শনিবার, ১৪ মার্চ ২০১৫

আলোচনা পরে, পরিবেশ সৃষ্টি আগে ঃ সৈয়দ আশরাফ

Home Page » সংবাদ শিরোনাম » আলোচনা পরে, পরিবেশ সৃষ্টি আগে ঃ সৈয়দ আশরাফ
শনিবার, ১৪ মার্চ ২০১৫



বঙ্গ নিউজ, ঢাকাঃ

ashraf_2.jpg

আলোচনার জন্য আগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানালেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন- ‘আগে পরিবেশ সৃষ্টি করুন। পরে আলোচনার সিদ্ধান্ত। যখন পরিবেশ সৃষ্টি হবে তখন সঠিক সিদ্ধান্তের সময় আসবে।’
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির চলমান অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির মধ্যে এই প্রথম সাংবাদিকদের সামনে কথা বললেন সৈয়দ আশরাফ।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন- ‘খালেদা জিয়াকে বলবো- সন্ত্রাস, শিশুহত্যা, মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। তাহলে দেশে শান্তি আসবে। দেশে শান্তি আসলেই কেবল আলোচনা সম্ভব। মানুষকে জিম্মি করে আলোচনা চান? এটা সম্ভব না।’
আশরাফ আরও বলেন- ‘খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করবো, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করুন। স্বাভাবিক জীবন যাত্রার পরিবেশ সৃষ্টি করুন। স্বাভাবিক পরিবেশ ছাড়া যেটা চান সেটা সম্ভব হবে না। মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় করবেন, এটা হবে না।’
খালেদা জিয়াও তো এই পেট্রোলবোমা হামলার জন্য সরকারকে দায়ি করে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছেন, আপনারা এই আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বানকে স্বাগত জানান কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন- ‘আন্তর্জাতিক তদন্তের কোনো প্রয়োজন নাই। আপানারাসহ দেশের মানুষ জানেন, কারা এইসব পেট্রোলবোমা হামলা করছে।’
তিনি বলেন- ‘আগামীতেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। খালেদা আসলেও হবে, না আসলেও নির্বাচন হবে। তাই আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোন। সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে।’
খালেদা জিয়ার সঙ্গে এখন কেউ নেই দাবি করে সৈয়দ আশরাফ বলেন - ‘আপনি মনে করেন, আপনার কুৎসিত চেহারা কেউ বোঝে না। আপনি, আপনার কুৎসিত চেহারা আড়াল করতে পারবেন না। এ জন্যই আপনার পাশে এখন কেউ নেই।’
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন- ‘পৃথিবীর কোনো দেশ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা করে না। ইরাক ও সিরিয়ার আইএস (ইসলামিক স্টেট) দুজন জাপানী সাংবাদিককে অপহরণ করেছিল। জাপান কি আইএসের সঙ্গে আলোচনা করেছে? তারা আইএসের সঙ্গে আলোচনায় রাজি ছিল না। সারা পৃথিবী একমত- সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।’
আশরাফ বলেন- ‘এই সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের আলোচনা হতে পারে না। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা করলে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়। সমস্ত রাষ্ট্র এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমরাও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি না।’
আওয়ামী লীগের এই প্রভাবশালী নেতা বলেন- ‘আলোচনা করলে এরা বিপুল উৎসাহে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। এদের নির্মূলের একমাত্র পথ- যুদ্ধ ঘোষণা করা। পৃথিবীর সবাই যুদ্ধ করছে। আমরা কেন প্রশ্রয় দিব।’
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন- ‘১৫০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা, গাড়ি পোড়ানো, স্কুলের শিক্ষার্থী, নারী, শিশুদের জীবন কেড়ে নেওয়াই হল খালেদা জিয়ার আন্দোলনের ফলাফল। পৃথিবীতে এমন আন্দোলন কোনো দিন হয় নাই। খালেদা এদেশে পোড়া মাটির নীতি গ্রহণ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আন্দোলন গণতান্ত্রিক আন্দোলন নয়, নির্বাচনের দাবিতেও কোনো আন্দোলন নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতেও কোনো আন্দোলন নয়। খালেদার আন্দোলন আইএসের অংশ।’
সৈয়দ আশরাফ বলেন- ‘সারা পৃথিবীতে যে আন্দোলন চলছে, তাদের আন্দোলনের অংশই হল খালেদা জিয়ার আন্দোলন। এদেশে আইসের মতো একটি আন্দোলন সৃষ্টির অপচেষ্টাই হল এই আন্দোলন।’
তিনি বলেন- ‘এখন বাংলার মাটি থেকে চিরতরে এই সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া এদের রক্ষা করতে পারবেন না।’
আশরাফ বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রী, শ্রমিকদের খালেদা জিয়া পুড়িয়ে মারছে। তার কাছে বাংলার কোনো মানুষই নিরাপদ নয়। কেন খালেদা জিয়া নির্বাচনে আসেন নাই, তারতো কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না।’
খালেদা জিয়ার মধ্যবর্তী নির্বাচন দাবির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। যখন নির্বাচন হবে তখন আশা করি খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিবেন। তবে তিনি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৭:৪০   ৮৮৬ বার পঠিত