শুক্রবার, ৩১ জুলাই ২০১৫
সমাধিস্থলে আবদুল কালামের মরদেহ
Home Page » বিশ্ব » সমাধিস্থলে আবদুল কালামের মরদেহবঙ্গ নিউজ ডটকমঃসমাধিস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিখ্যাত বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালামের মরদেহ। তাকে শেষ বিদায় জানাতে তার জন্মস্থান তামিলনাড়ুর রামেশ্বরামে নেমেছে জনতার ঢল।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) স্থানীয় সময় সকালে এপিজে আবদুল কালামের মরদেহ শহরের মসজিদ রোডে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নেওয়া হয় পেইকারুম্বু’র পাবলিক গ্রাউন্ডে। এখানেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হবে।
ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’খ্যাত প্রয়াত এই রাষ্ট্রপতির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পাড়িকর, সংসদ বিষয়কমন্ত্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু, কংগ্রেস ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও রামেশ্বরামে উপস্থিত হয়েছেন। তবে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা অসুস্থতার কারণে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিত হতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই রাষ্ট্রপতির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ রামেশ্বরামে জমায়েত হয়েছেন। বাস, ট্রেন ও নৌকায় করে বুধবার (২৯ জুলাই) থেকেই তারা সেখানে উপস্থিত হতে শুরু করেন। এদের অনেকেই রাস্তায় ঘুমিয়ে রাত কাটিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে নিজ বাড়ি থেকে তিন বাহিনীর সদস্যরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ড. কালামের মরদেহ ঐতিহ্যগত সবুজ শালে ঢেকে সমাধিস্থলের উদ্দেশে রওনা হন। এসময় তার বড়ভাই মোহাম্মদ মুঠু মীরা লেব্বাই মারাইকারসহ (৯৯) পরিবারের সদস্যরা সঙ্গে ছিলেন। সমাধিস্থলে নেওয়ার পর এই প্রথিতযশা বিজ্ঞানীর দেহ ফুলে ফুলে ঢেকে যায়। এসময় চারপাশ ‘ভারত মাতা কি জয়’ শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।
সোমবার (২৭ জুলাই) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় শিলংয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এপিজে আবদুল কালাম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর রামেশ্বরামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন তিনি। তার পিতার নাম জয়নুল আবেদিন ও মাতার নাম আসিআম্মা।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) স্থানীয় সময় দুপুরে আবদুল কালামকে বহনকারী ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিশেষ এয়ারক্রাফট সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এসময় এই বিজ্ঞানীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পাড়িকর।
তিন শীর্ষ ব্যক্তির শ্রদ্ধা নিবেদন ও তিন বাহিনীর প্রধানের ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার পর আবদুল কালামকে একটি সশস্ত্র গাড়িবহরে করে নিয়ে যাওয়া হয় তার বাসভবন ১০, রাজাজি মার্গে।
সেখানে প্রয়াত এই রাষ্ট্রপতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে সর্বসাধারাণের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয় স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায়। এর আগে জানানো হয়েছিল, বিকাল ৩টায় সর্বসাধারণ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
এপিজে আবদুল কালাম ইউনিভার্সিটি অব মাদ্রাজ থেকে ১৯৫৪ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ও ১৯৬০ সালে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) থেকে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (ডিআরডিও) বিজ্ঞানী ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (আইএসআরও) বৈজ্ঞানিক প্রশাসক পদে দীর্ঘদিন কাজ করেন।
১৯৯৮ সালে ভারতের প্রথম সফল পারমাণবিক পরীক্ষা পোখরান-২ এ তিনি ছিলেন মুখ্য অবদানকারী।
কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ভারত সরকার এপিজে আবদুল কালামকে ১৯৮১ সালে পদ্ম ভূষণ, ১৯৯০ সালে পদ্ম বিভূষণ ও ১৯৯৭ সালে ভারত রত্ন উপাধি দেয়। এই তিন জাতীয় উপাধি ছাড়াও জাতীয় স্বার্থে ও মানব কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি আরও অনেক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পদক-সম্মানে ভূষিত হন।
বাংলাদেশ সময়: ০:৪৫:৪৯ ৩০৭ বার পঠিত