শনিবার, ২৮ মার্চ ২০১৫
বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসায় নিশা দেশাই
Home Page » বিশ্ব » বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসায় নিশা দেশাইবঙ্গনিউজ ডটকম ঢাকা: আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল।
বাংলাদেশের ৪৪তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মার্কিন এ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
এ সময় নিজেদের মেধা ও যোগ্যতায় বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে বলে মনে করেন তিনি। আর ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট বলেন, চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সদ্য সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রশংসা করে বিসওয়াল বলেন, বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলতে অন্যের ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন পড়বে না।
যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অনেক গভীর বলে মন্তব্য করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই মার্কিন কূটনীতিক। সম্পর্কের বিস্তৃতি বোঝাতে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ সফরে এসে প্রয়াত সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বটগাছের চারা লাগানোর প্রসঙ্গ টেনে বক্তব্য দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে বটতলায় প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ওই বটগাছ গুঁড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এসে ঐতিহাসিক ওই স্থানেই একটি বটগাছের চারা লাগান কেনেডি, মুক্তিযুদ্ধকালে মার্কিন নীতির তুমুল বিরোধিতা করে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন যিনি। তার লাগানো চারা গাছটিই এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের অন্যতম প্রতীক হিসেবে।
বিসওয়াল বলেন, ‘গত ৪৪ বছরে চারা গাছটি এখন পরিপূর্ণ একটি বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। ডালপালা বিস্তৃত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেকড়ও অনেক গভীরে প্রোথিত হয়েছে। সে বৃক্ষটি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জীবন্ত উদাহরণে পরিণত হয়েছে।’
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দু’দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়েছে। নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার বলেই এগিয়ে চলেছে তারা। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে যেতে আমরা বাংলাদেশের মানুষের পাশে ছিলাম এবং সব সময় থাকব।’
অনুষ্ঠানে ঢাকায় বর্তমান রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট, মজীনাসহ সাবেক পাঁচ রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।
বিসওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরালো ও গভীর বলেই আমরা অনেকে এসেছি স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে।’
উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, ‘নতুন কর্মস্থল হিসেবে বাংলাদেশে আমি খুব এনজয় করছি। খুব ভালো লাগছে।’
রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমেই ভালোর দিকে যাচ্ছে।’ অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলেন, ‘আমি নিজেকে বাংলাদেশি মনে করি। সেজন্য এখানে এসেছি সবার সঙ্গে কথা বলতে। আই মিস বাংলাদেশ সো মাচ।’
অনুষ্ঠানে অতিথিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আইনের শাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। সুশাসন ব্যতীত উন্নয়ন-অগ্রগতি সম্ভব নয় বলেই শেখ হাসিনার সরকার যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’
অন্যদিকে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি একেএ মোমেন।
জাতিসংঘের উপমহাসচিব জেন এলিয়াসন এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জাতিসংঘের উপমহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিকভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘের মডেল সদস্য। গণতন্ত্রসহ সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অগ্রগতি হচ্ছে।’
জাতিসংঘে বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধি, কূটনীতিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, যুক্তরাষ্ট্র ও নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।এতে অতিথিদের বাঙালি খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি দেশাত্মবোধক গান ও নাচ পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩১:০১ ৩১৯ বার পঠিত