মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০১৫
চীনকে ঠেকাতে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়াতে চাইছে ভারত!
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » চীনকে ঠেকাতে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়াতে চাইছে ভারত!বঙ্গনিউজ ডটকমঃ ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে তিব্বতের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে চীনের
রেল যোগাযোগ বাড়ানোয় শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে ভারতকে। এজন্য ভারতবর্ষ ভাগের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্রিটিশ আমলের রেলপথ আবার চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এই সময় জানিয়েছে।
এ নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এই সময়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এছাড়া রেলপথের রূপরেখা তৈরি করতে খুব শিগগিরই ভারতে বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এবং রেলের শীর্ষ কর্তারা ভারত যাচ্ছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
মঙ্গলবার এই সময়ে তাপস প্রামাণিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে প্রায় অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া ব্রিটিশ রেল রুটের দরজা আবার খুলতে চলেছে৷ সব ঠিক থাকলে ভারতবর্ষ ভাগের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া মোট আটটি রুট দিয়ে দুই দেশের মধ্যে অচিরেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে৷ আরো একটি নতুন মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হবে৷ যাত্রীদের হয়রানি কমাতে মৈত্রী এক্সপ্রেসেই কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সার্ভিস চালু হবে৷ ফলে দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে যাবে৷ একই সঙ্গে সহজ হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যের রেল যোগাযোগও৷
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ তার রূপরেখা তৈরির জন্য খুব শিগগিরই ভারতে আসছেন বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এবং রেলের শীর্ষ কর্তারা৷ দিল্লিতে রেলবোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করা ছাড়াও কলকাতাতেও তারা ঘুরে যেতে পারেন বলে জানা গেছে৷ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে তিব্বতের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে চীন যেভাবে রেল যোগাযোগ গড়ে তুলছে, তা ভারতের কাছে আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ তাই বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়াতে চাইছে ভারত৷
এই সময় জানায়, ব্রিটিশ আমলে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মোট আটটি রুট দিয়ে ট্রেন চলত৷ দেশ ভাগের পর সব ক’টি রুট বন্ধ হয়ে যায়৷ বর্তমানে দর্শনা-গেদে, বেনাপোল-পেট্রাপোল, রোহনপুর-সিংঘাবাদ রুট দিয়ে ট্রেন চলাচল করে৷ আরও পাঁচটি রুটে নতুন করে ট্রেন চালাতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ৷ এর মধ্যে রয়েছে বিরল-রাধিকাপুর, শাহবাজপুর-মহিশাসন, আখাউড়া-আগরতলা, লালগোলা-গোদাগড়ি, হলদিবাড়ি-চিলাহাটি, গীতলদহ-মোঘলহাট রেল রুট৷ ২০০৮ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে চালু হওয়া মৈত্রী এক্সপ্রেস এখন যাতায়াত করে দর্শনা-গেদে রুট দিয়ে৷ আরো একটি নতুন রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালানো হবে৷
মৈত্রী এক্সপ্রেসে কলকাতা থেকে ঢাকায় (৩৭৫ কিমি) যেতে সময় লাগে প্রায় ১০-১১ ঘণ্টা৷ এই পথ দিয়ে যেতে গেলে দু’জায়গায় থামতে হয়৷ গেদে এবং দর্শনায় রয়েছে ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট৷ সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়৷ বাংলাদেশের দিকে ইলেকট্রিক লাইন না থাকায় দর্শনায় গিয়ে রেলের ইঞ্জিনও বদলাতে হয়৷ তার জন্যও সমস্যা পোহাতে হয় যাত্রীদের৷ তা থেকে মুক্তি দিতেই মৈত্রী এক্সপ্রেসের কামরাতেই ইমিগ্রেশন অফিস চালু করার কথা ভাবা হয়েছে৷
দুই দেশের মধ্যে রেল সংযোগ গড়ে তোলা ছাড়াও বাংলাদেশে রেলের মানোন্নয়নে বিপুল পরিমাণ টাকা ঢালতে চলেছে মোদি সরকার৷ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া আটটি রেল রুটের মধ্যে পাঁচটিতে খুব শিগগিরই রেল লাইন সংষ্কারের কাজ শুরু হবে৷ বাকি তিনটি রুটে ধাপে ধাপে ট্রেন চলাচল শুরু হবে৷ বাংলাদেশের যে স রেল প্রকল্পে ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হলো, সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপের আধুনিকীকরণ, বিরল-রাধিকাপুর, রহনপুর-সিঙ্গাবাদ, শাহজাদপুর-মহিশাসন, চিলাহাটি-চেংড়াবান্ধা, আখাউড়া-আগরতলা, ফেনী-বিলোনিয়া, খুলনা-মংলা রেললাইন সংষ্কার এবং ভারত-বাংলাদেশ কন্টেনার সার্ভিস চালু করা৷ খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ এবং কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত রেললাইন সংষ্কারে মোট ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা খরচ হবে৷ তার মধ্যে ভারত ঋণ হিসাবে দেবে ২ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা৷ কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর রেললাইন সংষ্কারের জন্য বাংলাদেশকে মোট ৬৭৮ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে ভারত৷
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৯:০৮ ৩৮৮ বার পঠিত