মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট ২০১৫
মৃগীরোগের চিকিৎসায় সংগীত
Home Page » বিশ্ব » মৃগীরোগের চিকিৎসায় সংগীতবঙ্গনিউজ ডটকমঃ মৃগীরোগের চিকিৎসায় সংগীতের উপযোগিতা খুঁজে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখা গেছে, মস্তিষ্কে সংগীতের প্রতিক্রিয়া সুস্থ মানুষের চেয়ে এ রোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে হয় ভিন্ন রকমের। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় ব্যবহার হতে পারে সুরেলা থেরাপি। খবর সায়েন্স ডেইলি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ওয়েক্সনার মেডিকেল সেন্টারের বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিন ক্যারিটোন জানান, সংগীত হতে পারে মৃগীরোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার অত্যন্ত সম্ভাবনাময় পদ্ধতি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মৃগীরোগের ঘটনায় প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগের উৎপত্তিস্থল মস্তিষ্কের টেম্পোরাল লোব (মস্তিষ্কের চারটি প্রধান অংশের অন্যতম, যা শ্রবণ ও দৃষ্টির মাধ্যমে শব্দ ও দৃশ্য চেনায়। মস্তিষ্কের এ অংশ স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি ও আবেগের সঙ্গে জড়িত)।
টেম্পোরাল লোবের যে অংশে মৃগীরোগের উৎপত্তি, সে অংশস্থিত অডিটরি কর্টেক্সের মাধ্যমে সংগীত শনাক্ত ও তার প্রতিক্রিয়া তৈরি করে মস্তিষ্ক। এ কারণেই এ রোগে আক্রান্তদের ওপর সংগীতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন ক্যারিটোন।
ক্যারিটোন ও তার সহকর্মীরা মৃগীরোগে আক্রান্ত ও সুস্থ ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের সংগীত প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাকে বিশ্লেষণ করেন ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাম পদ্ধতির মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে খুলির সঙ্গে ইলেকট্রোডের সংযোগে রেকর্ড করা হয় মস্তিষ্কের তরঙ্গ ও তার গতিপ্রকৃতি।
এ গবেষণার জন্য ২০১২-এর সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪-এর মে পর্যন্ত ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ওয়েক্সনার মেডিকেল সেন্টারের ২১ জন মৃগীরোগে আক্রান্তের মস্তিষ্কের তথ্য সংগ্রহ করেন ক্যারিটোন ও তার সহকর্মীরা।
মস্তিষ্কের তথ্য সংগ্রহ ও রেকর্ডের সময় প্রথমে তাদের ১০ মিনিট নীরবতার মধ্যে রাখা হয়। এর পরের ১০ মিনিট তাদের ডি মেজর স্কেলে মোজার্টের সোনাটাবাদন, আঁদাত মুভমেন্ট টু অথবা জন কলট্রেনের রেন্ডিশন অব মাই ফেভারিট থিংস শোনানো হয়। এর পর আবার ১০ মিনিট তাদের রাখা হয় নিশ্ছিদ্র নীরবতায়। পরবর্তীতে আরো ১০ মিনিট নতুন দুটো সংগীত শুনিয়ে শেষবারের নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে মস্তিষ্কের তথ্য সংগ্রহ ও রেকর্ডের কাজ শেষ করা হয়। এ পুরোটা সময় ধরে তাদের রাখা হয় ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রামের আওতায়।
গান শোনার সময় বেড়ে যায় তাদের মস্তিষ্কের তরঙ্গপ্রবাহের গতি। ক্যারিটোনের মতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সংগীতের সঙ্গে সুস্থদের তুলনায় মৃগীরোগে আক্রান্তদের মস্তিষ্ক তরঙ্গের সমন্বয় ঘটে আরো ভালোভাবে।
ক্যারিটোন জানান, গবেষণার ফলাফল বলে, রোগীদের মস্তিষ্কে এর আক্রমণ থামাতে মৃগীরোগের স্বাভাবিক চিকিৎসা পদ্ধতির সঙ্গে ব্যবহার হতে পারে সংগীত।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১২:১৫ ৩২৬ বার পঠিত