মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৩

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এটিএম বুথে জাল নোট

Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এটিএম বুথে জাল নোট
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৩



busi_standard-chartered-ban.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ এবার বিদেশি মালিকানার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এটিএম বুথে জাল টাকা সরবরাহের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এক হাজার টাকার জাল নোটটি ব্যাংকের গ্রাহক সেবাকেন্দ্র প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ফেরত দিয়েছে। জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন থাকার পরও এ ধরনের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এতে গ্রাহকদের মধ্যে আস্থার চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সূত্রমতে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গ্রাহক ও জাতিসংঘের একটি সংস্থার কর্মকর্তা কাজী আফজাল হোসেন গত ২৪ মার্চ মিরপুর-১-এ অবস্থিত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। পরে এ টাকা অন্য একটি ব্যাংকের জমা দিতে গেলে জানতে পারেন সেখানে এক হাজার টাকার একটি নোট জাল। এ বিষয়ে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গ্রাহকসেবাকেন্দ্রে অভিযোগ করেন। তবে ব্যাংক আফজাল হোসেনের টাকা ফেরত পাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেয়।
সূত্র আরও জানায়, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পক্ষ থেকে জাল নোটের বিষয়টি অস্বীকারের পর আফজাল হোসেন বাংলাদেশ ব্যাংকে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণকেন্দ্রে অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাওয়া কোনো তথ্য দিতে পারেনি ব্যাংকটি। অবশেষে ঝামেলা এড়াতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে ওই গ্রাহককে টাকাটা ফেরত দিয়ে দেয়।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মতামতে বলেছে, তাদের এটিএম বুথে কোনো ধরনের জাল নোট লোড করা হয় না। যেহেতু এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের সময়ে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন না। এমনটিক বুথে সংরক্ষিত ভিডিও ফুটেজেও এ ধরনের নোট সরবরাহের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকের কাছে এটিএম বুথের ভিডিও ফুটেজ চাওয়া হলেও তারা দেয়নি। এ পরিস্থিতিতে বুথ থেকে ছেঁড়া-ফাটা বা জাল অথবা ব্যবহারে অযোগ্য নোট সরবরাহে গ্রাহক-ব্যাংকার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ক্ষুব্ধ ওই গ্রাহক জানান, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক কৌশলে এটিএম বুথে জাল নোট ছেড়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংককে আন্তরিক মনে হয়নি। শুধু এক হাজার টাকা নোট ফেরতের আশায় আমি অভিযোগ করিনি। আমি পুরো ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন চেয়েছিলাম। বাংলাদেশে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অনেক শক্তিশালী। তাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলে পাত্তা দেয় না। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেকটা দায়সারা গোছের সমাধান দিয়েছে।
সূত্রমতে, এটিএম বুথে জাল নোট সরবরাহের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে একটি আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছর এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন আইনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। সে সময়ে জাল নোটসংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে সাক্ষী না পাওয়ার বিষয়টিকে ‘বড় সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সে আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো তত্পরতা দেখা যাচ্ছে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে জাল টাকা নিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মামলা অনিষ্পন্ন রয়েছে। কয়েক বছর ধরে ঈদের আগে আগে টাকা জালকারী চক্রগুলো অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠায় এবং বড় অঙ্কের জাল নোটসহ বেশ কয়েকটি জালিয়াত চক্র ধরা পড়ার পর এ বিষয়ে কঠোর আইন করার উদ্যোগ নেয় সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত বছরের ৮ অক্টোবর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়। সে আলোকে চলতি বছরের মধ্যে আইনটি চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২:০৫:১২   ৫০২ বার পঠিত