বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫
ইসরাইলের সঙ্গে আইএসের সখ্যতা কেন?
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ইসরাইলের সঙ্গে আইএসের সখ্যতা কেন?
বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
সলামিক স্টেট (আইএস) বিশ্বব্যাপী ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও ইসরাইলের সঙ্গে তাদের সখ্যতা কেন? ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোন কথা বলছে না তারা। ফিলিস্তিনিদের হত্যা ও ইসরাইলের ইসলামবিরোধী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কোনো হুমকি দেয় না আইএস। আইএসের বিরুদ্ধে সারাবিশ্ব যুদ্ধ ঘোষণা করলেও ইসরাইলের কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না তাদের । সিরিয়া থেকে দূরবর্তী ইউরোপের আধুনিক সেক্যুলার রাষ্ট্র ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নিরপরাধ মানুষের ওপর হামলা চালালেও ঘরের পেছনের মুসলিমবিদ্বেষী ইসরাইলে হামলার কোনো ইঙ্গিতও দেয়নি আইএস। অথচ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোসহ ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশই ইসরাইলের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব। বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, আইএসকে পরিচালনা করছে স্বয়ং ইসরাইল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কোনো কোনো প্রতিবেদনে আইএস খলিফা আবুবকর আল বাগদাদিকে ইহুদি সন্তান বলে অভিহিত করা হয়েছে। আর সে কারণেই ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের দেখানো ছকেই পরিচালিত হচ্ছে আইএস। আইএস সৃষ্টির আগেই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের গৃহযুদ্ধে উসকানি দিয়েছে ইসরাইল। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার বিদ্রোহীসহ অনেক জঙ্গি নেতার সামরিক সহায়তা ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে ইসরাইল। সিরিয়া সীমান্তবর্তী গোলান মালভূমিতে যুদ্ধবিরতি রেখা অতিক্রম করে অবৈধভাবে সিরীয় জঙ্গিদের দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরাইল। মোসাদের তত্ত্বাবধানে সেখানে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ১৯৬৭ সালে এক যুদ্ধের মাধ্যমে দামেস্কের কাছ থেকে গোলান মালভূমি নিয়ন্ত্রণ নেয় তেলআবিব। ১৯৭৪ সালে এখানে যুদ্ধবিরতির নিয়ন্ত্রণ রেখা টানা হয়। গত ১৩ মার্চ জাতিসংঘের ডিজঅ্যাঙ্গেজমেন্ট অবজারভার ফোর্স (ইউএনডিওএফ) প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়া যুদ্ধ চলাকালে আহত ৮৯ বিদ্রোহী জঙ্গিকে গোলান মালভূমি অতিক্রম করে ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি সামরিক সহায়তাও পেয়েছে তারা। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সিরীয় বিদ্রোহী জঙ্গিদের চিকিৎসা কেন্দ্র সফরে যান। সেখানে আত্মঘাতী স্কোয়াডের একজন জঙ্গি নেতানিয়াহুর সঙ্গে ছবিও তোলে। নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইসরাইলি নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা সিরিয়ার গোলানে আধিপত্য সংহতকরণে বিশৃংখলা জিইয়ে রাখছে। সাইজিং অন দ্য ক্যাওস পরিভাষাটি ইসরাইলের পররাষ্ট্রনীতির মূলকথা। ১৯৯৬ সালে ডেভিড উরমসার এই পরিভাষা ব্যবহার করেন। সম্প্রতি ইসরাইলের সিনিয়র একজন মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, গোলান এলাকায় আগামী পাঁচ বছরে ১০ হাজার নতুন বসতি স্থাপন করা হবে। টাইমস পত্রিকায় ইসরাইলি এমপি মাইকেল ওরেনের বক্তব্য উদ্ধৃতি করে একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত যত ছড়াবে, ইসরাইলের ভূমিও তত সম্প্রসারিত হবে। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ইসরাইল মোসাদের মাধ্যমে আইএস তৈরি করে মুসলমানদের ব্যবহার করেই মধ্যপ্রাচ্যকে স্থায়ী যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে তৈরি করছে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫২:২৫ ২৭৯ বার পঠিত