মঙ্গলবার, ৯ জুন ২০১৫

হাসিনার প্রশংসা করতে গিয়ে সমালোচনায় বিদ্ধ মোদি

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » হাসিনার প্রশংসা করতে গিয়ে সমালোচনায় বিদ্ধ মোদি
মঙ্গলবার, ৯ জুন ২০১৫



606.jpgবঙ্গনিউজ ডটকমঃ মিডিয়াতেও নানা মহল এখন সমালোচনায় মুখর রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনায়। ৭ জুন বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনের শেষ কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্ষ্ঠুানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কঠোর অবস্থানের প্রশংসা করতে গিয়ে তাকে ‘একজন মহিলা হয়েও’ বলায় নরেন্দ্র মোদির এ সমালোচনা চলছে জোড়েশোড়ে।

অনেকে মোদির ওই মন্তব্যকে নারীত্বের অপমান বলে সমালোচান করছেন। ‘পুরুষতন্ত্রের কণ্ঠস্বর’ শোনা যাচ্ছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছে কংগ্রেস। মোদির মন্তব্যকে ‘যৌনগন্ধী’ বলে নিন্দা করেছে নেটিজেনরা।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অন্ষ্ঠুানে মোদি বলেন, এটা সত্যিই প্রশংসনীয় যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হওয়া সত্ত্বেও খোলাখুলি ঘোষণা করেছেন যে, সন্ত্রাসবাদকে তিনি বিন্দুমাত্র রেয়াত করবেন না অর্থাৎ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের প্রতি এহেন কড়া মনোভাবের জন্য তাকে আমার অভিনন্দন জানাই।

মোদির এই ভূয়সী প্রশংসার মধ্যেই ‘পুরুষতন্ত্রে’র ছায়া দেখছেন কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা। তার মতে, এটা নারীত্বের অপমান। এমন ভাষায় কথা বলে উনি হাসিনাকে বিব্রত করেছেন, মহিলা নেতাদের অপমান করেছেন। এর মধ্যে অকারণ পৃষ্ঠপোষকতার মানসিকতাও ফুটে উঠেছে।

মোদিকে ‘একাধিক ক্ষেত্রে অপরাধী’ বলে কটাক্ষ করে আনন্দ শর্মা এও বলেছেন, উনি সবসময়ই বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন সব মন্তব্য করে বসেন যা থেকে বিতর্ক তৈরি হয়। মোদির ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের নিন্দা করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র শোভা ওঝা, সঞ্জয় ঝা-ও।

শীর্ষ বিজেপি নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী কিন্তু প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্তীর ইন্দিরা গান্ধীকে ‘দেবী দূর্গা’ বলেছিলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্বে ভারতকে সফল নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেওয়ার পর। কিন্তু মোদির মন্তব্যে মহিলাদের প্রতি আরএসএসের সংকীর্ণ, ক্ষুদ্র মানসিকতাই ফুটে উঠেছে। কারণ সঙ্ঘ কোনোদিনই মহিলাদের সম্মান করে না, ওদের যাবতীয় কার্যকলাপ মহিলাদের বিরুদ্ধেই। সঞ্জয় ঝা আবার নির্বাচনী হলফনামায় মোদির বিয়ে করা স্ত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে স্বীকার না করার প্রসঙ্গটি তুলে এনেছেন। তিনি বলেছেন, অন্য কোনো দেশ হলে এমন একজন, যিনি বছরের পর বছর নিজের বিবাহিত জীবন নিয়ে মিথ্যা বলে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী হতেই পারতেন না।

তবে পাল্টা মোদির হয়ে আসরে নেমেছেন বিজেপি নেতা-নেত্রীরাও। তাদের সাফাই, হাসিনাকে সম্মানই দেখিয়েছেন উনি। তারা বলছেন, কংগ্রেস বরং মোদির সাফল্যের প্রশংসা করুক, যেমনটা করছেন ‘ভারতের জনগণ, বিশ্ব নেতারা’।

মোদির সমালোচনা করায় কংগ্রেসকে একহাত নিয়ে বিজেপি নেত্রী সাইনা এন সি বলেছেন, উনি (মোদি) এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা বাস্তবিকই একটা বিরাট, পাহাড় প্রমাণ কঠিন কাজ এবং একজন মহিলার পক্ষে কাজটা একটু বেশিই কঠিন। হাসিনাকে তিনি সর্বোচ্চ সম্মানই দিয়েছেন। হাসিনাও সেভাবেই মোদির প্রশংসা গ্রহণ করেছেন।

টুইটারেও উপচে পড়েছে মোদির প্রতি কটাক্ষ, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপে। টুইটারে মোদিকে ফলো করেন প্রচুর ব্যবহারকারী। তারা মোদির ‘যৌনগন্ধী’ মন্তব্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৪০:০৪   ৩৪০ বার পঠিত