শনিবার, ৬ জুন ২০১৫
ঢাকায় ভারতের প্রধান মন্ত্রী
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ঢাকায় ভারতের প্রধান মন্ত্রীবঙ্গনিউজ ডটকমঃ শনিবার সকাল সোয়া ১০টার খানিক আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ভারতের বিমান বাহিনীর বিশেষ উড়োজাহাজটি হজরত শাহজালাল বিমান বন্দরে নামে। ‘রাজদূত’ নামের এই উড়োজাহাজটির সামনে দুই পাশে উড়ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা।
টারমাকে ভেড়ার ১৫ মিনিট পর উড়োজাহাজ থেকে নেমে আসেন সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি ও ছাই রঙের ওয়েস্ট কোট পরা মোদী। সিঁড়িতেই সবাইকে নমস্কার জানান তিনি।
এ সময় লাল গালিচায় অপেক্ষা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোদী নেমে এলে তাকে অভ্যর্থনা জানান তিনি। একটি শিশু ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন শুভেচ্ছার ফুল।
লাল গালিচা সংবর্ধনার পর মোদীকে দেওয়া হয় গার্ড অফ অনার। দুই প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীর সালাম নেন, এসময় বাজানো হয় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত।
নরেন্দ্র মোদী গার্ড পরিদর্শন করেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন বিমান বন্দরে। ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধানও।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন শেখ হাসিনা।
ঢাকার পথে নয়া দিল্লি ছাড়ার ঠিক আগেই টুইট করে নিজের দুদিনের এই সফরের সাফল্য প্রত্যাশা করেন নরেন্দ্র মোদী।
চার বছর আগে মনমোহন সিংয়ের সফরের সময় ‘ডুবোচরে’ আটকে যাওয়া তিস্তা চুক্তির জট না খুললেও ‘গণ্ডির বাইরে গিয়ে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খোলার’ আশা জাগিয়ে ঢাকায় পা রাখলেন মোদী।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের ভাষায়, ‘ব্যতিক্রমী প্রতিবেশী’ বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদীর এই সফর ‘ঐতিহাসিক’।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘একটি ঐতিহাসিক উচ্চতায়’ পৌঁছেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, একসঙ্গে কাজ করলে আরও অনেক অর্জনই সম্ভব।
শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে মোটর শোভাযাত্রাসহ সাভারে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ফুল দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি।
স্মৃতিসৌধ থেকে ঢাকায় ফিরে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে গিয়ে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন মোদী। তারপর তিনি যাবেন সোনারগাঁও হোটেলে, এই সফরে সেখানেই থাকবেন তিনি।
সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে যাবেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে শীর্ষ বৈঠকে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে।
ছিটমহল বিনিময়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিলও হস্তান্তর হবে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। এই সফরে তিস্তা চুক্তি যে হচ্ছে না, তা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শীর্ষ বৈঠকে উপস্থিত থাকতে একদিন আগেই ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শীর্ষ বৈঠকের পর রাতে সোনারগাঁও হোটেলে ফিরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
সফরের দ্বিতীয় দিন রোববারও ব্যস্ত সময় কাটাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন শেষে বারিধারায় ভারতীয় হাই কমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।
দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মোদী। সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অটল বিহারি বাজপাইর পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্মাননা গ্রহণ করবেন বিজেপির এই নেতা।
এরপর হোটেলে ফিরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সাক্ষাৎ দেবেন মোদী।
রাতে ঢাকা ছাড়ার আগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভারতীয় হাই কমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন মোদী।
চা বিক্রেতা থেকে রাজনীতিতে এসে বহু বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রির রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসা মোদীর এই বক্তৃতা নিয়ে এরই মধ্যে তরুণদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৬:০৩ ৩৩৫ বার পঠিত