোতে ইউরোপা লিগের ম্যাচ ফন গালের জন্য খুব একটা স্বস্তির হওয়ার কথা নয়। তথ্যসূত্র: এএফপি

বাংলাদেশ সময়: ১৩:০১:০৫   ২২৩ বার পঠিত