বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
শেষ ৬০ মিনিটে ১ গোলই খাওয়াই সফলতা
Home Page » খেলা » শেষ ৬০ মিনিটে ১ গোলই খাওয়াই সফলতাবঙ্গনিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ার দূরত্ব যতটা, ফুটবলীয় শক্তির বিচারে দুই দেশের দূরত্ব তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি। এই প্রথম এত বড় ফুটবল শক্তির মুখোমুখি হয়ে বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের অবস্থানটা বাংলাদেশ যেন ভালো মতো বুঝতে পারল। ম্যাচের ২৯ মিনিটেই চার গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। অবশ্য পঞ্চম গোলটি এসেছে ৬১ মিনিটে।
ম্যাচের শেষ ৬০ মিনিটে ওই একটাই গোল। এই ম্যাচে বাংলাদেশের এটাই সবচেয়ে বড় সফলতা। আরেকটি ‘সফলতা’ আছে। ফ্রি কিক থেকে অস্ট্রেলিয়ার গোলমুখে একটি শট নিতে পারা। পুরো ম্যাচে এটাই অস্ট্রেলিয়ার গোলে বাংলাদেশের একমাত্র শট। একটিও কর্নার পায়নি বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণে আক্রমণ তৈরি করলে না কর্নার মিলবে! ৫-০ গোলের পরাজয় দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় ম্যাচ।
পার্থে প্রথম থেকেই রক্ষণাত্মক মনোভাব নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। তা যে নামবে, সেটা জানা কথাই। তবে অতিরক্ষণাত্মক খেলার একটা কুফলও আছে। প্রতিপক্ষ পেয়ে যায় বাড়তি আক্রমণের সুযোগ। আর তাই প্রথম থেকেই আক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশের রক্ষণে। ম্যাচের শুরুতে গোল বন্যারও ইঙ্গিত দেয় সকারুরা।
৫ মিনিটেই গোলমুখ খুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। লেকির গোলে প্রথম পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ৮ ও ২০ মিনিটে জোড়া গোল রজিচের। ২৯ মিনিটের মাথায় বার্নস করে ফেলেন ৪-০। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ১৫ মিনিটও জালে বল ঢুকতে দেয়নি বাংলাদেশ। অবশেষে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ৫-০ করেন মুই। জ্যাকসন আরভিনের হেড বাঁ পোস্টে লেগে ফিরে না এলে আধ-ডজন গোল অবশ্য হয়ে যেত।
অস্ট্রেলিয়া ভালো খেলছে সন্দেহ নেই। তবে প্রথম থেকেই বাংলাদেশকে যেন আতঙ্কে পেয়ে বসেছে। ম্যাচের আগে লড়াইয়ের যে প্রত্যয় দেখা গিয়েছিল, তার ছিটেফোঁটাও নেই। স্নায়ুর চাপে ভুগেছে রক্ষণ। প্রতিটি গোলেই ছিল সেই চাপ সহ্য করতে না-পারার ছাপ। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলে নজর কাড়া গোলরক্ষক সোহেল অন্তত দুটো গোল বাঁচাতে পারতেন অনায়াসে। অবশ্য সোহেল দুটো সেভও করেছেন বেশ ভালো।
মাঝমাঠে বলের দখল রাখতে পারলে রক্ষণের ওপর চাপটা কমত। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের পায়ে বলই রাখতে দেয়নি। ৬৯ মিনিটে টানা ১১টি পাস খেলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। ওটাই ছিল টানা সবচেয়ে বেশি সময় বলের পজেশন ধরে রাখা।
অস্ট্রেলিয়ার এই একাদশে তাঁদের প্রথম পছন্দের অনেকেই ছিল না। যাঁকে নিয়ে সবচেয়ে আতঙ্ক ছিল, সেই টিম কাহিলই নেমেছেন ৬১ মিনিটে। তবুও র্যাঙ্কিংয়ের ৬১ ও ১৭০ নম্বরের ব্যবধানটা আসলে কী, সেটাই যেন বোঝাল অস্ট্রেলিয়া। স্কিল, স্ট্যামিনা, ফিটনেস কি গতি—সব জায়গায় পিছিয়ে বাংলাদেশ। এমন নয় অস্ট্রেলিয়া ফুটবল বিশ্বের পরাশক্তি। সামগ্রিক ফুটবল বিবেচনা করলে অস্ট্রেলিয়া সেরা পঞ্চাশেরও দল নয়। এখান থেকেও অনুমান করে নেওয়া যায়, বিশ্ব ফুটবল কোথায় পৌঁছেছে, আর কোন তিমিরে পড়ে আছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৮:২১ ২৯৩ বার পঠিত