মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০১৫

ভবিষ্যতেও আ’লীগ জনগণের পাশে থাকবে প্রধানমন্ত্রী

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ভবিষ্যতেও আ’লীগ জনগণের পাশে থাকবে প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার, ২৩ জুন ২০১৫



1434992009_p-36.jpgবঙ্গনিউজ ডটকমঃ আজ ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সংগ্রাম, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবসমৃদ্ধ ১৯৪৯ সালের এইদিনে প্রতিষ্ঠিত এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে এদেশের গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়।এ উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগ এদেশের জনগণের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ। দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করবে। বাণীতে তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান সংগঠনের অগণিত নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীসহ দেশবাসীকে। এছাড়াও তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক সামসুল হককে। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীকে। ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় চার নেতাসহ পূর্বসূরী নেতা-কর্মী যাঁদের অক্লান্ত শ্রম, মেধা ও ত্যাগের বিনিময়ে আওয়ামী লীগ গণমানুষের এক বিশাল সংগঠনে পরিণত হয়েছে। তাদের স্মরণ করে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর এ ভূখ-ে যা কিছু বিশাল অর্জন তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাসের সঙ্গে এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। ১৯৫২’র ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২’র আইয়ুবের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৪’র দাঙ্গার পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা, ১৯৬৬’র ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান সবই পরিচালিত হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। ১৯৭০’র নির্বাচনে বাঙালি জাতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১-এর ৭ মার্চ ঢাকার রেইসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, ‘এ বারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু করে ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যা। গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু তৎকালীন ইপিআর-এর ওয়ারলেসের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরে প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠন করে। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরে সরকার শপথ গ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে পরিচালিত সফল মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল-স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাণীতে তিনি বলেন, সদ্য স্বাধীন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন জাতির পিতা তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরের সংগ্রামে ব্যস্ত তখনই ঘাতকরা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে তাঁকে স-পরিবারে হত্যা করে। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ৩ নভেম্বর কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত এবং নির্যাতন আর নিপীড়নের মাধ্যমে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয় জনগণের সংগঠন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে। কিন্তু এ অপচেষ্টা কখনই সফল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় মহান ২১ ফেফ্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পায়। ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কারো মধ্যস্থতা ছাড়াই স্বাক্ষরিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি, রিজার্ভ, বিনিয়োগ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলারে। আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে আইনি লড়াইয়ে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে বিজয়ী হয়ে গভীর সমুদ্রে ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বিপুল জলসম্পদের মালিকানা অর্জন করেছি। ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত স্থল-সীমানা সমস্যার সমাধান আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম সাফল্য। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত করেছে উল্লেখ করে বাণীতে তিনি আরো বলেন, রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-সন্ত্রাস, দুর্নীতি-নিরক্ষরতামুক্ত, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ, অসাম্প্রদায়িক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র বিনির্মাণে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তিনি দেশের প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচিআওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের লক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে দলটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্য ওঠার সাথে সাথে দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, পায়রা ও বেলুন উড়ানো এবং দুপুর তিনটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে আলোচনাসভা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গতকাল এক বিবৃতিতে দলের গৌরবোজ্জ্বল ৬৬ বছর পূর্তিতে গৃহিত কর্মসূচি পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল জেলা, উপজেলাসহ সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২১:৩৯   ৩৫৬ বার পঠিত