বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৫

জঙ্গি ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ করল মা

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » জঙ্গি ছেলেকে পুলিশে সোপর্দ করল মা
বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৫



7910a1d35512ef5ea8ccbc41b4c8ed5a-33.jpgবঙ্গনিউজ ডটকমঃ পাবনার ঈশ্বরদীতে গির্জার যাজক লুক সরকার হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় রাকিবুল ইসলাম (২২) নামে এক তরুণকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে তাঁর পরিবার। ছেলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠায় বিস্মিত-ব্যথিত মা আজমিরা খাতুন এই উদ্যোগ নিয়েছেন।রাকিব নিষিদ্ধঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) পাবনা জেলা কমান্ডার বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তিনি পাবনা সদর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। বাবা, চাচা ও স্থানীয় কয়েকজনের উপস্থিতিতে গতকাল বুধবার তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
৫ অক্টোবর সকালে ঈশ্বরদীর গোকুলনগর ‘ফেইথ বাইবেল চার্চ’-এর যাজক লুক সরকারকে নিজ বাড়িতে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই মামলায় পুলিশ ১২ অক্টোবর পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও ঢাকা থেকে সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাবনায় জেএমবির কমান্ডার হিসেবে রাকিবুলের নাম উঠে আসে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাজক হত্যাচেষ্টার পর থেকে পলাতক ছিলেন রাকিব। সম্প্রতি পুলিশ তাঁর জেএমবি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এরপর কৌশলে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন রাকিবকে গ্রামের পাশের টেবুনিয়া বাজারে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহম্মেদ শরীফের ব্যবসায়িক কার্যালয়ে নিয়ে যান এবং পুলিশে খবর দেন। পাবনা সদর থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দুটি দল সেখানে গেলে রাকিবের বাবা আবদুল মালেক, চাচা নায়েব আলীসহ অন্যরা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
রাকিবের চাচা নায়েব আলী বলেন, এমন কর্মকাণ্ডে যে রাকিব জড়িত, তা তাঁরা জানতেন না। পুলিশই তাঁদের বিষয়টি জানায়। পরে রাকিবের মায়ের উদ্যোগে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
রাকিবের মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কখনোই বুঝবের পারি নাই যে আমার বেটা এই রহম বেপথে চলে গেছে। কুনুদিন সে গিরামের কারও সঙ্গে খারাপ আচরণও করে নাই। যহন জানবের পারলেম, তহন আমি তাক খুঁজে বার করে পুলিশের হাতে তুলে দিছি। এহন কষ্ট পাতেছি। তয় বেটা ভালো পথে ফিরে আসুক, এই জন্নিই ধরায়ে দিছি।’
রাকিবকে পুলিশে সোপর্দ করার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টার্স ফাউন্ডেশন পাবনা জেলা শাখার
সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশে দেওয়ার আগে রাকিব তাঁদের সামনে যাজক হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার
করেছেন। ‘যাজক ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায়’ সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। তবে
ঊর্ধ্বতন নেতাদের তিনি কখনো দেখেননি। মুঠোফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন নির্দেশনা আসত। যাজক হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সাতজন জড়িত ছিল বলে জানান রাকিব।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর আমরা তাঁকে নিয়ে অন্যদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। অভিযান শেষ হলে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।’

বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৪:৪৩   ৪১৩ বার পঠিত