বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই ২০১৫

৭২টি শিল্পকারখানার কোনো ইটিপি নেই

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » ৭২টি শিল্পকারখানার কোনো ইটিপি নেই
বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই ২০১৫



images1.jpeg  বঙ্গনিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরগুলোতে গড়ে তোলা ৭২টি শিল্পকারখানার কোনো বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) নেই। এসব শিল্পকারখানা দেশের বিভিন্ন স্থানের পরিবেশ দূষণ করছে। 
এই ৭২টি শিল্পকারখানার ৬০টিতেই ইটিপি নেই। ১০টি কারখানায় ইটিপির নির্মাণকাজ চলছে। অন্যদিকে চালু করার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দুটি ইটিপি। শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিসিক বলছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সংস্থাটি নিয়মিত সারা দেশের শিল্পনগরগুলোর মধ্যে পরিবেশ দূষণ করছে—এমন শিল্পকারখানা খুঁজে বের করছে। গত বছর পরিবেশ দূষণকারী ১৫৮টি শিল্পকারখানা খুঁজে পান বিসিকের কর্মকর্তারা। এরপর থেকেই সেসব শিল্পকারখানার উদ্যোক্তাদের চিঠি দিয়ে ইটিপি নির্মাণ করতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত ৮৮টি শিল্পকারখানায় ইটিপি নির্মাণ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে বিসিকের চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন খান ও পরিচালক (উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) নুরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে বিসিকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভিন্ন শিল্পনগরে বড় বড় উদ্যোক্তারা নিজেদের উদ্যোগেই ইটিপি নির্মাণ করেছেন। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ইটিপি করতে পারেন না। সে জন্য আমরা তাঁদের পরামর্শ দিই যৌথভাবে সিইটিপি নির্মাণ করতে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সমস্যা হলো সিইটিপি করার মতো জায়গা সব শিল্পনগরে নেই।’
দেশে বিসিকের আওতাধীন ৭৪টি শিল্পনগরে এখন ৪ হাজার ২০৭টি শিল্পকারখানা আছে।
দূষণকারী শিল্পকারখানা: বিসিকের তথ্য বলছে, ঢাকা বিভাগে সংস্থাটির আওতাধীন শিল্পনগরগুলোর ৩০টি শিল্পকারখানা পরিবেশ দূষণ করছে। এগুলোতে ইটিপি নেই। এর মধ্যে ২৪টি কারখানায় এখনো ইটিপি স্থাপন করা হয়নি। ছয়টি কারখানার ইটিপির নির্মাণকাজ চলছে।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে বেশি দূষণ করছে টঙ্গী শিল্পনগরের শিল্পকারখানাগুলো। এখানকার ১৪টি কারখানাতেই ইটিপি নেই। গাজীপুরের জয়দেবপুরের ছয়টি শিল্পকারখানায় ইটিপি প্রয়োজন হলেও সেখানে তা স্থাপন করা হয়নি।
বিসিক সূত্রে জানা গেছে, জয়দেবপুর বিসিকের শিল্পনগর কর্মকর্তা সম্প্রতি বিসিককে জানিয়েছেন, দুটি শিল্পের ইটিপি করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই। আর চারটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো তরল বর্জ্য নেই। নিজস্ব আঙিনাতেই বর্জ্য ফেলা (ডাম্পিং) হয়।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বিসিকের আওতাধীন শিল্পনগরীগুলোর ২৯টি শিল্পকারখানায় ইটিপি না থাকায় পরিবেশ দূষণ করছে। এর মধ্যে ২৫টি কারখানায় এখনো ইটিপি স্থাপন করা হয়নি। চারটি কারখানার ইটিপির নির্মাণকাজ চলছে। আর চালু হওয়ার পর বন্ধ হয়ে গেছে দুটি কারখানার ইটিপি।
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সাতটি শিল্পকারখানায় ইটিপি প্রয়োজন বলে শনাক্ত করে বিসিক। এর মধ্যে পাঁচটিতে এখনো ইটিপি নির্মাণ করেননি উদ্যোক্তারা। তাঁরা এখনো নির্মাণকাজও শুরু করেননি।
বিসিক সূত্র জানায়, নীলফামারীর সৈয়দপুর বিসিকের চারটি হালকা প্রকৌশল শিল্পের অ্যাসিড মিশ্রিত কিছু তরল বর্জ্য শিল্পনগরের ড্রেনের মাধ্যমে স্থানীয় খালে গিয়ে পড়ে। ওই সব উদ্যোক্তাদের দ্রুত ইটিপি নির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খুলনা ও বরিশাল বিভাগে বিসিকের আওতাধীন ছয়টি শিল্পকারখানা পরিবেশ দূষণ করছে। এগুলোতে ইটিপি নেই। কোনো শিল্প উদ্যোক্তা ইটিপি নির্মাণের কাজে হাতও দেননি।
খুলনা ও সাতক্ষীরা শিল্পনগরীর ১৫টি শিল্পকারখানায় এখনো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বর্জ্য পরিশোধিত হয়। যশোর শিল্পনগরীর আট কারখানায় চিমনির মাধ্যমে ধোঁয়া অপসারণ করা হয়।
বিসিক সূত্র বলছে, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বর্জ্য পরিশোধনকারী শিল্প উদ্যোক্তাদের স্বয়ংক্রিয় ইটিপি স্থাপনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ নির্দেশনা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে, তা-ও তদারক করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:০০:৫৫   ৯৩০ বার পঠিত