মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল ২০১৫

দুঃসময় অতিক্রম করায় প্রশাসনকে প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » দুঃসময় অতিক্রম করায় প্রশাসনকে প্রধানমন্ত্রীর ধন্যবাদ
মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল ২০১৫



nnn1.jpgবিশেষ প্রতিনিধিঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জ্বালাও-পোড়াওসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড করে কয়েকটি দল যেভাবে মানুষের ক্ষতি করেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এ ধরনের ঘটনা যাতে আর কেউ ঘটাতে না পারে এবং জঙ্গিবাদী কোনো কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে না হয়, অবশ্যই সে ব্যাপারে আপনারা কঠোর পদক্ষেপ নেবেন।’
গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে বসে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পটুয়াখালী ও নেত্রকোনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি এবং বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারকে এ নির্দেশ দেন। এ সময় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারসহ ভোলা, ঝালকাঠি, শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেয়। এ সময় তিনি স্থানীয় সমস্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও উন্নয়ন নিয়েও কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। ভিডিও কনফারেন্সে সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঝখানে একটা দুঃসময় গেছে।
প্রায় তিন মাস। সব বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সবাই যেভাবে ধৈর্য ধরে এ অবস্থা মোকাবিলা করেছেন, সহযোগিতা করেছেন, সেজন্য আমি আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ শেখ হাসিনা কালবৈশাখীর এ মৌসুমে ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করব, আপনারা যার যার দায়িত্ব পালন করে মানুষের পাশে থাকবেন।’ একই সঙ্গে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের নেওয়া কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার জন্যও স্থানীয় প্রশাসনকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। ভিডিও কনফারেন্সের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালী জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘পটুয়াখালী বাংলাদেশের সব থেকে উন্নত একটা এলাকা হতে যাচ্ছে। এটা আমরা করব। সে ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।’ পটুয়াখালীতে পায়রা সমুদ্রবন্দর, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, নৌবাহিনীর ঘাঁটি, কোস্টগার্ডের সদর দফতর স্থাপন ও বরিশাল বিভাগে সেনাবাহিনীর একটি ডিভিশন করাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। পটুয়াখালী জেলা পরিষদের প্রশাসক খান মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আপনার কাছে আমাদের কোনো দাবি-দাওয়া নেই। দাবির আগেই আপনি যে উন্নয়ন করেছেন সেজন্য আপনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’ এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে মানুষ আগে সবচেয়ে অবহেলিত ছিল। এখন আমরা চেষ্টা করছি এসব জায়গায় আরও বেশি উন্নয়ন করার। কাজেই এ উন্নয়নের কাজগুলো যাতে ভালোভাবে হয়, আপনারা সেটাই দেখবেন।’ নেত্রকোনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সঙ্গে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী সেখানকার উন্নয়নের চিত্র তুলে বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট কাজ করেছি। হাওর-বাঁওড়ের মানুষ আগে যথেষ্ট কষ্টের মধ্যে থাকত।
হাওর অঞ্চলের উন্নয়নে আমরা হাওর উন্নয়ন বোর্ড করে দিয়েছি। আমরা যেসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছি সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে এ এলাকার মানুষের কষ্ট থাকবে না।’ নেত্রকোনা জেলা পরিষদ প্রশাসক মতিউর রহমান খান জেলার কিছু সমস্যা দূর করতে কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের দাবি জানান। যার মধ্যে রয়েছে শহরকে যানজটমুক্ত করতে সংযোগ সড়ক স্থাপন, একটি হাসপাতাল নির্মাণ এবং দুর্গাপুরে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা, শহরে একটি এক হাজার আসনবিশিষ্ট অডিটোরিয়াম নির্মাণ। সব শেষে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, ‘বরিশালকে বলা হতো বাংলার শস্যভাণ্ডার। প্রাচ্যের ভেনিস হিসেবে পরিচিত ছিল বরিশাল। আমরা চাই এগুলো আবার ফিরে আসুক।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নদী ভাঙন হচ্ছে বরিশালের সবচেয়ে বড় সমস্যা। নদী ভাঙনে এক রাতে গৃহহারা ও নিঃস্ব হয়ে যায় শত শত পরিবার। তাই নদী ভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে একজন মানুষও যেন গৃহহীন না থাকে সে বিষয়ে আপনারা পদক্ষেপ নেবেন।’

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৯:০৮   ৩৬৪ বার পঠিত