শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বাংলাদেশি প্রকল্প বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছে
Home Page » এক্সক্লুসিভ » বাংলাদেশি প্রকল্প বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছেবঙ্গনিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশে নবজাতক ও শিশুর পুষ্টি নিয়ে পরিচালিত একটি প্রকল্প চমকপ্রদ সাফল্য আনায় এর থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।ফাউন্ডেশনের বিশ্ব উন্নয়ন কর্মসূচির পুষ্টি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা এলেন পিওজ বলেন, নবজাতক ও শিশুর খাদ্যাভ্যাস নিয়ে যে তিন দেশে প্রকল্পে তারা অর্থায়ন করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশে ‘সবচেয়ে সফল’ হয়েছে।
“ভারত এর থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। এই অভিজ্ঞতা আমরাও একটি নতুন দেশ নাইজেরিয়ায় প্রয়োগের কথা ভাবছি।”
অপুষ্টিতে ভোগা তিন দেশ- বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ও ভিয়েতনামে ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছয় বছর এই প্রকল্প চালায় গেটস ফাউন্ডেশন।
নবজাতক ও শিশুদের পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়নে মাতৃদুগ্ধ পানের হার বৃদ্ধি এবং শিশুদের সম্পূরক খাবার খাওয়ানোর চর্চা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয় এই প্রকল্পে।
পিওজ বলেন, এই প্রকল্প চলা সব দেশের পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’। তবে ‘টার্গেট’ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ‘সবচেয়ে সফল’ হয়েছে।
বাংলাদেশ গেটস ফাউন্ডেশনের ‘মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে’ আছে বলে জানান তিনি।
বুধবার ঢাকায় প্রকাশ হতে যাওয়া প্রকল্প মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই প্রকল্প শিশুর মাতৃদুগ্ধ পানের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি শিশুকে সম্পূরক খাবার দেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে।
নবজাতককে দ্রুত মাতৃদুগ্ধ দেওয়ার হারও ‘উল্লেখযোগ্য’ হারে বেড়েছে।
“এটা অনেক ভালো করেছে। যাদের কাছে যাওয়া সবচেয়ে জরুরি ছিল তাদের কাছে পৌঁছানো গেছে। বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশের গর্ব করা উচিত। বাংলাদেশের এই কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী দেখতে চাই আমরা,” বলেন তিনি।
কাঙ্ক্ষিত জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে বাংলাদেশে প্রকল্পের যে মডেল নেওয়া হয় তা ছিল অনন্য; প্রশিক্ষিত মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে সরাসরি পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়।
দীর্ঘ ১৫ বছর মাতৃদুগ্ধ পানের (এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং) হার যেখানে ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি ছিল সেখানে ২০১১ সালে তা বেড়ে ৬৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যার জন্য ‘অ্যালাইভ অ্যান্ড থ্রাইভ’ প্রকল্পের গণমাধ্যমে প্রচারণাকে ব্যাপকভাবে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে।
গেটস ফাউন্ডেশনের মতে, অপুষ্টির প্রভাব সব সময় দৃশ্যমাণ না হওয়ায় দীর্ঘকাল একটি বড় অংশে স্বাস্থ্য ও উন্নয়নে পুষ্টির বিষয়টি অবহেলিত ছিল।
এই প্রবণতা পাল্টাতে আগামী ছয় বছরের জন্য এ খাতে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করে ৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে নিচ্ছে ফাউন্ডেশন।
২০১৫ সাল পরবর্তী নতুন উন্নয়ন সূচিতেও পুষ্টির উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে; একটি পৃথক লক্ষ্য (২) থাকছে এটা নিয়ে।
পিওজ বলেন, আগামী ছয় বছরের এই ধাপে নির্দিষ্ট কোনো দেশের উপর বরাদ্দ রাখছেন না তারা। তবে নতুন কর্মকাণ্ড যোগ করে আগের উদ্যোগগুলো আরও বিস্তৃত করা হবে।
“নতুন ধাপে বাংলাদেশে মায়ের পুষ্টির উপর অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।”
“আমাদের নতুন স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ভবিষ্যতে আমরা বাংলাদেশে সরকার, ব্র্যাক ও অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে কাজ করতে চাই।”
বাংলাদেশে মাতৃদুগ্ধের বিকল্প খাবারের বিপণন নিয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে বাংলাদেশের সতর্ক হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“যখন অর্থনীতি বাড়ে তখন পরিস্থিতির উন্নয়ন হয় এবং পরিবারগুলোর হাতে বাড়তি অর্থ আসে। শিশুকে মায়ের দুধ দেওয়ার প্রবণতা (বিশ্বব্যাপী) কমে আসছে, কারণ মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশু খাদ্যসহ অন্যান্য জিনিসের মার্কেটিং বাড়ছে।”
মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশু খাদ্য বাজারজাতের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান মেনে চলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৭:০০ ৩৪৩ বার পঠিত