মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০১৫
জেএসসি প্রস্তুতি : চারু ও কারুকলা।
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » জেএসসি প্রস্তুতি : চারু ও কারুকলা।
বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
পাঠ প্রস্তুতি
মো. জাকির হোসেন
সিনিয়র শিক্ষক
বিএএফ শাহীন কলেজ কুর্মিটোলা, ঢাকা
-
১। মাটি খুঁড়ে কোন কোন প্রাচীন জনপদ আবিষ্কৃত হয়েছে? জনপদগুলো ধ্বংস হওয়ার কারণ বর্ণনা করো।
উত্তর : বাংলাদেশে মাটির স্তূপ ও গড় অঞ্চল খনন করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে প্রাচীন বাংলার কিছু জনপদ আবিষ্কৃত হয়। এগুলো হলো- রাজশাহীর পাহাড়পুর, কুমিল্লার ময়নামতি, বগুড়ার মহাস্থানগড়, নরসিংদীর উয়ারি বটেশ্বর এবং মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার নাটেশ্বর সভ্যতা।
প্রাচীন বাংলা অঞ্চল বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজা ও শাসকদের দ্বারা শাসিত হয়েছে। তাঁদের মহলে তখন শিল্পকলার চর্চা ছিল। যুদ্ধে পরাজিত অঞ্চল লুট করা, জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া, ধ্বংস করে দেওয়া- এসব তখন স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। তাই কোনো কোনো অঞ্চল বিরান অর্থাৎ মানবশূন্য হয়ে যেত। দীর্ঘদিন বিরান থেকে একসময় মাটিচাপা পড়ে যেত। যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত ঝড়ঝঞ্ঝা, ভূমিকম্পসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও একসময় সেগুলো মাটির নিচে চাপা পড়ে যেত। এর ফলে প্রাচীন বাংলার অনেক শিল্পকর্মই প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।
২। ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত উল্লেখযোগ্য কালো পাথরের ভাস্কর্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর : বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে বেশ কিছু প্রাচীন জনপদ আবিষ্কৃত হয়। সেসব জনপদ থেকেই প্রাচীন বাংলার কিছু কিছু শিল্পকলার নিদর্শন উদ্ধার করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আবিষ্কৃত সেসব শিল্পকর্ম ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এর মধ্যে শিল্পনৈপুণ্য ও কারুকার্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো কষ্টিপাথর বা কালো পাথরের তৈরি মূর্তি।
কালো পাথরের মূর্তিগুলোর মধ্যে অশোক, অজন্তা, দশভুজা, দশরথের মূর্তিই প্রধান। অজন্তা একটি নারী মূর্তি। এটি সৌন্দর্যের দেবী হিসেবেও পরিচিত। কালো পাথর কেটে, খোদাই করে মূর্তিটির গায়ে পোশাক-পরিচ্ছদ ও বিভিন্ন অলংকারের আকৃতি রয়েছে। পাল রাজা প্রথম মহীপালের আমলে নির্মিত একটি অনিন্দ্যসুন্দর শিল্পমণ্ডিত কালো পাথরে মূর্তি গণেশ। এ ছাড়া এমন আরো কিছু কষ্টিপাথরের তৈরি মূর্তি বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। বর্তমানে এগুলো প্রাচীন বাংলার শিল্পকলার এক অনবদ্য নিদর্শন এবং মহামূল্যবান সম্পদ।
৩। বাংলাদেশের যেকোনো ১০টি প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের নাম লেখো।
উত্তর : বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকলার মধ্যে টিকে থাকা উল্লেখযোগ্য হলো স্থাপত্যশিল্প। এসব স্থাপত্যশিল্পের দেয়ালে পোড়ামাটির ফলকচিত্র, পাথরে খোদাই করা ফলক ও শিলালিপি এখনো প্রায় অক্ষত রয়েছে। এমন উল্লেখযোগ্য কিছু স্থাপত্যশিল্প হলো- রাজশাহীর বাঘা মসজিদ, কুসুম্বা মসজিদ, পুঠিয়ার রাজবাড়ী মন্দির, খুলনার ষাটগম্বুজ মসজিদ, লাগবাগের দুর্গ, আহসান মঞ্জিল, ঢাকেশ্বরী মন্দির, দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির, মুন্সীগঞ্জের ইন্দ্রাকপুর দুর্গ, কুমিল্লার সতেরো রত্ন মন্দির ইত্যাদি।
