শুক্রবার, ১৯ জুন ২০১৫
‘প্রকাশ্য ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে’
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ‘প্রকাশ্য ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে’বঙ্গনিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশ নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনা হয়েছে। গত বুধবার বিকেলে হাউজ অব কমন্সে বাংলাদেশ বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় দলের সভাপতি অ্যান মেইনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ ও এর ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক দেড় ঘণ্টার আলোচনার সূচনা হয়। ম্যানমেউন বলেন, প্রকাশ্য ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
স্যার অ্যালান মিলের সভাপতিত্বে এ আলোচনায় যুক্তরাজ্যের ফরেইন অ্যান্ড কমনওয়েলথ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপমন্ত্রী হুগো সুয়্যারও উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হলেও ব্রিটিশ পার্লামেন্টারিয়ানের সদ্য নির্বাচিত তিন বাংলাদেশী এমপির কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পার্লামেন্টারিয়ানের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন তাসমিনা আহমেদ শেখ, মার্ক ফিল্ড, জিম ফিৎজপ্যাট্রিক, কেরি ম্যাকার্থি, জোনাথন রেনল্ডস, ক্রিশ্চিয়ান ম্যাথেসন, পল স্কালি ও ক্রিস্টিনা রিজ।
আলোচনার শুরুতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিতর্কের গুরুত্ব তুলে ধরেন অ্যান মেইন। পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টির প্রোপট, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন এবং ‘ব্যাপক ইসলামিকরণের’ বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আধুনিক উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার চেষ্টার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
কনজারভেটিভ পার্টির এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল একটি দেশ এবং অপোকৃত কম সময়ের মধ্যে দেশটিকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। কেউ বলছে না, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের এই যাত্রা সহজ ছিল। ‘এটা নিয়ে বিচার করতে যাওয়া এবং আমাদের নিজেদের দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সাথে বাংলাদেশের তুলনা করতে যাওয়াও ঠিক হবে না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও আদর্শের কথা আলোচনায় তুলে ধরেন অ্যান মেইন। বাংলাদেশের মানুষের সম্ভাবনা ও সমৃদ্ধির জন্য যুক্তরাজ্য আরো কী কী সহযোগিতা দিতে পারে তা ভেবে দেখার আহ্বান জানান তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার পরিমাণ ২৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি জানিয়ে এ ব্রিটিশ এমপি বলেন, যুক্তরাজ্যের করদাতাদের দেয়া এ অর্থ দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ‘দুর্নীতির বিস্তৃতির’ কথা তুলে ধরে অ্যান মেইন বলেন, যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৩৪ শতাংশের েেত্র নিরীায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যা ‘সত্যিই উদ্বেগের বিষয়’।
বাংলাদেশের ইতিহাসে নানা পর্যায়ে সহিংসতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ দেশে কোনো নির্বাচন ‘রক্তপাত ছাড়া’ হয়নি। এটা খুবই ‘লজ্জাজনক’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কয়েক দিনের সফরে তার সাথে কয়েকজন ব্রিটিশ এমপির সাাতের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ থেকেও উদ্ধৃত করেন অ্যান মেইন। মতায় যেই থাকুক, বাংলাদেশে যাতে মানবাধিকার ও বাক স্বাধীনতা সুরতি থাকে, সে বিষয়ে গুরুত্ব দেন তিনি। বাংলাদেশ বিষয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় দলের সভাপতি বলেন, ‘প্রকাশ্য ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিত করতে সব প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকতার বিপে ও বাক স্বাধীনতার পে দাঁড়াতে হবে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে চার ব্লগারের নৃশংশ হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরে অ্যান মেইন বলেন, এ ধরনের বর্বরতার সাথে বাক স্বাধীনতা ও ধর্মীয় অমর্যাদার বিষয় জড়িত। সরকার এসব ঘটনায় গ্রেফতার করলেও পরিস্থিতি উদ্বেগের।
বাংলাদেশের বড় দুইটি রাজনৈতিক দলÑ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রবাসী সমর্থকরা বিভিন্ন সময় অনেক দেশে যেভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে বিােভ চালান, তার সমালোচনা করেন এ ব্রিটিশ এমপি।
শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাইরে বিএনপি সমর্থকদের বিােভের বিষয়ে বাংলাদেশের একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত কলামের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
অ্যান মেইন বলেন, ‘এটা খুবই পরিতাপের বিষয় যে এ ধরনের রাজনৈতিক শত্রুতা ও অসন্তোষ এতদূর চলে এসেছে এবং কার্যত আমাদের দেশেও সমর্থক তৈরি করছে। এ অচলাবস্থা ভাঙতে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।
‘আগামীতে বাংলাদেশে নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন, কোনো পই যাতে নিজেদের ‘বাদ পড়া’ মনে না করে, তা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৩:৫৭ ৫২০ বার পঠিত