শনিবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৫

ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চিন্তা হবে বোকামিঃ সিএমপি কমিশনার

Home Page » প্রথমপাতা » ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চিন্তা হবে বোকামিঃ সিএমপি কমিশনার
শনিবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৫



01.jpgবঙ্গনিউজ ডটকমঃ সুষ্ঠু নির্বাচনের সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নাগরিকদের ‘নিশ্চিন্তে’ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল।
তিনি বলেছেন, “২৮ এপ্রিল নগরবাসী উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়ে ঘরে ফিরতে পারবেন।”

সেইসঙ্গে নির্বাচনে আইন ভাঙার যে কোনো চেষ্টা ‘শক্ত হাতে’ প্রতিরোধ করা হবে জানিয়ে আব্দুল জলিল বলেছেন, “ভোটের দিন কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষের লোকজন যদি ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চিন্তা করে তাহলে মনে করতে হবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে।”

সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন নগর পুলিশের প্রধান।

এ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডের ৭১৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। মেয়র পদে ১২ জন এবং ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে মোট ২৭৬ জন ভোটের লড়াইয়ের আছেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনের নিরাপত্তায় ভোটের সাতদিন আগে থেকে সেনা মোতায়েনের দাবি জানানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পুলিশ কমিশনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রাম শহর এখনও নিরাপদ আছে। চট্টগ্রাম নগরী এবং ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ যথেষ্ট।”

তারপরও নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করলে সেনা মোতায়েন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন আব্দুল জলিল মণ্ডল।

চট্টগ্রামের ভোট কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ৫৯১টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যেসব কেন্দ্র মেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাড়ির কাছাকাছি অথবা যাতায়াত করা কঠিন, যেসব কেন্দ্রকেই এ তালিকায় রাখা হয়েছে।

এসব ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্রের প্রতিটিতে ভোটের সময় বাড়তি পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে বলে পুলিশ কমিশনার জানান।

ভোটের দিনের নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরাও সার্বক্ষণিক টহলে থাকবেন।

নির্বাচনের আগে ‘বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ’ ঠেকানোর ব্যবস্থা প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে’ এমন কোনো ব্যক্তি বা অবৈধ অস্ত্র যাতে নগরীতে ঢুকতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট ও তল্লাশির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।

নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রার্থীদের প্রচারে বাধার অভিযোগ এবং সম্প্রতি বায়েজিদ এলাকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের ঘটনায় জলিল মণ্ডল বলেন, “নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর বড় অপরাধ। এর জন্য মামলা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

নিরাপত্তার আয়োজনে কোনো ‘রাজনৈতিক চাপ’ আছে কি-না জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমরা এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। নিরাপত্তার কাজে কোনো প্রকার চাপ নেই।”

নির্বাচনের আগের রাতে ‘ভোট কেনা বেচা’ ঠেকাতেও পুলিশ সচেতন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব নেওয়ার পর নগরীর রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা পরিষ্কার, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, বিলবোর্ড অপসারণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে নগরবাসীর কাছে আলোচিত আব্দুল জলিল মণ্ডল

সম্প্রতি নগরীতে ভোটারদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে তিনি বলেন, “এমন কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন না, যেন আমাকে আবার ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নামতে হয়।”

বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ও চট্টগ্রামের গত মেয়াদের মেয়র মনজুর আলমের পক্ষে চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলন পুলিশ কমিশনারের ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিলে জলিল মণ্ডলকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।

কমিশনার বলেন, “পুলিশি কাজের বাইরে গিয়ে আমি রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা পরিষ্কারের কাজ করে থাকি। মেয়র ও কাউন্সিলর পদে যারাই নির্বাচিত হোন না কেন, আগামী ২ মে থেকে আমি আবার এসব কাজে নেমে পড়ব।”

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৫:২৫   ৩৪৪ বার পঠিত