বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০১৫

মার্কেট নির্মাণে জলাশয় ভরাট

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » মার্কেট নির্মাণে জলাশয় ভরাট
বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০১৫



লাকসামে জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। গতকাল ছবিটি তুলেছেন এম সাদেকবঙ্গনিউজ ডটকমঃ কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ রেলস্টেশনের মেইন লাইন ও লুপ লাইনের মাঝখানের জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয় সাংসদের নির্দেশে ওই স্থানে হকার্স মার্কেট নির্মাণ করা হবে। এ জন্যই ভরাটের কাজ চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ) আসনের সাংসদ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটপাতের গরিব মানুষদের পুনর্বাসন করার জন্য রেলওয়ের পরিত্যক্ত জায়গায় অস্থায়ী মার্কেট করা হচ্ছে।’ রেল কর্তৃপক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অনুমোদন নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মৌখিকভাবে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে মাটি ভরাট করছি। এটা আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।’
জানতে চাইলে দৌলতগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার মো. আবদুল মান্নান চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ১০ অক্টোবর দৌলতগঞ্জ রেলস্টেশন ভবনের প্রায় ৩০০ মিটার উত্তর-দক্ষিণের জলাশয় বালু দিয়ে ভরাট শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। পরে ১২ অক্টোবর লাকসাম রেলওয়ে থানার পুলিশ ভরাটের কাজে বাধা দেয়। এরপর ২৭ অক্টোবর আবার রেলস্টেশনের অদূরে ডাকাতিয়া নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ভরাটের কাজ শুরু করা হয়। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই ওই ভরাটকাজ চলছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে জানানো হয়েছে। ওই জায়গায় হকার্স মার্কেট, কাঁচাবাজার ও বাসস্ট্যান্ড স্থাপন করা হবে। অথচ দুটি রেললাইনের মধ্যবর্তী এই জায়গা ভরাট করে কোনো ধরনের স্থাপনা তৈরির সুযোগ নেই। এতে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন হবে। সরকার কোনো অবস্থাতেই এ জায়গা কাউকে ইজারাও দিতে পারে না।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, লাকসাম-নোয়াখালী রেললাইনের লাগোয়া জলাশয়ে পাইপ লাগানো আছে। ওই পাইপ দিয়ে ডাকাতিয়া নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে উত্তোলন করা বালু ফেলা হচ্ছে। কয়েক দিনে রেলওয়ের ৩০০ মিটার জায়গার প্রায় অর্ধেক ভরাট করা হয়েছে। লাকসাম সুপার মার্কেটের বিপরীত পাশে ভরাট করা ওই জায়গায় পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড করা হয়েছে।
জানতে চাইলে লাকসাম পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এ টি এম মহিউদ্দীন খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৌরসভা কোনো ধরনের ভরাটকাজ করছে না। ভরাটের কাজ কারা করছে, তা আমি বলতে পারব না।’
লাকসাম পৌরসভার মেয়র মো. মফিজুর রহমান বলেন, সাংসদ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই জায়গায় হকার্স মার্কেট করবেন। রেলওয়ের জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে, তাই হকারদের পুনর্বাসনের জন্য সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিউল আলম বলেন, ‘এটা খুবই অন্যায় কাজ। আমরা তিনবার ভরাটের কাজ বন্ধ করেছি। পরে আবার শুরু হয়েছে।’

বাংলাদেশ সময়: ১০:২৭:৪৯   ৮৪৫ বার পঠিত