শনিবার, ২ মে ২০১৫
হাজারো মানুষ চাপা পড়ে আছে এখনওঃ নেপালে ভূমিকম্প
Home Page » বিশ্ব » হাজারো মানুষ চাপা পড়ে আছে এখনওঃ নেপালে ভূমিকম্পবঙ্গনিউজ ডটকমঃ ভূমিকম্পের পর কয়েক হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ থাকলেও তাদের বেঁচে থাকার আশা ছেড়ে দিয়েছে নেপাল সরকার।
গত ২৫ এপ্রিল ৭.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পে নেপালে সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৬৬২১ জন, আহত হয়েছেন ১৪ হাজারের বেশি মানুষ।
কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়া ভবনের নিচে এখনও হাজারো মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হলেও তাদের মধ্যে কেউ বেঁচে আছেন এমন আশা এখন আর করছে না সরকার।
“কেননা দুর্যোগের পর এরই মধ্যে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে,” শনিবার বলেছেন নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মী প্রসাদ ধাকাল।
“ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারে আমরা প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু এখন আমরা ধরে নিচ্ছে, এর নিচে আর কেউ বেঁচে নেই,” টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছেন তিনি।
হিমালয়ের পাশের দেশ নেপালে ভূমিকম্পে এর চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ৮০ বছর আগে, তখন মারা গিয়েছিল ৮ হাজারের বেশি মানুষ। তবে এবার মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে নেপাল সরকারের আশঙ্কা।
জাতিসংঘের হিসেবে, ২ কোটি ৮০ লাখ মানুষের দেশ নেপালের ৮০ লাখ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ২০ লাখ মানুষের জন্য খাদ্য, পানি, ওষুধ এখন জরুরিভাবে দরকার।
ভূমিকম্পের পর নেপালে উদ্ধার কাজে ২০টি দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ধ্বংস্তূপ সরানোর কাজ চললেও গত বৃহস্পতিবারের পর জীবিত কারও সন্ধান আর মেলেনি।
ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যেসব লাশ তুলে আনা হচ্ছে, তাতে মর্গ ভরে গেছে। রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে কাঠমান্ডুতেই শুক্রবার অসনাক্ত অনেক লাশ দাহ করা হয়।
উদ্ধারকাজে থাকা ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা রমন লাল রয়টার্সকে বলেন, “মর্গে আর লাশ রাখার উপায় নেই। তাই লাশ উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে দাহ করার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা।”
স্থানীয়রা জানায়, নেপালে নিহত এই মানুষের একটি বড় অংশ ভারতীয়, যারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর এখনও অন্তত ১ হাজার ইউরোপীয় নিখোঁজ রয়েছে।
পর্যটনের দেশ হিসেবে পরিচিত নেপালে সব সময়ই পযর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। ভূমিকম্পের সময় তিন লাখ পর্যটক নেপালে ছিলেন বলে দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল।
উদ্ধার কার্যক্রমের সঙ্গে ত্রাণ বিতরণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হলেও পাহাড়ি এই দেশে দুর্গম অঞ্চলে তা পৌঁছাতে হিশশিম খেতে হচ্ছে।
নেপাল ফুড করপোরেশনের ব্যবস্থাপক রাজ খানাল রয়টার্সকে বলেন, “ত্রাণ পৌঁছাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাক ও ড্রাইভার পাওয়া যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে দুর্গত বিভিন্ন এলাকায় নুডলস ও বিস্কুট ফেলা হচ্ছে। কিন্ত মানুষের এখন দরকার ভাত এবং সেই সঙ্গে রান্নার উপকরণ।
ভূমিকম্পের কয়েকদফা পরাঘাতের পর বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছেন অনেক নেপালি। জাতিসংঘের হিসেবে, এই ভূকম্পনে ৬ লাখ বাড়ি হয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নেপালের তথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল জানিয়েছেন, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১ হাজার ডলার করে প্রাথমিকভাবে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ৪০০ ডলার দেওয়া হচ্ছে দাহ করার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৪০:৫১ ৩৩২ বার পঠিত