৪। ময়নামতি পরিদর্শন করে থাকলে এ জায়গা সম্পর্কে তোমার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো।
উত্তর :
ময়নামতি, বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। ময়নামতি কুমিল্লা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত একটি বিচ্ছিন্ন অনুচ্চ পার্বত্য এলাকা। চন্দ্র বংশের সর্বশেষ রাজা গোবিন্দচন্দ্রের মা রানি ময়নামতির নামানুসারে এ অঞ্চলের নামকরণ করা হয় ময়নামতি। এটি ছিল প্রাচীন বঙ্গ সমতটের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্র। এটি একটি প্রাচীন নগরী এবং বৌদ্ধ বিহারের অবশিষ্টাংশ। ময়নামতি এলাকায় যেসব নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- শালবন বিহার, কুটিলামুড়া, কৌটবাড়ি মুড়া, আনন্দ মুড়া, রূপবান মুড়া, হাতিগড়া মুড়া, চণ্ডিমুড়া, বালাগাজী মুড়া, ময়নামতি মুড়া ইত্যাদি। তা ছাড়া ময়নামতিতে আরো রয়েছে ওয়ার সেমেট্রি, ময়নামতি জাদুঘর। এর মধ্যে শালবন বিহার অন্যতম। এটি ছিল একটি বৌদ্ধ মঠ।
প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজের ফলে বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্মের অনেক নিদর্শন এখান থেকে উদ্ধার করা হয়। যেমন- স্বর্ণ ও রুপার মুদ্রা, অলংকার, ব্রোঞ্জ ও তামার তৈরি ব্যবহার্য সামগ্রী, পোড়ামাটির ফলক, পোড়ামাটির সিল ও সিলিং, পোড়ামাটির ভাস্কর্য, ব্রোঞ্জ মূর্তি, শিবলিঙ্গ, বিভিন্ন ধরনের হাঁড়ি-পাতিল, হস্তলিপির পাণ্ডুলিপি ইত্যাদি। ময়নামতিতে অসংখ্য ঢিবি, স্মৃতিস্তম্ভ, খননকৃত ধ্বংসাবশেষ ঘটনাবহুল অতীত ও গৌরবের সাক্ষী হয়ে এখনো টিকে আছে।
বহু নির্বাচনী প্রশ্ন
১। ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশের বেশির ভাগ অঞ্চল-
ক. বেলে মাটির অঞ্চল
খ. পলি মাটির অঞ্চল
গ. দো-আঁশ মাটির অঞ্চল
ঘ. এঁটেল মাটির অঞ্চল
২। প্রাচীন বাংলা ভূমি অঞ্চল কয় ভাগে বিভক্ত ছিল?
ক. দুই ভাগে খ. তিন ভাগে
গ. চার ভাগে ঘ. ছয় ভাগে
৩। বখতিয়ার খিলজি কত খ্রিস্টাব্দে রাজা লক্ষ্মণ সেনকে পরাজিত করে বাংলায় রাজত্ব কায়েম করেন?
ক. ১২০২ খ্রিস্টাব্দে
খ. ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে
গ. ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে
ঘ. ১২০৭ খ্রিস্টাব্দে
৪। বাংলাদেশে মাটির স্তূপ ও গড় অঞ্চল খনন করে কয়টি জনপদ আবিষ্কৃত হয়েছে?
ক. দুটি খ. তিনটি
গ. চারটি ঘ. পাঁচটি
৫। সতেরো রত্ন মন্দির কোথায়?
ক. নারায়ণগঞ্জে
খ. মুন্সীগঞ্জে
গ. কুমিল্লায়
ঘ. ফরিদপুরে
৬। ময়নামতি কোন জেলায়?
ক. নারায়ণগঞ্জে
খ. কুমিল্লায়
গ. বগুড়ায়
ঘ. রাজশাহীতে
৭। মহাস্থানগড় কোন জেলায়?
ক. রাজশাহীতে
খ. দিনাজপুরে
গ. বগুড়ায়
ঘ. রংপুরে
৮। বাংলাদেশের প্রাচীন শিল্পকর্মের মধ্যে নৈপুণ্য ও কারুকাজে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো-
ক. পোড়ামাটির ফলকচিত্র
খ. মুদ্রা ও অলংকার
গ. কষ্টিপাথরের মূর্তি
ঘ. বাড়িঘরের খিলান ও স্তম্ভ
৯। ছোট সোনামসজিদ কোথায়?
ক. বগুড়ায়
খ. রাজশাহীতে
গ. নারায়ণগঞ্জে
ঘ. ঢাকায়
১০। হাজীগঞ্জ দুর্গ কোথায়?
ক. নারায়ণগঞ্জে
খ. মুন্সীগঞ্জে
গ. পাবনায়
ঘ. ময়মনসিংহে
১১। ইদ্রাকপুর দুর্গ কোথায়?
ক. চট্টগ্রামে
খ. মুন্সীগঞ্জে
গ. সিলেটে
ঘ. ময়মনসিংহে
১২। মথুরাপুর দেউল কোথায়?
ক. ফরিদপুরে
খ. মুন্সীগঞ্জে
গ. রাজশাহীতে
ঘ. ময়মনসিংহে
১৩। বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার লোগো, প্রচারের পোস্টার, মঞ্চসজ্জা করেছিলেন কোন শিল্পী
ক. কাইয়ুম চৌধুরী
খ. হাশেম খান
গ. রফিকুন নবী
ঘ. শিশির ভট্টাচার্য
১৪। প্রতিবছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কতজন চিত্রশিল্পী উত্তীর্ণ হন?
