বুধবার, ৫ আগস্ট ২০১৫
পরিচ্ছন্ন সিটি গড়তে বিশেষ উদ্যোগ
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » পরিচ্ছন্ন সিটি গড়তে বিশেষ উদ্যোগবঙ্গনিউজ ডটকমঃঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোর বর্জ্য অপসারণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এজন্য বেলারুশ থেকে কেনা হচ্ছে যন্ত্রপাতি। এলক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার জন্য বেলারুশ হতে মেশিনারিজ সংগ্রহ শীর্ষক একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এটিসহ মোট ৩ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকার ৯টি প্রকল্পের অনমোদন দেয়া হয়। একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রকল্পের বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি জানান, ৯টি প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৬৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের রয়েছে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিলের ৩২ কোটি ১৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তার ৯৫৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা।পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভা এলাকার বর্জ্য অপসারণ করে এসব এলাকাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে অনুমোদিত প্রকল্পটি ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ২৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে বেলারুশ সরকার দিচ্ছে ৩৩১ কোটি ৪৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা এবং বাকি ৮৮ কোটি ৮০ লাখ ৭ হাজার টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানে অধিকাংশ জনগণ পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনে বসবাস করছে। ফলে শহরাঞ্চল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষ বর্তমানে শহরে বসবাস করছে। এ শহরায়নের ফলে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাসমূহে রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাতের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। সেইসঙ্গে নগরের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ জন্য পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু পৌরসভাগুলোর আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তাই উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় করা তাদের পক্ষে সম্ভবপর হচ্ছে না। সেজন্য সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাসমূহকে বিভিন্ন যানবাহন ও যন্ত্রপাতি দিয়ে সহায়তা প্রদানের জন্য প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্পের আওতায় বেলারুশ থেকে যানবাহন ও যন্ত্রপাতি বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর দুই বছরের ওয়ারেন্টি দেয়া হবে। এছাড়া ১১ বছর পর্যন্ত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পরিমিত মূল্যে উক্ত যানবাহন ও যন্ত্রপাতির যন্ত্রাংশ প্রদান করবে। এসব যন্ত্রপাতি পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন ও পরিষ্কার, ড্রেন নির্মাণ, মেরামত ও পরিষ্কার, রাস্তা নির্মাণ ও মেরামত ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতার জন্য এসব কাজে প্রতিবছর পৌরসভাগুলোকে প্রচুর পরিমাণে ভাড়া পরিশোধ করতে হয়।তিনি এসব যন্ত্রপাতি আমদানি ও ব্যবহার করা হলে যে ভাড়া সাশ্রয় হবে এবং অবসর সময়ে ভাড়া প্রদান করে যে আয় হবে তা থেকেই ঋণের বাৎসরিক কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হবে।আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, বেলারুশ থেকে ৩৩০টি ড্রিল, ৩৩০টি স্কেড সিটার লোডার, ১১টি বুলডোজার ব্লেড, ৩৩০টি এস্কেভেটর, ৩২৯টি টু-ইন ড্রাম ভাইব্রেটরি রোলার, লং গ্রাপেল, হুইল লোডার, হাইড্রোলিক হ্যামার এবং ১১টি ব্যাক হোল লোডারসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হবে।এদিকে, পূর্বাচলে স্থায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ শীর্ষক ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা। এটি বাস্তবায়ন করবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।এছাড়া একনেকের সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ১ হাজার ৩০১ কোটি টাকা ব্যয়ে অগমেন্টেশন অব গ্যাস প্রোডাকশন আন্ডার ফাস্ট ট্র্যাক প্রোগ্রাম, পীরগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প, জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন প্রকল্প, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প, ভূগর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণের মাধ্যমে সেচ দক্ষতা বৃদ্ধি প্রকল্প, কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলাধীন ফিলিপনগর, আবেদর ঘাট ও ইসলামপুর এলাকায় পদ্মানদীর ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং ২১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলায় মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব সফিকুল আজম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান, আইএমইডি সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, পরিংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কানিজ ফাতেমা প্রমুখ
বাংলাদেশ সময়: ২:৫৪:৫৯ ৩৪৯ বার পঠিত