মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই ২০১৫
নিয়োগ ও টিউশন ফি নিয়ে নৈরাজ্যের অভিযোগ
Home Page » প্রথমপাতা » নিয়োগ ও টিউশন ফি নিয়ে নৈরাজ্যের অভিযোগবঙ্গনিউজ ডটকমঃবেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি নিয়ে নৈরাজ্য চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা প্রশাসকরা। একইসাথে তারা জানান, পাবলিক পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর বলে দেন শিক্ষকরা। এতে পরীক্ষা পদ্ধতি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব করেন প্রশাসকরা। মঙ্গলবার সচিবালয়ে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিনে শিক্ষা মন্ত্রনালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত আলোচনায় প্রশাসকরা এসব অভিযোগ করেন।
জেলা প্রশাসকদের বক্তব্যে মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষকদের ব্যাপারে আরো কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করার দাবী জানান। সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার দুজনেই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রশাসকদের ভূমিকা রাখতে নির্দেশ দেন।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, যেসব শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়েন কিংবা কোনো অনৈতিক সুবিধা লোভে এসব করছেন, তারা শিক্ষক নামে কলঙ্ক। এ বিষয়ে তাঁরা অবগত আছেন। তিনি বলেন, তারা এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এ জন্য পরীক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা হবে। প্রত্যেক জেলায় এডিসি (শিক্ষা) যিনি আছেন, তাকে শিক্ষার পুরো বিষয়ে আরো সম্পৃক্ত ও মনিটরিং করতে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) আদলে আলাদা প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। তার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসকরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নিয়েও বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, অনেক জায়গায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের পর্যাপ্ত উপকরণ নেই। দীর্ঘসময় শ্রেণীকক্ষ বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়া হয়। এজন্য আলাদা পরীক্ষা হল নির্মাণের কথা বলেন। কয়েকজন শিক্ষক সংকটের কথাও বলেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন দুই মন্ত্রী।
সভায় মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বলেন, সদ্য জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের শিক্ষকদের গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না হওয়ায় বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এ জন্য দ্রুত গেজেট প্রকাশের পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব করেন। বর্তমান পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশাসকরা বলেন, শ্রেণীকক্ষ বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এতে লেখাপড়া বাধগ্রস্থ হয়। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলেন, এমপিওভূক্ত বেসরকারি একেক প্রতিষ্ঠানে একেক রকম বেতন-ফি নেয়া হচ্ছে। এ অবস্থা দূর করার জন্য সব প্রতিষ্ঠানে এক রকমের বেতন নেয়ার প্রস্তাব রাখেন তিনি। টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বলেন, টঙ্গাইল একটি নদী ভাঙ্গন প্রবণ এলাকা। প্রতিবছরই নদীগর্ভে শিক্ষ প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রক্ষার্থে আগাম বরাদ্দ দিতে হবে। বগুড়ার জেলা প্রশাসক তার জলোয় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। বরিশাল জেলা প্রশাসক বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক হাওরাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রীষ্মকালীন ছুটি এপ্রিল মাসে নিয়ে আসার দাবি জানান। আর মাগুরার জেলা প্রশাসক প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষক সংকটের কথা উল্লেখ করে নতুন শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান।
জেলা প্রশাসকদের জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’র কপি এবং গত ৬ বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা অর্জন সম্বলিত একটি পুস্তিকাসহ কিছু স্মারক উপহার দেয়া হয়েছে। -
বাংলাদেশ সময়: ২১:৫৯:৩৪ ২১৬ বার পঠিত