বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৫
হাফিজুর রহমানের কবিতা
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » হাফিজুর রহমানের কবিতাবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
ইচ্ছেঘুড়ি
ইচ্ছেঘুড়ির লাটাই হাতে জীবন জুড়ে
ভাসিয়ে তরী যখন আমি বইঠা হাতে
দেহতরীর টালমাটাল উৎকন্ঠাতে
ঘাট আঘাটা চষে বেড়াই বাঁধন ছিড়ে;
তখন দেখি অন্য মানুষ নদীর মতো
স্রোতের টানে কচুরিপানা, নষ্টঅনেক
দুর্গতি খুব বয়ে বেড়ায়, ভাসানটেক?
ভাসায় যেন কালের খেয়া, মনবসন্ত!
একলা আমি কীইবা করি কাকেই বলি
সবাই বুঝি সহজপথে পৌঁছাবে হায়!
মোক্ষ ধামের ভিতরটাতে কী কায়দায়,
বুঝেই গেছে পাওয়াটাই সত্যের কলি!
সত্য যেতাই বলেদো হাই বাপরে বাপ
কঠিন পথে কেউ ভাসাবে জীবন তরী?
কেউ চায়কি সত্যিই পেতে ধন্বন্তরী?
এমন কালে জীবন ধর্ম কী অভিশাপ!
গোলাপবালা
ভালবাসার গোলাপহাতে
দাঁড়িয়েছিলাম পথের ধারে
ভেবেছিলাম এই পথেই তো যাবে !
একটু খানি কথার মালা গেঁথে,
বলবো তাকে সেই কথাটা আজই
যা কোনোদিন হয়নি আজো বলা !
কতোদিন যে মনে মনে গাঁথি মালা !
ভাবি বসে বলতে হবে সাহস করে, উর্মিমালা !
তোমার জন্য না পারি যে এমন কিছু
পৃথিবীতে নেই তা জানো ? ভাবি কেবল !
এ ভাবেইতো বুকের মধ্যে ব্যথার মতো
না বলার সেই কষ্টটাও বাড়তে বাড়তে ঝড় !
রবীন্দ্রনাথ কমলা নামের মেয়েটিকে
পাওয়ার জন্য কী করেছেন, পড়েছিতো !
এই এখানে বাস নেই তো, পথের মোড়েই
দেখা হলেই চমকে যাবে গোলাপ দেখে !
তাইতো এলাম সেই দুপুরে, আর কতোক্ষণ ?
বসেই আছি, বসেই আছি, আর কিছুক্ষণ
হাঁটা হাঁটি, আসে নাতো উর্মিমালা !
এইইযযাহ্ ! হোঁচট খেয়ে ছিঁড়লোতো হায়
চটির ফিতে !হায় ওদিকে আসছে তোসে !
উর্মিমালা !হ্যাঁ, ঠিকতো উর্মিমালাই !
কিন্তু একী একা তো নয়, সাথে কে ওই…?
উর্মিমালার আঙুল গুলো তার আঙুলে
ঢুকে আছে জড়াজড়ি !হাসতে হাসতে
পেরিয়ে গেলো !আমি তখন চটির ফিতে
বাঁধছি কেবল বাঁধছি কষে অন্যমনে !
হাতের মধ্যে পিষ্ট তখন সাধের গোলাপ !
ছুঁড়ে দিলাম পথের পাশে নর্দমাতে ! হায়
বুকের মধ্যে পাথর যেন পাথর ঝরে যায় !
দুঃসময়
রাতের গভীরে যদি তারা খসে পড়ে
চাঁদের শরীরে নাচে পাহাড়ি আন্ধার
বৃক্ষ মায়া দুলে দুলে করে হাহাকার
আকাশ পৃথিবী কাঁপে শব্দহীন ঝড়ে !
বুঝবো মাটির বুকে মানুষের প্রেম
ক্ষয়প্রাপ্ত হতে হতে তলানিতে প্রায়,
সূর্যের বিম্বিত আলো নিশ্বেষিত হায়
গহীন কবর হবে কালজয়ী হেম !
সেবড় দুঃস্বপ্ন যেন বধির আকাল
মানুষ হারাবে আলো পৃথিবীর ক্ষমা,
অন্ধকারে খুঁজে খুঁজে মানব মহিমা
কজন কবিই শুধু হবেনা জেহাল !
এ সময় সুসময় নয়, বলে ইতিহাস
কেবল অনিত্য ঠাঁই কাল দূর্বা ঘাস !
রাইপদাবলী
রাই রয়েছে বৃন্দাবনে, কৃষ্ণ মথুরায়
দৃষ্টি সদা উচাটনে হারাই বুঝি নিধি,
গ্রীবা চুঁইয়ে গড়ায় ঘৃত, মিঠাই মন্ডা দধি
গৃহেফিরে পড়ল এবার জলের যন্ত্রণায়!
রাঁধতে বসে জ্বালায় আগুন যেন জ্বলবেনা
চোখের জলে আগুন নেভেকে শুনেছে কবে?
বুকের আগুন জ্বলল শেষে চালের কলরবে,
রান্না হল, প্রাণ পতিধন খেলেন অন্যমনা!
তবু রাধার ভয় সারেনা, মথুরাতেকী!
কংসরাজা বেজায় বাজে মনুষ্যত্ত্বহীন!
তাকে এবার করবে কাবু কৃষ্ণ সঙ্গীহীন?
এটাই যদি ভবিতব্য রাধার উচিত কী?
বিশ্ব যেন মথুরা আজ মনুষ্যত্বের গারদ
এসো না ভাই সুবল সখা বাড়াই সুঠাম হাত,
বৃন্দাবনে কাজ কী আর রাধার অনুপাত
বীর প্রজন্ম ঘুচাও এবার বিশ্ব-আর্তনাদ!
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫০:৪৪ ৪৮১ বার পঠিত