শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৫

পাকিস্তান বধের মহাকাব্য লিখলো টাইগাররা

Home Page » এক্সক্লুসিভ » পাকিস্তান বধের মহাকাব্য লিখলো টাইগাররা
শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৫



150319095017_mushfiqur_rahim_640x360_getty_nocredit.jpgখোকন: একটি মহাকাব্য লেখা হবে। তার জন্য কতো প্রস্তুতি। গেল এশিয়া কাপে ৩২৬ রান করেও হারানো যায়নি পাকিস্তানকে। আক্ষেপের নোনা জল ছুয়ে গেছে বারবার। এবার আবার রেকর্ডের সামনে পাকিস্তানকে ফেলে পরীক্ষা নেয়া। সেবার পারলেও এবার পাকিস্তানকে পারতে দেয়নি টাইগাররা। বাংলাদেশ তাদের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা সংগ্রহ ৩২৯ রান করেছে ৬ উইকেট হারিয়ে। জিততে হলে রেকর্ড গড়েই জিততে হতো পাকিস্তানকে। পারেনি তারা। পারতে দেয়নি টাইগাররা। পারতে দেয়নি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান ও বোলাররা।
150417095511_bangladesh_cricketer_tamim_iqbal__640x360_getty_nocredit.jpgদুই ইনিংসের বিরতির মাঝে তামিম ইকবাল বললেন, মুশফিক কিভাবেই না তার কাজটা সহজ করে দিয়েছেন। গুটি শুটি মেরে পড়েছিলেন তামিম। তার সামর্থ্যের কথা অনেকেই ভুলে বসে সমালোচনার বানে বিদ্ধ করেছেন। তাই সেঞ্চুরি করার পরও তার উদযাপন হয় ভিন্ন রকম। উদ্দেশ্য সমালোচকরাই নিশ্চয়।
মুশফিক ও তামিম সেঞ্চুরি করেছেন। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এক ম্যাচে দুই সেঞ্চুরির রেকর্ড নেই। সেই রেকর্ডটারও জন্ম দিলো শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের এই ম্যাচ। আর ওই দুই সেঞ্চুরিতেই বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হবার আগেই পিছিয়ে পড়ে পাকিস্তান দল।
৪৭ রানের সময় সাদকে রিটার্ন ক্যাচ দিয়েছিলেন তামিম। আর ৩৫ রানের সময় মুশফিক ক্যাচ দিয়েছিলেন জুনাইদকে। দুজনেই ক্যাচ ফেলেছেন। আর সেই ভুলের মূল্য কড়ায় গণ্ডায় শুধতে হয়েছে পাকিস্তানকে। প্রথম দুই উইকেট ৬৭ রানে হারিয়ে চাপে পড়েছিলো টাইগাররা। সেই চাপটা মুশফিক উইকেটে আসার পর বেশ দ্রুত লয়েই ফিরে গেছে অজানায়। যেন ভোজ বাজি কোনো! তামিম তাই বলতে পারেন, মুশফিক এসেই তার কাজটা সহজ করে দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড ১৭৮ রানের জুটি তাদের।
image_211540_0paki.jpgবিশ্বকাপে বেশ ম্রিয়মান তামিমকে অনেকটাই খোলশমুক্ত দেখা গেছে এদিন। হারিসকে এক ওভারের পর পর দুই বলে দুই ছক্কা মেরে বুঝিয়েছেন তার চেহারার বিপজ্জনক দিকটা। আর মুশফিক রান করেছেন দেখতে না দেখতে। রান করার মতো সহজ কাজ যেন হয় না, বুঝিয়েছেন এমনটাই। তামিমের ১৩৫ বলের ১৩২ ও মুশফিকের ৭৭ বলের ১০৬ বারবার দেখার মতো হাইলাইটস।
খুব ভালো হতো তামিম, মুশফিকরা যেখানে শেষ করেছেন সেখান থেকে বাংলাদেশের বোলিংয়ের শুরুটা হলে। ৩৩০ সহজ টার্গেট নয়। পাকিস্তানের এই দলের কাছে সেই টার্গেটটা আরো বড় কিছু। কিন্তু শুরুতে তা মনে হয়নি। অন্তত ৫৩ রান পর্যন্ত তেমন লাগেনি। লাগেনি অধিনায়ক আজহার যতক্ষণ ব্যাট করেছেন, ততক্ষণ পর্যন্তও।
বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটা কখনোই বের হয়ে যায়নি। ছিলো নিয়ন্ত্রণেই। ৫৯ রানে দুই উইকেট পড়লো। একটি উইকেট আরাফাত সানির। অন্যটি রান আউট। ওখান থেকেই বাংলাদেশকে হতাশ করতে শুরু করে আজহার ও হারিসের জুটি। ৮৯ রানের জুটি গড়েছেন তারা। কিন্তু তাসকিন ও আরাফাতের কিছু কীর্তি তখনো দেখার বাকি। দুজনেই তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। আজহার (৭২) ও হারিসকে (৫১) শিকার করেছেন তরুণ তাসকিন। এই জুটি ভাঙ্গার সাথে পাকিস্তানের মেরুদণ্ডটাই ভেঙ্গে দিয়েছেন তিনি। তারপরও এক পর্যায়ে ৪ উইকেটে ২১৭ রান ছিলো পাকিস্তানের। জয়ের কথা তারা ভাবতেই পারতো। হতে দেয়নি টাইগার বোলাররা। ২৩ রানে পাকিস্তানের শেষ ৬ উইকেট তুলে নিয়ে আধিপত্য করা এক জয়ই তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। আরাফাত সানি এক ওভারেই ফিরিয়ে দিয়েছেন ফাওয়াদ ও সাদকে। ৬ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। আর এমন জয়ের পর কোনো উল্লাস বা উৎসব দেখা গেলো না বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মাঝে। যেন পাকিস্তানকে হারানো রোজকার কাজ! খুব সাদাসিধে ব্যাপার!
image_211540mushfiq-100.jpgআসলে পাকিস্তানকে যেভাবে হারালো টাইগাররা সেটা তো সাদাসিধে ব্যাপারের মতোই! যদিও ১৬ বছর পর গড়া কীর্তিটা থেকে যাবে অমলিন!

বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৭:৩৬   ৩৫৯ বার পঠিত