ক. প্রায় দুই শ
খ. প্রায় তিন শ
গ. প্রায় চার শ
ঘ. প্রায় পাঁচ শ
১৫। কোন কোন ক্ষেত্রে চিত্রশিল্পীরা কাজ করছেন?
ক. বিজ্ঞাপনী সংস্থায়
খ. খবরের কাগজে
গ. ওষুধশিল্প
ঘ. সব ক্ষেত্রেই
১৬। চিত্রশিল্পীরা শিল্পকর্ম করেন-
ক. নিজের আনন্দের জন্য
খ. জীবিকার জন্য
গ. সংস্কৃতিসমৃদ্ধ সমাজ গঠনের জন্য
ঘ. ক, খ ও গ
১৭। কাঠ দিয়ে শিল্পকর্ম তৈরির জন্য উপযোগী হলো-
ক. শাল কাঠ খ. মেহগনি কাঠ
গ. কড়ইকাঠ ঘ. শিমুল কাঠ
১৮। প্লাইউড হলো-
ক. নরম কাঠ খ. শক্ত কাঠ
গ. কয়েক পরত পাতলা কাঠের তৈরি তক্তা
ঘ. প্লাস্টিক জাতীয় এক ধরনের তক্তা
১৯। কাঠের শিল্পকর্মের জন্য উপযোগী রং হলো-
ক. তেল রং
খ. প্লাস্টিক রং
গ. অক্সাইড রং
ঘ. চায়নিজ লেকার বা এনামেল রং
২০। ফ্রেট-সো কী?
ক. এক ধরনের বাটালি
খ. এক ধরনের হাতুড়ি
গ. এক ধরনের করাত
ঘ. এক ধরনের স্কেল
২১। হ্যাকসো দিয়ে কী কাজ করা হয়?
ক. কাঠ কাটা হয়
খ. কাঠ ছিদ্র করা হয়
গ. লোহা কাটা হয়
ঘ. কাঠে তারকাঁটা মারা হয়
২২। তুরপুন দিয়ে কী কাজ করা হয়
ক. কাঠ কাটা হয়
খ. কাঠ ছিদ্র করা হয়
গ. লোহা কাটা হয়
ঘ. কাঠে তারকাঁটা মারা হয়
২৩। কাঠের পৃষ্ঠকে মসৃণ করার জন্য কী ব্যবহার করা হয়?
ক. করাত
খ. বাটালি
গ. শিরিষ কাগজ ঘ. ফ্রেট-সো
২৪। কুদনযন্ত্রের সুবিধা কী?
ক. বড় বড় গাছ কাটা যায়
খ. খুব দ্রুত কাঠ ছিদ্র করা যায়
গ. খুব সহজে লোহা কাটা যায়
ঘ. খুব দ্রুত কাঠে খাঁজ কেটে নকশা করা যায়
২৫। কাঠ কেটে নকশা তৈরির আগে কোথায় নকশা আঁকতে হবে?
ক. কাঠে খ. কাপড়ে
গ. টিনে ঘ. কাগজে
২৬। কাঠের ওপর কাগজে আঁকা নকশার ছাপ কিভাবে করতে হয়?
ক. পোস্টার কাগজের মাধ্যমে
খ. বোর্ড কাগজের মাধ্যমে
গ. ট্রেসিং কাগজের মাধ্যমে
ঘ. কার্বন কাগজের মাধ্যমে
২৭। কোন প্রলেপে কাঠের রং ঠিক থাকে?
ক. এনামেল রং খ. প্লাস্টিক রং
গ. বার্নিশ ঘ. তেল রং
২৮। নিচের কোনটি মাটি দিয়ে তৈরি করা যায়?
ক. সানকি খ. সোরাই
গ. মটকি ঘ. সবগুলো
২৯। মাটির পাত্র তৈরি করার পুরনো পদ্ধতি কয়টি?
ক. ১টি খ. ২টি
গ. ৪টি ঘ. ৪টি
৩০। কয়েল পদ্ধতিতে মাটির পাত্র তৈরি করার অসুবিধা কী?
ক. তৈরি জিনিস খুব সহজে ভেঙে যায়
খ. ইচ্ছামতো পাত্রের গড়ন তৈরি করা যায় না
গ. জিনিস তৈরিতে বেশি সময় লাগে
ঘ. তৈরি করা জিনিস শুকানোর পর বেঁকে যায়
উত্তরগুলো মিলিয়ে নাও
১. খ ২. ক ৩. গ ৪. খ ৫. গ ৬. খ ৭. গ ৮. গ ৯. খ ১০. ক ১১. খ ১২. ক ১৩. খ ১৪. গ ১৫. ঘ ১৬. ঘ ১৭. ঘ ১৮. গ ১৯. ঘ ২০. গ ২১. গ ২২. খ ২৩. গ ২৪. ঘ ২৫. ঘ ২৬. ঘ ২৭. গ ২৮. ঘ ২৯. খ ৩০. গ
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩০:০৮ ৭৩০ বার পঠিত