বুধবার, ৪ মার্চ ২০১৫
খালেদার দুই দুর্নীতি মামলার শুনানি চলছে
Home Page » প্রথমপাতা » খালেদার দুই দুর্নীতি মামলার শুনানি চলছেবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। আসামিপক্ষের জানানো বিভিন্ন আবেদনের শুনানি চলছে প্রথমেই। আবেদনগুলোর নিষ্পত্তির ওপর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে কি-না তা নির্ভর করছে।
রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে বুধবার (০৪ মার্চ) বেলা সোয়া এগারটা থেকে শুনানি শুরু হয়েছে। দুই ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ওই দুই দুর্নীতি মামলায় নানা বিষয়ে আসামিপক্ষের পৃথক পৃথক আবেদনের শুনানি চলছে প্রথমেই।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী। তাকে সহায়তা করছেন অ্যাডভোকেট সানাহউল্লাহ মিয়া, মহসিন মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ বিএনপির আইনজীবীরা।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল। তাকে সহায়তা করছেন মীর আব্দুস সালামসহ অন্যরা আইনজীবীরা।
দুই দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে প্রধান আসামি খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে। অন্য দু’জন হচ্ছেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। দীর্ঘদিন ধরে শুনানিতে অনুপস্থিত থাকায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এ গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া।
এর আগে মঙ্গলবারও (৩ মার্চ) খালেদার পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারে আবেদন জানিয়েছিলেন। ওইদিনও বুধবার শুনানির এ দিন ধার্য করে দেন আদালত।
মামলাটির অপর আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানকেও বুধবার আদালতে হাজির করতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এ বিষয়েও শুনানি হচ্ছে আদালতে।
তবে তারেক রহমানের পক্ষে আইনজীবীর হাজিরা দিয়েছেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। তাকে উপস্থিত করার জন্য আদালতে সময়ের আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণেরও দিন ধার্য রয়েছে। এ সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে আবেদন জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। অন্যদিকে খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাতজন সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন বলে তালিকা দিয়েছেন দুদকের আইনজীবীরা।
দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সাক্ষ্য দিতে তাদের সাক্ষী হাজির আছেন আদালতে। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল জানান, পলাতক দেখিয়ে তারেক রহমানের জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিরও আবেদন জানাবেন তারা।
রাষ্ট্রপক্ষে সাতজন সাক্ষীর তালিকাও দিয়েছেন তিনি। সাক্ষীরা হচ্ছেন- দুদকের উপ-পরিচালক ও মামলার বাদী হারুন-অর রশিদ, সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার হারুনুর রশিদ, অফিসার (ক্যাশ) শফিউদ্দিন মিয়া, আবুল খায়ের, প্রাইম ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দা নাজমা পারভীন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আফজাল হোসেন।
সাক্ষীদের মধ্যে এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ।
অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার কারণে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির থাকবেন না উল্লেখ করে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিতে সময়ের আবেদন জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। তিনি আবেদনে আরও উল্লেখ করেন, এ আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে করা খালেদার করা আবেদনের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) ধার্য আছে। এ আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবিরও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
মামলার অপর পলাতক আসামি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল বিদেশে চিকিৎসাধীন বলে আদালতে অবহিত করে আবেদন জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার জামিনে থাকা দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান জামিন স্থায়ী করার আবেদন জানিয়েছেন। মনিরুল ইসলাম খান আদালতে উপস্থিত আছেন।
এদিকে খালেদা জিয়া আদালতে না গেলেও আদালত প্রাঙ্গনসহ আশেপাশের এলাকায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রচুর সংখ্যক বিজিবি-ৠাব-পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকে ও গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে আদালত চত্ত্বরে। পুরো বকশিবাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোকেও নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫১:৩২ ৩৫৬ বার পঠিত