রবিবার, ২১ জুন ২০১৫
ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে ১৬০ কোটি ডলার চায় জাতিসংঘ
Home Page » জাতীয় » ইয়েমেনে মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে ১৬০ কোটি ডলার চায় জাতিসংঘবঙ্গনিউজ ডটকমঃ কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে ইয়েমেনের বিবদমান গ্রুপগুলোর মধ্যকার শান্তি আলোচনা। জাতিসংঘের উদ্যোগে জেনেভায় অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনায় হুতি প্রতিনিধিরা সরকার পক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতে রাজি না হওয়ায় এ আলোচনা ভেঙে যায়। এদিকে, গত শুক্রবার জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সউদি বিমান হামলা ও চলমান সংঘাতে বিধ্বস্ত ইয়েমেনে আসন্ন মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে কমপক্ষে ১৬০ কোটি ডলারের সহায়তা প্রয়োজন। সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের এক মুখপাত্র জানান, ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগ অর্থাৎ দুই কোটিরও বেশি লোকের মানবিক সহায়তা বা নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজন। জাতিসংঘ এই প্রয়োজন মেটাতে নতুন করে আবারো তহবিল সংগ্রহে নেমেছে। তারা বলেছে, সেখানে একটা ভয়াবহ বিপর্যয় আসন্ন। এই বিপর্যয় ঠেকাতে বিপুল অর্থ দরকার।খবরে বলা হয়, কোনোরকম চুক্তি ছাড়াই জেনেভা শান্তি আলোচনা ভেঙে গেছে। গত শুক্রবারের এই আলোচনা নস্যাৎ হওয়ার জন্য ইয়েমেনের নির্বাসিত সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুতিদের দায়ি করেছেন। আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর ইয়েমেনে ফের বিমান হামলা শুরু করেছে সউদি নেতৃত্বাধীন জোট। জাতিসংঘের বিশেষ দূত চেইখ আহমেদ জানিয়েছেন, হুতি বিদ্রোহীরা সরকারের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে রাজি না হওয়ায় পাঁচ দিনের ওই আলোচনা ভেঙে গেছে। আলোচনা শুরুর আগে দুই পক্ষ অস্ত্রবিরতি এবং জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল।ইয়াসিন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটি বড় ধরনের আশা নিয়ে এখানে এসেছিলাম। কিন্তু আমরা যা আশা করেছিলাম, হুতি বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি দলের কারণে বাস্তবে সে ধরনের অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হয়নি।তিনি আরও বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী সফল না হওয়ার অর্থ এই নয় যে, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। বরং ইয়েমেনের নৃশংস দ্বন্দ্ব নিরসনে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। রিয়াদ ইয়াসিন বলেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যাপারে সরকারি প্রতিনিধি দল এখনো আশাবাদী। পরবর্তী আলোচনার ব্যাপারে কোনো দিনক্ষণ ঠিক করা হয়নি বলে জানান তিনি। তবে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের শিয়াপন্থী হুতি বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা হয়েছে কিনা, তা খবরে উল্লেখ করা হয়নি। এদিকে গত শুক্রবার সকালে রাজধানী সানা, এডেন শহরের দক্ষিণাঞ্চল এবং লাহজ ও জোউফে প্রদেশ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে সউদি জোট। জাতিসংঘ সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী হাদি সরকার ও সানা থেকে আসা হুতিদের প্রতিনিধি দলে দশজন করে সদস্য থাকার কথা। এদের মধ্যে সাতজন আলোচক আর তিনজন পরামর্শক থাকার কথা। কিন্তু হুতিরা তাদের সঙ্গে আসা ২২ জন প্রতিনিধি ছাড়া আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। একজন প্রতিনিধি বলেন, আমাদের এই ২২ জন দেশটির অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাদের ছাড়া আলোচনা সম্ভব নয়। এমনকি এদের কেউই নিজের হয়ে অন্যকে আলোচনা করার বা প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা দিতে রাজি নয়। আর তাই আলোচনা নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়।এর আগে জাতিসংঘ কর্মকর্তারা বলছেন, ইয়েমেন সংকটের অন্যতম প্রধান শক্তি সউদি আরব এই আলোচনায় অনুপস্থিত থাকায় কোনো ধরনের সমাধান আসার ব্যাপারে কিছুই স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আলোচনায় হুতিরা একটি সাধারণ যুদ্ধবিরতি চাইছেন। আর এটা করতে হলে মনসুর হাদির পক্ষ সউদি আরবের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইয়েমেন সংকট নিয়ে জেনেভায় হুতিবিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার পর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হুতি নেতাকে জুতা নিক্ষেপ করেছেন এক নারী। ওই নেতা সেই জুতা আবার নারীর দিকে পাল্টা নিক্ষেপ করে নজিরবিহীন কা- ঘটিয়েছেন। জেনেভায় বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। এতে ইয়েমেনি সমাজের গভীর বিভাজনই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আল-জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি, ইয়াহু নিউজ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫৫:০২ ৩৫৮ বার পঠিত