বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট ২০১৫
মাসুদার রহমানের চারটি কবিতা
Home Page » সারাদেশ » মাসুদার রহমানের চারটি কবিতা
বঙ্গনিউজ ডটকমঃ বৃষ্টির রাতে
ঝড় ও বৃষ্টির রাতে জানালা খুলে তাকানো; ব্যাপারটি অন্যরকম
কেবল বৃষ্টি ও অন্ধকার
হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ চমক টর্চ জ্বালিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে
দেখ, ওই দিকে চাঁপাগাছটি ভিজে যাচ্ছে
ওই যে ওখানে জারুল ভিজে শীতে কাঁপছে তিরতির
ওই রেইট্রিতলায় যে পাগলটি সারারাত প্রলাপ করতো
সে ওখানে নেই
সে কী তবে উঠে গেছে ছাতিমতলায় বড় সাধুর ডেরায় ?
বিদ্যুৎ ফ্ল্যাশে এখান থেকে ধানসমুদ্রের মাঠটিরও কিছু অংশ দেখা যায়
ওর একালাগাছটি ঠিক নজরে আসে না
এই ঝড় ও বৃষ্টির রাতে ধানসমুদ্রের একাকীগাছটি
সে ও তবে উঠে গেছে নিঃসঙ্গ কবির ডেরায় !
মাছ
নভেম্বরের বিকেলে রান্না হতে আসা মাছদের
চোখের দিকে তাকিয়ে শিউরে ওঠো নি ?
দেখো, ওই মাছদের চোখগুলো কবির চোখের মতো কি না !
বাঁশের ঝুড়ি বা কাঠের কফিনে
স্তুপ স্তুপ বরফ বিছিয়ে
আরৎ থেকে মাছগুলো পাঠানো হয়েছিল তোমাদের কাছের বাজারে
কবিকে জেনেছে লোকে- সামর্থহীন
আরও যা জেনেছে- ওই মাছদের শেষকৃত্য হয় কেবল সামর্থবানদের গৃহিনীর
গ্যাসস্টোভ লাকড়ির চুলা বা ইলেকট্রিক ওভেনে
তোমাকে বলছি; তুমি লক্ষ্য করো রান্না হতে আসা তোমার পছন্দের মাছগুলো
শীতকালীন সবজির বাজারে নতুন শালগম গাজর টমেটো মটরগুটি
ফুলকপি বিবিধ রঙের পাশে
তোমাকে তার নতুন কবিতা শোনাতে চাইছে কি না !
হাঁস
অনেক বৃষ্টির পর উঠোনের হাঁসেরা; তারা কোথায় যে ভেসে গেল !
শ্রাবণ পুকুরমাঠ থৈ থৈ; ভরা সন্ধ্যের মুখে জল আর কাদা
মাথার উপরে ধরে বউয়ের এগিয়ে দেয়া
ছাতা ও হেরিকেন হাতে খুঁজতে চলেছি !
হাঁসের পিছনে হেঁটে কখনও কেটেছে কোন কবির জীবন ?
ভয়ে আছি ! কিভাবে লুকাবো যদি হারানো হাঁসেরা; ফের
ডেকে ওঠে বাঙলা কবিতায়
প্রাতর্ভ্রমণের কবিতা
গাছের মাথায় রোদ বসে। গাছের নিচে
আমি পায়চারি করা লোক
খুঁটিবাঁধা মিনতি মাসির গরু এরপর সাঁওতালপাড়া
ফেলে দূরে যাবো…
দূর বলছি যাকে
সেও খুব দূর নয়
যে কারণে চার্চের পাদ্রি সাহেব পুঁথিপুস্তক সহ
বাইকের স্টার্ট নিয়ে চলে গেল
পাকা ও মাটির সরু রাস্তাগুলো
এঞ্জিন চালিত ভ্যানে হৈ চৈ
ভাবছি আমিও কি বাহুর নিচে
দু’খানা এঞ্জিন বসাবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫১:৫৪ ৬৭১ বার পঠিত