সোমবার, ২৯ জুন ২০১৫
চট্টগ্রাম প্রতিদিন
Home Page » জাতীয় » চট্টগ্রাম প্রতিদিনবঙ্গনিউজ ডটকম: নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থী সংগঠন হিযবুত তাহরিরের তিন সংগঠককে সোমবার (২৯ জুন) দুপুরে র্যাব কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ের জন্য নির্ধারিত কক্ষে নেয়ার সময় তিন সংগঠক ছিলেন হাস্যোজ্জ্বল। একে অপরের দিকে তাকিয়ে তারা বলেন, সেলিব্রেটি সেলিব্রেটি লাগছে।গ্রেপ্তার হওয়া তিন হিযবুত সংগঠক হল, চট্টগ্রাম আদালতের শিক্ষানবীশ আইনজীবী অ্যাডভোকেট নূর মোহাম্মদ (২৯), নগরীর অক্সিজেন এলাকার অ্যাকুয়াম ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক মুনতাসীর আলম (২৮) এবং সরকারি সিটি কলেজ থেকে পাশ করা বিবিএ’র শিক্ষার্থী মো.সালাহউদ্দিন (২৮)।
সোমবার দুপুর দেড়টায় এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের পর তাদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে র্যাব। এসময় শিক্ষক মুনতাসিরের দিকে তাকিয়ে অ্যাডভোকেট নূর মোহাম্মদ বলেন, নিজেদের সেলিব্রেটি সেলিব্রেটি লাগছে, তাই না? মুনতাসির হেসে বলেন, হুমম, সেলিব্রেটি লাগছে।
এসময় উপস্থিত ফটোসাংবাদিকরা তাদের ছবি তুলছিলেন। নূর মোহাম্মদ, মুনতাসীর ও সালাহউদ্দিন তাদের দিকেও তাকিয়ে হাসছিলেন। এসময় সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে নূর মোহাম্মদ বলেন, আপনারা ছবি তুলছেন। এত সাংবাদিক আমাদের সামনে বসে আছেন। নিজেদের না আবার সেলিব্রেটি ভেবে ফেলি।
এসময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা হিযবুত তাহরির কেন করেন? আপনাদের উদ্দেশ্য যদি হয় খিলাফত প্রতিষ্ঠা, তাহলে সেটা কিভাবে করতে চান?’
নূর মোহাম্মদ জবাব দিতে শুরু করেও আবার থেমে যান। র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেন, স্যার, শুড উই টক?’
র্যাব অধিনায়ক জানান, তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।
এরপর নূর মোহাম্মদ হেসে বলেন, ‘হাইকোর্টের রুলিং আছে, কথা বলতে পারবনা। আমরা আইন অমান্য করেছি, সেজন্য র্যাব আমাদের ধরে এনেছে। আপনারা (সাংবাদিক) আইন অমান্য করলে আপনাদেরও ধরবে। ‘
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, হিযবুত তাহরির নিষিদ্ধ হওয়ার আগে ২০০৯-২০১০ সাল থেকেই এরা সংগঠনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। হিযবুতের পররাষ্ট্রনীতি কি হবে সে বিষয়ে তারা রিসার্চ করছে। এতেই বোঝা যায়, তারা ছোটখাট কোন কর্মী নন। তারা সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ে আছেন।
রোববার (২৮ জুন) গভীর রাত তিনটার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার মুরাদপুর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা বইপত্রের মধ্যে আছে, হিযবুত তাহরির গঠন, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, খেলাফত ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও প্রতিষ্ঠান, খেলাফত দেশের জন্য একমাত্র সঠিক নেতৃত্ব ও সরকার ব্যবস্থা, জিহাদ এন্ড ফরেন পলিসি অব দ্যা খিলাফত স্টেট, ইসলামি ফেলাফত সরকারের অর্থনীতির মডেল, গণতন্ত্র নয় পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব, ইসলামী খেলাফত সরকারের পররাষ্ট্রনীতির মডেল।
তাদের কাছ থেকে ১টি ল্যাপটপ, একটি মনিটর ও ১টি সিপিইউ, তিনটি মোবাইল ও ২টি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে।
আটক তিনজনের মধ্যে নূর মোহাম্মদ ও সালাউদ্দিনের বাসা নগরীর জাকির হোসেন রোডে। মুনতাসিরের বাসা পাঁচলাইশে মিমি আবাসিক এলাকায়।
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, তিনজন সিটি কলেজে লেখাপড়া করত। তারা একে অপরের বন্ধু। ২০০৯ সালের দিকে তারা হিযবুত তাহরিরের বক্তব্য শুনল। এরপর থেকে হিযবুত তাহরিরের নেতৃস্থানীয় সংগঠকদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হল। তারপর তারাই হিযবুত তাহরিরের কর্মকান্ড ছড়িয়ে দিতে শুরু করল।
র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর জাহাঙ্গির আলম বাংলানিউজকে জানান, তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সন্ধ্যায় তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪২:১৪ ৪০০ বার পঠিত