বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর ২০১৫
মরদেহ ফেরত না দিলে ‘হিংস্র প্রতিক্রিয়া।
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » মরদেহ ফেরত না দিলে ‘হিংস্র প্রতিক্রিয়া।বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
মিনায় পদদলিত হয়ে নিহত ইরানি হাজিদের মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠাতে সৌদি আরবের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। অন্যথায় দেশটিকে কড়া ও হিংস্র প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি মুসলিম দেশগুলোর প্রতি মিনা দুর্ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ইরানের নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে আয়াতুল্লাহ খামেনি অভিযোগ করেন, ‘সৌদি কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন।’ মিনায় পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ২৩৯ জন ইরানি হাজি নিহত হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাদের মরদেহ দেশে ফেরত পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় এ অভিযোগ করে তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের কেউ কেউ ‘রাখঢাকের’ আশ্রয় নিচ্ছেন। ‘তাদের জেনে রাখা উচিত, মক্কা ও মদিনায় হাজার হাজার ইরানি হাজির প্রতি সামান্যতম অসম্মান করা হলে এবং নিহত হাজিদের মরদেহ ফেরত পাঠানোর বাধ্যবাধকতা পূরণ না করলে ইরান কঠোর ও হিংস্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে,’ বলেন খামেনি। খামেনির এ ভাষণের আগে সৌদি আরবে একটি কার্গো বিমান পাঠিয়ে নিজেদের হাজিদের মরদেহ তেহরানে ফিরিয়ে আনার অনুমতি চেয়েছিল ইরান। তবে সৌদি আরব তা প্রত্যাখ্যান করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সৌদির প্রতি ইরানের ক্রমবর্ধমান হতাশার চিত্রই খামেনির হুমকিতে ফুটে উঠেছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আরো বলেন, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান এখনো পর্যন্ত আত্মসংযম দেখিয়ে যাচ্ছে এবং ইসলামি মূল্যবোধ অনুযায়ী শিষ্টতা ও ভ্রাতৃত্ব মেনে চলছে।’ পদপিষ্ট হয়ে হাজিদের হতাহতের ঘটনার কারণ তদন্তে মুসলিম দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠনেরও আহ্বান জানান তিনি। খামেনির ভাষণের কয়েক ঘণ্টা আগে ইরান সে দেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। এ নিয়ে মিনা দুর্ঘটনার পর চতুর্থবারের মতো তলব করা হলো তাকে। হতাহত ও নিখোঁজ হাজিদের দ্রুত চিহ্নিত করা এবং হাজিদের মরদেহ ফেরত পাঠানোর দাবি জানানো হয় তাকে। ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনাকে বলেন, স্বজনদের মরদেহ দেশের বাইরে দাফন করা হোক, নিহত ইরানি হাজিদের পরিবার তা চায় না। ইতিমধ্যে মিনা দুর্ঘটনায় আনুষ্ঠানিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান। তদন্ত কমিটিতে থাকছেন কেবল সৌদি কর্মকর্তারা। সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, মিনায় লাখ লাখ হাজির চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মানতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দুর্ঘটনার আগে সড়ক আটকে মিনায় মোটরগাড়ির বহর গেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে নানামুখী প্রচার-প্রচারণা, অভিযোগের মধ্যে কিছু প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, ওই দিন পুলিশ কিছু সড়ক বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু কেন এটা করা হয়েছিল, পুলিশ সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারেনি। তা ছাড়া, ঘটনাস্থলে হাজিদের ভিড়ের ওপর নজরদারিতে ব্যবহৃত ক্যামেরাগুলোও বন্ধ ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৯:৩৭ ৩৪২ বার পঠিত