শনিবার, ১ আগস্ট ২০১৫

‘বর্ষাকালে সিরিজ আয়োজনে লাভ কী?’

Home Page » খেলা » ‘বর্ষাকালে সিরিজ আয়োজনে লাভ কী?’
শনিবার, ১ আগস্ট ২০১৫



বঙ্গনিউজ ডটকমঃতিন বছর আগে আইসিসির প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেন ডেভ রিচার্ডসন। ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাবেক এই দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটারের সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটের বৈশ্বিক প্রসার, ১০ দলের বিশ্বকাপ, দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ভবিষ্যতের মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে

*সম্প্রতি বাংলাদেশের ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিয়ে নতুন একটা বিতর্ক উঠেছে। যদিও তারা পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলকে দাপটের সঙ্গে হারিয়েছে। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর দুই বছর আগেই কেন যোগ্যতামান অর্জনের সময়সীমা শেষ হয়ে যাচ্ছে?
ডেভ রিচার্ডসন: র্যাঙ্কিংকে যদি আমরা যোগ্যতার একটা মানদণ্ড হিসেবে দেখি, তাহলে সেই টুর্নামেন্ট শুরুর যত কাছাকাছি চূড়ান্ত সময়টা রাখা যায় ততই সেটি যৌক্তিক হয়। কিন্তু টুর্নামেন্টের আগে অনেক ধরনের কাজ থাকে—ভেন্যু ঠিক করা, টিকিট বিক্রি। এসবের জন্য টুর্নামেন্টের আগে সবকিছু ঠিকঠাক করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দরকার। সামনে অবশ্য আমরা এই সময়টা আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করব।
*এমসিসি সম্প্রতি ১২ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের সুপারিশ করেছে। কিন্তু আইসিসি এই ব্যাপারে ঠিক উৎসাহী নয় কেন?
রিচার্ডসন: ১০ দলের বিশ্বকাপের বড় একটা কারণ, এটা টুর্নামেন্টে সেরা দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতাই নিশ্চিত করে। অনেকটা ১৯৯২ বিশ্বকাপের মতো, অনেকের মতে যেটি এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা সংস্করণ। সব দেশগুলোর নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা পাওয়ার বিষয়টিও এতে নিশ্চিত হয়। আর একটা ব্যাপার ভুলে গেলে চলবে না, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পর আইসিসি একটা ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগও চালু করেছে। ছয়টি বিভাগে এই লিগের পর আইসিসির সহযোগী ও অনুমোদিত সদস্যদেশগুলোর বিশ্বকাপে খেলার পথ খোলা থাকবে।
*এই পদক্ষেপ কি ক্রিকেট বিস্তারের উল্টো দিকে যাচ্ছে না?
রিচার্ডসন: না। বিশ্বকাপের সংস্করণ এ রকম কেন করা হয়েছে সেটা তো বলেছি। একই সঙ্গে সিদ্ধান্তটা কিন্তু খেলাটার প্রসারের জন্যও নেওয়া। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সদস্যদেশের সংখ্যা ১২ থেকে ১৬ করা হয়েছে। আয়ারল্যান্ড-আফগানিস্তানকে ওয়ানডে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপ্রক্রিয়ার পুরোটাই মেধার ভিত্তিতে করা হয়েছে। সে জন্য আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানও আইসিসি র্যা ঙ্কিং বাড়াতে পারলে ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলতে পারবে। সহযোগী দেশগুলো যাতে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারে সেই পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
২০০০ সালে যেমন আইসিসির সদস্য ছিল ৫২, এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ১০৫। ২০০০ সালে পূর্ণ সদস্যদের বাদ দিলে অন্য দেশগুলোতে ১ লাখ ৫৫ হাজার ক্রিকেটার ছিল। এখন সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখে। খেলার পরিধি পূর্ণ ও সহযোগী, সব দেশের মধ্যেই বাড়ছে। পরের চার বছরে আইসিসির লক্ষ্য শুধু সদস্যসংখ্যা নয়, তিন সংস্করণে দলগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানও বাড়ানো।
*আইসিসির বার্ষিক অধিবেশনের পর বলেছিলেন, অক্টোবরের বোর্ড সভায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গগুলোর একটি হবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। এটা নিয়ে কী ভাবছেন?
রিচার্ডসন: ২০০২ সালে আইসিসিতে আমি যোগ দেওয়ার পর থেকেই এটা নিয়ে আইসিসি অনেক কিছু ভাবছে। সব দেশেরই সূচির ব্যাপারে কিছু শর্ত থাকে। সেগুলো সমন্বয় করা কঠিন। এটাও মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চিত্রটা গত কয়েক বছরে অনেক বদলে গেছে। আইপিএল, বিগ ব্যাশ বা সিপিএলের মতো ঘরোয়া প্রতিযোগিতাগুলো অনেক বেশি দর্শক টানছে। সেই সঙ্গে পৃষ্ঠপোষক বা সম্প্রচার সংস্থাগুলোও আগ্রহ দেখাচ্ছে। একই সঙ্গে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো আসরগুলোর ব্যাপ্তিও বেড়েছে।
অন্যদিকে অ্যাশেজের মতো ঐতিহ্যবাহী আর ভারতসহ কয়েকটি শীর্ষ দেশের ছাড়া বাকিদের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ সেই অর্থে আগ্রহ জাগাতে পারছে না। অনেক সিরিজের, বিশেষ করে টেস্টের দর্শকও কমছে। আয়ের হিসাবে এই সিরিজগুলো তাই লোভনীয় নয়।
এসব ব্যাপার কীভাবে নিষ্পত্তি করা যায় সেসব নিয়ে আলোচনা চলছে—দ্বিপাক্ষিক সিরিজকে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করা যায়, কীভাবে আরও মানুষ মাঠে এসে এটা দেখবে, মানুষজন কম্পিউটার-ট্যাবে এসব নিয়ে আরও কথা বলবে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের বিপণন তাই আরও ভালো হতে হবে, সূচিটা আরও পরিকল্পিত হতে হবে। বর্ষাকালে সিরিজ আয়োজনে লাভ কী? বা শেষ মুহূর্তে সূচি বদলে কীভাবে দর্শক আশা করবেন? অস্ট্রেলিয়ার যেমন বক্সিং ডে টেস্ট, কেপটাউনের নিউইয়ার্স টেস্ট আছে। সবাই জানে কখন লর্ডস টেস্ট হয়। কিন্তু আর কই? ভারতের একটা দিওয়ালি টেস্ট থাকা উচিত, বারবাডোজের হয়তো ইস্টার টেস্ট বা এ রকম কিছু।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৫:০৭   ৩৩২ বার পঠিত