শুক্রবার, ২৬ জুন ২০১৫
মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিকদের বর্ণনায় ভয়াবহ অত্যাচারের চিত্র
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিকদের বর্ণনায় ভয়াবহ অত্যাচারের চিত্রবঙ্গনিউজ ডটকমঃ ”১৮ দিন ছিলাম ওমানে। বাসায় কাজের কথা বলে আমাকে ছেলেদের একটি মেসে দেওয়া হয়। ২২ জন ছেলেমানুষ। এমন কোনো অত্যাচার নাই তারা করে নাই। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তারা একের পর এক অত্যাচার করে।” এভাবেই নিজের ওপর অত্যাচারের বিবরণ দিলেন যশোরের সাথী বেগম। গত মাসে তিনি ওমানে গিয়েছিলেন বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই। কিন্তু সেখানে গিয়ে এক মাসও টিকতে পারেননি। কোনোভাবে জীবন বাঁচিয়ে ফিরে এসেছেন দেশে। মামলাও করেছেন দালালদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইটস যশোর’ আয়োজিত গণশুনানিতে অংশ নিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন সাথী বেগম।
এই অনুষ্ঠানে নির্যাতিতদের অনেকই তাদের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। একই সাথে তারা এজেন্সিগুলোর সঙ্গে জড়িত দালালদের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সচেতনতা কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি শ্রমিকদের কাজের ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইরাক থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হওয়া আরেকজন অভিবাসী শ্রমিক লক্ষ্মীপুরের আব্দুর রাজ্জাক বিবিসিকে জানান, বৈধভাবে গেলেও দালালরা তাদের বিক্রি করে এজেন্সির কাছে।
দেশীয় এজেন্সি তাদের বিক্রি করে ইরাকের এজেন্সি বা কম্পানির কাছে। ফলে এসব কম্পানি তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে পারিশ্রমিক দেওয়ার বদলে টাকা চাইলেই নির্যাতন করে থাকে।
মি. রাজ্জাক বলেন, ”আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। নাজাফ থেকে বাগদাদে। পরে পালিয়ে প্রাদেশিক সরকারের দ্বারস্থ হয়ে একটি পারমিট নিয়ে দেশে ফিরে এসেছি।”
গণশুনানিতে আসা এসব শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন একটি সংগঠনের কর্মকর্তা বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক।
তিনি বলেন বিদেশে কাজের নামে যারা শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান এখন এসব শ্রমিকরা।
এদিকে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শ্রমিকদের বিদেশে যাওয়ার আগে সচেতন করার পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেই মানবাধিকার পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। তাহলে সেখানে শ্রমিকদের কাজ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কতটা সম্ভব?
জানতে চেয়েছিলাম অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠনের কর্ণধার সৈয়দ সাইফুল হক।
তিনি বলেন, ”শ্রমিক যেখান থেকে যায় ও যে দেশে যায় দুই দেশকেই শ্রমিকদের কাজ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে কিন্তু সেটিকে আরও জোরদার করতে হবে।”
এদিকে সচেতনতার পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগের কারণে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটতে শুরু করবে বলেই আশা করছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০০:০৪ ৩০৮ বার পঠিত