শনিবার, ৬ জুন ২০১৫

কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি বিএনপি

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি বিএনপি
শনিবার, ৬ জুন ২০১৫



images.jpegবঙ্গনিউজ ডটকমঃ নতুন অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে করের আওতায় আনার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।একইসঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় ভর্তুকি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে তারা।

শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানান দলের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।

তিনি বলেন, “শিক্ষা-প্রযুক্তি-স্বাস্থ্য খাতে বাজেটে প্রকৃত বরাদ্ধ বাড়েনি। দেশের মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিষয়গুলো বাজেটে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।

“বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ১০ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে। আমরা জানি দেশে নতুন করে বড় মাপের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সেভাবে বাড়েনি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যে হারে পাস করছে, তাতে করে প্রতিযোগিতায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারার কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজের দিকে ঝুঁকে থাকে।

“সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হলে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত অভিভাবকদের উপর চাপ পড়বে। এখন শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ধনীদের সন্তানরাই পড়ালেখা করছেন না, মধ্যবিত্তদের সন্তানরা পড়ালেখা করছেন। সুতরাং ১০ শতাংশ ভ্যাট আরোপের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, আমাদের দল তা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছে।”

বাজেট নিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “এই বাজেটকে ছাত্র-ছাত্রীবান্ধব বলা যাবে না, এটাকে কৃষিবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব বাজেটও বলা যাবে না। টাকার অংকে যত বড় বিশাল আকারের বাজেট সরকার দিয়ে থাকুক না কেন এটা একটি কল্পনাবিলাসী বাজেট। প্রকৃত অর্থে এটি অবাস্তব বাজেট।

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ঘাটতির এই বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী জাতিকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, বাস্তবায়নের বছর শেষে এটা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। বাজেটে ৭ ভাগ উচ্চাভিলাষী যে প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা একেবারে অসম্ভব বলে আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি। ঘোষিত বাজেটে সাধারণ মানুষের কোনো সুখবর নেই।”

বৃহস্পতিবার সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা।

সংশোধিত বাজেটে জিডিপি ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা; আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে মোট জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ ব্রিফিংয়ের শুরুতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে অর্থমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য রেখেছেন। তিনি (অর্থমন্ত্রী) বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি শেষ (ফিনিশড)। অফিসিয়ালি তিনি এখন আর কেউ নন।’

“দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের প্রধান, তিন তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার শীর্ষে যার অবস্থান তাকে ও তার নেতৃত্ব নিয়ে মাল মুহিতের এ ধরনের রাবিশ ও ভোগাস বক্তব্য কেবল কোনো অর্বাচীন বালকের মুখেই মানায়।”

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “বর্তমান সংসদে কোনো বিরোধী দল নেই। তথাকথিত বিরোধী দল সরকারের অংশ হওয়ায় তারা আজ সংসদে জনগণের পক্ষে কথা বলে না। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল বিরোধী দল হওয়ার কারণে জনগণের পক্ষে কথা বলতেই হয়।”

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে তিনি বলেন, “যেখানে চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি, সেখানে নতুন বাজেটে আরও ৩০ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায়ও কঠিন হবে। অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতে অর্থের যোগান দেওয়া বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

“কীভাবে অর্থমন্ত্রী বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন করবেন, তার কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা পাওয়া যায়নি তার বক্তৃতায়। কথার মালার বাজেটে সাধারণ মানুষ কী পেল বা পাবে সেটার বহিঃপ্রকাশ খু্বই কম ঘটেছে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে।”

কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান বিএনপি নেতা রিপন।

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলেও বেসরকারি কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোর সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত চুক্তি পুনর্বিবেচনা না হওয়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১:২৫:০৮   ৩৮৪ বার পঠিত