শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০১৫

এবার টার্গেট পুলিশ

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » এবার টার্গেট পুলিশ
শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০১৫



11703196_995511830479197_7892160501051229565_nবঙ্গনিউজ ডটকমঃদেশে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটেই চলছে। পরিকল্পিতভাবে খুন করা হচ্ছে লেখক-ব্লগার-প্রকাশকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে। সবশেষ মাত্র তেরো দিনের ব্যবধানে গাবতলী ও আশুলিয়ার দুটি তল্লাশি চৌকিতে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে খুন করা হয় দুই পুলিশ সদস্যকে। অন্য এক ঘটনায় গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলার শিকার হন পুলিশের একাধিক সদস্য।

চেকপোস্টে তল্লাশির সময় হামলা, খুনিদের ব্যবহৃত অস্ত্র, হামলাকারীদের কৌশল এবং ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অপরাধ বিজ্ঞানী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বলছেন, খুনিদের মূল টার্গেট এখন পুলিশ।

এই টার্গেটের কারণ হিসেবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, পুলিশের মনোবল ভাঙার প্রচেষ্টাসহ বেশ কয়েকটি নেপথ্য সম্ভাবনার কথা। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী এবং ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ভোরের পাতাকে বলেন, এভাবে হামলা করে, আঘাত করে কিংবা হত্যা করে পুলিশের মনোবল ভাঙা যাবে না।

সন্ত্রাসীদের সতর্ক করে দিয়ে পুলিশের এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, অতীতের মতো এবারও কঠোর হাতে দুর্বৃত্তদের দমন করা হবে। শীর্ষ কর্মকর্তাদের দাবি, পুলিশ যখন ব্যাপক সক্রিয়তার সঙ্গে অপরাধীদের ধরতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন পুলিশের কাজে বিঘ্ন ঘটাতেই এ ধরনের হামলা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা।

পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতেই বিশেষ কৌশল : নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশীদ ভোরের পাতাকে বলেন, পুলিশকে টার্গেট করে ভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায় একটি মহল। এর সঙ্গে কারা জড়িত জানতে চাইলে তাঁর দাবি, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে চায়, যারা দেশকে অস্থিতিশীল বানাতে চায় এটা তাঁদেরই কাজ। এখানে তৃতীয় কোনো পক্ষ নেই। তবে মনোবল যাতে না ভাঙে সেজন্য পুলিশের মধ্যে ব্যাপক তৎপরতা বাড়ানো এবং তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ জরুরি বলেও মত দেন তিনি।

জেনারেল রশীদ বলেন, এটা মোটেও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমি বারবারই বলছি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে চেষ্টা করেও যাঁরা ব্যর্থ হয়েছে এখন তাঁরা দেশকে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে অস্থিতিশীল প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আর সে কারণেই তাঁরা বিভিন্ন পেশাভিত্তিক কিলিং এর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

কারা পুলিশ হত্যা করছে : গত বছর ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে যে মহলটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছিল, সেই মহলটি আবারও একই কায়দায় ভীতির সঞ্চার করতে চাইছে। বিষয়টি শক্তভাবে মোকাবিলা করার পরামর্শ অপরাধ বিজ্ঞানীদের।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, পুলিশ যেভাবে সতর্ক প্রহরা দেওয়া শুরু করেছে তাতে সন্ত্রাসীদের সমস্যা হচ্ছে বলেই তাঁরা চেয়েছে একটা দুইটা হামলা করে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের ভেতর ভীতি ঢুকিয়ে দিতে। আর সেই সুযোগে, অপেক্ষায় থাকা দুই বড় মানবতাবিরোধী অপরাধীর আপিল রিভিউ শুনানির বিরুদ্ধে তাঁদের পক্ষ থেকে ক্ষমতা প্রদর্শনের শেষ চেষ্টা করছেন তাঁরা।

এ ধরনের হামলার কারণ জানতে চাইলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান খালিদ ভোরের পাতাকে বলেন, দুটি হত্যাকাণ্ড-ই পরিকল্পিত। এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একটির সঙ্গে আরেকটি সম্পর্কিত। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশকে আক্রমণ করার একটিই কারণ থাকতে পারে- আর সেটি হলো জনমনে একধরনের নিরাপত্তাহীনতার বার্তা পৌঁছানো। যদিও এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যাঁরা চেষ্টা করছেন অরাজকতা সৃষ্টির তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৩:২৭   ২৬৭ বার পঠিত