বুধবার, ১০ জুন ২০১৫
ত্বকের ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য সুখবর!
Home Page » এক্সক্লুসিভ » ত্বকের ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য সুখবর!বঙ্গনিউজ ডটকমঃ ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমায় আক্রান্তদের জন্য সুখবর! এ ক্যান্সারের চিকিৎসায় নতুন একটি পথ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।মেলানোমার বিস্তার ঠেকাতে ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহার হয় এমন দু’টি ওষুধের মিশ্রণের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অবিশ্বাস্যরকম ভাল ফল পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে দেহের ইমিউন সিস্টেমের জন্য সহায়ক দুটি ওষুধ ইপিলিমুবাম এবং নিভলুবামের মিশ্রণ প্রাণঘাতী ত্বক ক্যান্সার মেলানোমার বিস্তার প্রায় ৬০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে।
মেলানোমা মূলত ত্বক ক্যান্সার হলেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে ফুসফুস, যকৃৎ, হাড় এমনকি মস্তিষ্কেও।
বিভিন্ন দেশে মেলানোমায় আক্রান্ত ৯৪৫ জন রোগীকে ইপিলিমুমাব (বাজারে যেটি ইয়েরভই নামে পরিচিত) ও নিভলুমাব (বাজারে ওপডিভ নামে পরিচিত) ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করে দেখা গেছে, এক বছরের মধ্যে ৫৪ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ক্যান্সার টিউমারের বৃদ্ধি অন্তত এক তৃতীয়াংশ কমেছে।
যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা ‘আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিকাল অনকোলজি’ তে গবেষণার এ ফল প্রকাশ করেছেন।
কয়েকটি মারাত্মক ধরনের ত্বক ক্যান্সারের একটি হচ্ছে মেলানোমা। যুক্তরাজ্যে যে ধরনের ক্যান্সারে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়, সে তালিকায় মেলানোমার অবস্থান ষষ্ঠ। সেখানে প্রতিবছরই মেলানোমায় আক্রান্ত হয়ে দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।
যুক্তরাজ্যের শীর্ষ পর্যায়ের ক্যান্সার গবেষক এবং রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালের ক্যান্সার চিকিৎসক ডা. জেমস লার্কিন বিবিসি’কে বলেন, “ইপিলিমুমাব ও নিভলুমাব আলাদা আলাদা ভাবে গ্রহণ না করে যদি দু’টি ওষুধ একসাথে গ্রহণ করা হয় তবে তা বেশি কার্যকর হবে।
এতে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা টিউমার সনাক্ত করতে সক্ষম হবে, যেটা আগে সনাক্ত করতে পারেনি। এর ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা টিউমারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে সেটি ধ্বংস করতে সক্ষম হবে।”
“আমার মনে হয় এটি ভবিষ্যতে ক্যান্সার চিকিৎসায় বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।”
শিকাগোতে ক্যান্সার সম্মেলনে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য- চিকিৎসার পর রোগীরা কতদিন বেঁচে থাকবেন তা এখনো অজানাই রয়ে গেছে।
লার্কিন বলেন, “আমরা আশা করছি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এই দ্রুত সাড়া দেয়া টেকসই হবে। কিন্তু এ মুহূর্তে এ সম্পর্কে আমরা কিছু বলতে পারছি না।”
ক্যান্সারের ওষুধ সেবনে অবসাদ, ফুসকুড়ি বা পাতলা পায়খানার মত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার পর অর্ধেকের বেশি মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, দুইটি ওষুধ একসঙ্গে গ্রহণ করলেও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। তবে শুধু ইপিলিমুমাব গ্রহণ করলে যে মাত্রায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় দু’টি ওষুধ একসঙ্গে গ্রহণ করলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তার চারভাগের একভাগ হয়।
তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এ চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উন্নতি হলেও কারো কারো একদমই উপকার হয় না। এর কারণ গবেষকদের কাছে এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে ওই দু’টি ওষুধ একসঙ্গে গ্রহণ করলে ফুসফুস ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও উপকার পাওয়ার যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। বিষয়টি এখনও পরীক্ষাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১৩:১৫ ৩৫৯ বার পঠিত