শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০১৫
‘সংলাপে বসতে যোগ্যতা লাগে’
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ‘সংলাপে বসতে যোগ্যতা লাগে’বঙ্গনিউজ ডটকমঃ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজকের পৃথিবীতে সংলাপে বসতে হলে যোগ্যতা লাগে। যোগ্যতা ছাড়া সংলাপ হয় না। আন্দোলন করার যাদের শক্তি নেই, তারাই এখন ঘন ঘন সংলাপের কথা বলে।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে ডিআরইউয়ের সদস্য লেখকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জাতীয় সংলাপ করার যে আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের তাও নাকচ করে দেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত কথার ঢিল ছুড়ছি। প্রতিনিয়ত শব্দবোমা নিক্ষেপ করছি। এ শব্দবোমা কিন্তু অনেক সময় আত্মঘাতী বোমা। আজকে সবাই ঢিল ছুড়ছেন, কেউ কাছে থেকে, কেউ দূরে থেকে। কেউ আটলান্টিকের কাছ থেকে, কেউ টেমস নদীর পাড় থেকে।’
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরায় বিলম্বকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যাই যাই করে যাওয়া হয় না, আসি আসি করে, আসা হয় না। এখন দেশে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন, কবে আসবেন? কিন্তু ঢিল ছোড়া বন্ধ হয়নি। বিদেশের মাটিতে বসে বিক্ষিপ্ত ঢিল ছুড়ে, দেশে কি সরকার পরিবর্তন সম্ভব?’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘এ দেশটা তো আফগানিস্তান, পাকিস্তান নয়। এটা বীরের দেশ। আমরা রক্ত দিয়ে, বিক্রম দিয়ে, বীরত্ব দিয়ে এ দেশকে অর্জন করেছি। আফগানিস্তানের স্বাধীনতার ইতিহাস বীরত্বপূর্ণ নয়। পাকিস্তানও স্বাধীন হয়নি বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম করে, রক্ত দিয়ে। সুতরাং কেউ যদি মনে করেন, চোরাগোপ্তা হামলা করে এ দেশকে পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো অকার্যকর করবেন, তাহলে তাঁরা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। যাঁরা এমন অপচেষ্টা করবেন, তাঁরা নিজেরাই অকার্যকর হয়ে যাবেন।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে টেমস নদীর পাড় থেকে শব্দবোমা নিক্ষেপ করে সরকার পরিবর্তন হবে না। জাতীয় কোনো ঐক্য হবে না। জাতীয় সংলাপও হবে না। জাতীয় সংলাপ করতে হলে, সংলাপের যেমন পরিবেশ দরকার। সেই পরিবেশ কারা নষ্ট করছে? তারা লেখকদের ওপর হামলা করছে। প্রকাশকদের ওপর হামলা করছে। তারা বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলা করছে। তারা পুলিশের ওপর হামলা করছে। তারা রাজনীতিকদের, লেখকদের টার্গেট করেছে। এই পরিবেশ কি সংলাপের পরিবেশ?’
আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘সংলাপ করতে পরিবেশের যেমন দরকার, যোগ্যতারও দরকার। সংলাপ করারও একটা যোগ্যতা আছে। যে দল আন্দোলনে বিজয়ী হতে পারে না, তারা নির্বাচনেও বিজয়ী হতে পারে না। এটা আমাদের ইতিহাস। কারণ সংলাপে বসার জন্য নিজের যুক্তি, শক্তি, যোগ্যতা ও সাহসেরও প্রমাণ রাখতে হবে। তা না হলে শুধু আমি কার সঙ্গে সংলাপ করব। সে কি সংলাপ করার জন্য এমন কোনো কর্তৃপক্ষ? সে কি এমন কোনো কর্তৃপক্ষ, যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমি বসব। সে যোগ্যতার প্রমাণ তো তারা রাখতে পারেনি। তারা আজকে জাতীয় সংলাপের কথা বলছে। সংলাপ করতেও যোগ্যতা লাগে, সাহস লাগে, সামর্থ্য লাগে। তার প্রমাণও রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে দেখতাম বাংলাদেশে ঊনসত্তরের মতো আন্দোলন, নিদেনপক্ষে নব্বইয়ের মতো আন্দোলন। তখন আমরা বুঝতাম, না এটা সব থেকে বড় ব্যাপার। এখানে একটা শক্তি আছে। আজকের পৃথিবীতে সংলাপে বসতে হলে যোগ্যতা লাগে। যোগ্যতা ছাড়া সংলাপ হয় না। বিদেশে বসে ঢিল মেরে সংলাপ করা যায় না। এই মাটিতেই সে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে হবে। সরকার পরিবর্তন আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হবে। সেই আন্দোলন করার শক্তি যাদের নেই। তারা এখন ঘন ঘন সংলাপের কথা বলে। সরকার পরিবর্তনের কথা বলছে।’
ডিআরইউয়ের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংসদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিআরইউয়ের কল্যাণ সম্পাদক শাহনাজ শারমিন।
এ বছর ডিআরইউয়ের ২২ সদস্য লেখককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার শামসুল আলম বেলাল, ভোরের কাগজের ঝর্ণা মনি ও শামসুজ্জামান শামস, আজকের পত্রিকার এম. উমর ফারুক, ইনকিলাবের মিজান মাহমুদ, আমার দেশের হাসান হাফিজ, অবজারভারের জীবন ইসলাম, মানবজমিনের কাফি কামাল, জনকণ্ঠের কাওসার রহমান, মাই টিভির আমিরুল মোমেনিন মানিক, উত্তরবঙ্গ সংবাদের নির্মল চক্রবর্তী, এবি নিউজের শাহীন চৌধুরী, দি ইকোনমি টুডের শেখ মাহমুদ এ রিয়াত, এটিএন নিউজের ইশরাত জাহান, ইত্তেফাকের পিনাকি দাশগুপ্ত ও দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, সংগ্রামের শাহেদ মতিউর রহমান, আরটিভির আকতার হোসেন, কালের কণ্ঠের ওমর ফারুক, সমকালের আলতাব হোসেন ও ইন্দ্রজিৎ সরকার এবং চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের আমীন আল রশীদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫৪:২৬ ২৭৭ বার পঠিত