শনিবার, ৪ জুলাই ২০১৫

বিএসএফ সদস্য খালাস রায় প্রত্যাখ্যান বাবার

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » বিএসএফ সদস্য খালাস রায় প্রত্যাখ্যান বাবার
শনিবার, ৪ জুলাই ২০১৫



http://www.karatoa.com.bd/admin-kt/news_images/2019/image_2019_255446.jpgবঙ্গনিউজ ডটকমঃ আমার মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার তারা দিল না। এখন মনে হচ্ছে আত্মস্বীকৃত খুনি অমিয় ঘোষকে বাঁচাতে তারা এ প্রহসনের বিচার বসিয়েছে। এ জন্যই তারা বার বার বিচার কার্যক্রম শুরু করে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কয়েকদিন পরই তা স্থগিত করেছে। এবারও তারা তাদের আদালতে অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দিল। কিন্তু আল্লাহর দরবারে একদিন এর বিচার হবেই। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন মিডিয়ায় ফেলানী হত্যা মামলার আসামি আত্মস্বীকৃত খুনি চৌধুরীহাট বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্য অমিয় ঘোষের বেকসুর খালাসের খবর শুনে ক্ষোভ ও হতাশায় নিজ বাড়িতে এ কথাই বলেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম। কান্না জড়িত কন্ঠে মা জাহানারা বেগম বলেন, মানুষের আদালতে দেয়া ফেলানী হত্যা মামলার বিচারের এ রায় আমারা মানি না। আবুল হোসেন, জাবেদ আলী, মালেক হোসেনসহ প্রতিবেশীরা বলেন, খুনি তার দোষ স্বীকার করার পরও খুনিকে যদি খালাসই দেয়া হয় তাহলে এ বিচার কি তবে লোক দেখানো? ফেলানীর বাবা মার সাথে আমরাও এ বিচার মেনে নিতে পারিনি। পর পর তিনবার স্থগিতের পর গত ৩০ জুন মঙ্গলবার চতুর্থবারের মত ভারতের কোচবিহার জেলার বিএসএফ’র ১৮১ সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে এ মামলার পুনঃবিচার কার্যক্রম শুরু হয়। আসাম ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (কমিউনিকেশনস) সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারক বেঞ্চ শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রাতে অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে বেকসুর খালাসের রায় দেন। এর আগে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এই আদালত একই রায় দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর অনন্তপুর সীমান্তে ৯৪৭নং আন্তর্জাতিক পিলার ৩নং সাব পিলারের পাশ দিয়ে মই বেয়ে কাঁটাতার ডিঙ্গিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় টহলরত চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। বাংলাদেশ সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ওই কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। সাক্ষী দিতে এদেশ থেকে ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম, মামা আ. হানিফ ১৮ আগস্ট লালমনিহাটের বুড়িমারী সীমান্ত দিয়ে ভারতের কুচবিহারে যান। ১৯ আগস্ট তারা ওই কোর্টে সাক্ষী দেন। আসাম ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (কমিউনিকেশনস) সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারক বেঞ্চ কঠোর গোপনীয়তায় এ বিচার পরিচালনা শেষে ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। রায় প্রত্যাখ্যান করে ১১ সেপ্টেম্বর ফেলানীর বাবা ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সে দেশের সরকারকে ন্যায় বিচারের আশায় পত্র দেন। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার কার্যক্রম শুরু হলেও ২৬ সেপ্টেম্বর আকস্মিকভাবে আদালত মুলতবি করা হয়। আবারো ১৭ নভেম্বর পুনঃবিচারের কার্যক্রম শুরু হলে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ২২ নভেম্বর তা স্থগিত করা হয়। এ বছরের ২৫ মার্চ পুনঃবিচার কার্যক্রম শুরুর কথা থাকলেও বিএসএফ এর সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অসুস্থ থাকায় তা হয়নি। অবশেষে ওই আদালতে তা শুরু হয় গত ৩০ জুন মঙ্গলবার। ফেলানী হত্যা মামলার বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য মানবাধিকার কর্মী, কুড়িগ্রাম জেলা জর্জ কোর্ট পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, এটা খুনের বৈধতা দেয়া হল। এতে সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা আরও উৎসাহিত হলো নতুন নতুন খুনে।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৬:৩৫   ৩৫৭ বার পঠিত