শনিবার, ১৮ মে ২০১৩

হেফাজত কাণ্ডে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র: প্রধানমন্ত্রী

Home Page » প্রথমপাতা » হেফাজত কাণ্ডে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র: প্রধানমন্ত্রী
শনিবার, ১৮ মে ২০১৩



pm4_1-in.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হেফাজতে ইসলামের ৫মে’র সমাবেশে সরকারকে উৎখাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্র ষড়যন্ত্র করেছিল।শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের শুরুতে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৪ঠা মে হুমকি দেয়া হলো- পালানোর পথ পাব না। ৫ই মে হেফাজতকে বসিয়ে দেয়া হলো। মাদ্রাসার বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের ব্যবহার করে তাদের ঘাড়ে পা দিয়ে, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করা হলো। অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিলো। অনেকেই খেলেছে।”

তবে জনগণের সমর্থন থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠক শুরুর আগে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তাকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানায় আওয়ামী লীগসহ দিলের সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

পরে তিনি বলেন, “আমাকে বারবার ট্রাভেল করতে হয়েছে। প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়েছে। আমার বাবার খুনি হুদা আর রশীদকে নিয়ে ইত্তেফাকের মঈনুল হোসেন পার্টি করে। ফারুককে এরশাদ হেলিকপ্টার দেয়। কর্নেল রশীদ আর হুদাকে বেগম জিয়া সংসদে বসায়। আমার রাজনীতি শেষ করতে এই খুনিদের বারবার ব্যবহার করেছে। যদি আমি আমার বাবা-মার খুনি দেখে যেন আমি ভয় পেয়ে যাই।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য হত্যা করার পর ১৯৮১ সালের এই দিন ঢাকায় ফেরেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় দু’বোন সেদিন প্রাণে বেঁচে যান।

শেখ হাসিনার অবর্তমানে তার অনুপস্থিতিতেই ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাকে দলের সভানেত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ভারত থেকে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে আমি সব সময় বলেছি, দেশে সামরিকতন্ত্র নয়; গণতন্ত্র থাকবে। অনেকেই এতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আমি বলেছি, আমি যা বলেছি ঠিকই বলেছি। সেনাবাহিনীতে কোন বিধবার কান্না শুনতে চাই না।”

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিজয়ের অনুভূতি একটি প্রজন্মের মধ্যে নেই। স্বাধীনতা-সংগ্রামের চেতনা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে চেতনা ফিরিয়ে এনেছি।”

“এ সময়, দেখলাম হাতেগোণা কয়েকটা স্বাধীনতার গান বাজানো হচ্ছে।”

পঞ্চদশ সংশোধনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না।”

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা স্মরণ করে হাসিনা বলেন, “যাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করি তাদের অনেকেই চলে গেছেন। রাজনৈতিক প্রতিটি পদক্ষেপে আওয়ামী লীগই পথ দেখিয়েছে। তাই এই সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। মায়ের ভাষা থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সবই আওয়ামী লীগই দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “কেউ ভোগের জন্য রাজনীতি করে। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতি দেয়ার জন্য। আওয়ামী লীগ দিয়েই যাবে। যারা আগামীতে নেতৃত্ব দেবে তাদেরকে বলবো- ভোগ নয়, ত্যাগের আদর্শ নিয়ে চলতে হবে।”

“দেখতে দেখতে ৩২টি বছর পার হয়ে গেছে। শুধু আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেলাম।”

এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

তিনি বলেন, “পঁচাত্তরের পরে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে লাখো মানুষ দেখলাম। কিন্তু প্রিয় মুখগুলো দেখিনি। আমার যেতে ইচ্ছা করে নাই ৭৫ এর ৩০ জুলাই। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই যাই। রেহানা তখন ইন্টারমিডিয়েট পড়ে। ওকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলাম।”

এর আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামও প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বক্তব্য রাখেন।

আশরাফ বলেন, “বাহাত্তরের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল সুখের দিন। কিন্তু ৮১ সালে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সুখকর দিন ছিল না। দেশ ছিল দিশেহারা। আজকে দেশের সব অর্জন শেখ হাসিনার এবং আওয়ামী লীগের।”

বাংলাদেশ সময়: ১০:০৬:৫৯   ৪৬০ বার পঠিত