শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০১৫
কানাইঘাটে তরুণীকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ
Home Page » জাতীয় » কানাইঘাটে তরুণীকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগবঙ্গনিউজ ডটকমঃসিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নারাইনপুর গ্রামে এক তরুণীকে অপহরণের পর গণধর্ষণ এবং পরে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্তরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে।
কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ জুলাই শুক্রবার গভীর রাতে নারাইনপুর গ্রামের মৎস্যজীবী মোঃ রিয়াজ আলীর মেয়ে ফরিদা বেগমকে (১৭) দুর্বৃত্তরা বসত ঘর থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার দিন রাতে মেয়েটির পিতা ও মা রেনু বেগম বাড়িতে ছিলেন না। নিখোঁজের পর তার আত্মীয় স্বজন ও এলাকার লোকজন সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পাননি। নিখোঁজের দুই দিন পর গত রোববার ফরিদা বেগমের রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত লাশ অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী বাড়ীর আনিছুল হক চৌধুরীর পরিত্যক্ত একটি টয়লেটে পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডাঃ ফয়াজ আহমদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য মস্তাক আহমদসহ এলাকার বিপুল সংখ্যক লোক । খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন এবং লাশ ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় নিহতের লাশ জানাজা শেষে গ্রামের গোরস্থানে দাফন করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংবাদিকরা নিহত ফরিদা বেগমের বাড়িতে গেলে স্থানীয় লোকজন ঘটনা সম্পর্কে তাদেরকে অবহিত করেন। তারা জানান, মেয়েটিকে নির্মমভাবে হত্যার পর তার লাশ টয়লেটে ঝুলিয়ে রাখে অপরাধী চক্র। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে ফরিদা বেগমের সন্দেভাজন খুনী কথিত প্রেমিক স্থানীয় পানিছড়া বড়খেওড় গ্রামের আজির উদ্দিন, তার পিতা মন্তাজ আলী মন্তাই ও দুলাভাই শরিফ উদ্দিনসহ পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
চেয়ারম্যান ফয়াজ আহমদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, যেভাবে দরিদ্র ঘরের মেয়ে কিশোরী ফরিদা বেগমকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। এ ধরণের বর্বরোচিত ঘটনার সাথে জড়িত খুনীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি গত বুধবার উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আহ্বান জানান।
এদিকে, ফরিদা বেগমকে হারিয়ে মা রেনু বেগম, পিতা রিয়াজ আলী ও ছোট ছোট ভাইবোনেরা বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছেন। তারা হন্ডাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
ফরিদার মৃতদেহের গোসল সম্পন্নকারী মহিলা আমিনা বেগম, হাজিরা বেগম, আলছু বেগম জানান, তারা মেয়েটির গোপনাঙ্গসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন। তারা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
যোগাযোগ করা হলে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল চৌধুরী জানান, গত রোববার তারা নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিন্তু, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবার পর এ ব্যাপারে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জানান ওসি
বাংলাদেশ সময়: ২০:৫১:৩৬ ৩৩৬ বার পঠিত