মঙ্গলবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
৩০ হাজার আইটি পেশাজীবী তৈরি কাজ শুরু করেছে সরকার
Home Page » এক্সক্লুসিভ » ৩০ হাজার আইটি পেশাজীবী তৈরি কাজ শুরু করেছে সরকারকাঞ্চন বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ সরকার আগামী তিন বছরে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য ৩০ হাজার দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলবে সরকার। যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষ স্থানীয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং এ প্রশিক্ষণ দেবে। লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প ও আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং যৌথভাবে আজ (৩১ জানুয়ারি, শনিবার) হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমদ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম, আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং এর সরকারি খাত ন্যাশনাল লিডার গৌরভ তানেজা, আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং এর পারফরম্যান্স ইম্প্রুভমেন্ট পার্টনার আনুরাগ মল্লিক ও এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিম।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ৩০ হাজারের মধ্যে ১০,০০০ আইটি ও সায়েন্স গ্রাজুয়েটকে দেয়া হবে ‘টপ আপ আইটি প্রশিক্ষণ’ এবং ২০,০০০ উচ্চমাধ্যমিক ও গ্রাজুয়েটকে দেয়া হবে ফাউন্ডেশন স্কিল প্রশিক্ষণ। এ প্রশিক্ষণের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, টপ আপ আইটি প্রশিক্ষণ গ্রহণকারিদের মধ্য থেকে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ তরুণ-তরুণীকে দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি দেবে আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং।
গত ১৩ জানুয়ারি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প এবং আর্নেষ্ট অ্যান্ড ই্য়ং এর মধ্যে এ প্রশিক্ষণের নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ড. আজাদ বলেন, সরকার যখন ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের নিরস্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তখনই ৩০,০০০ তরুণ-তরুণীকে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং। তিনি বিভিন্ন ভাইস-চ্যাঞ্চেলরদেরকে তাদের স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরকে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে উদ্ধুদ্ধ করা এবং এলআইসিটি প্রকল্প ও আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ংকে সহযোগতিা করা আহ্বান জানান।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশের আইটি শিল্পে দক্ষ মানব সম্পদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে সরকার মানসম্মত প্রশিক্ষণের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। সেকারণে এলাইসিটি প্রকল্প ৩০,০০০ আইটি পেশাজীবী তৈরিতে আন্তর্জাতিক খ্যতি সম্পন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আর্নষ্ট অ্যান্ড ই্য়ংকে নিয়োগ দিয়েছে। আমার বিশ্বাস এসব আইটি প্রশিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা পাঁচ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এক বিলিয়ন ডলারের রপ্তাণীর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহায়কী ভূমিকা পালন করবে।
আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং এর পারফরম্যান্স ইম্প্রুভমেন্ট পার্টনার আনুরাগ মল্লিক বলেন, মানসম্মত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং যুক্তরাষ্ট্রভিক্তিক শীর্ষ স্থানীয় প্রশিক্ষণদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফো প্রো লার্নিং এর সঙ্গে যৌথভাবে ৩০,০০০ তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেবে। একই সাথে প্রশিক্ষণের জন্য উন্নত কারিকুলাম প্রণয়নে ইউরোপ এবং আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগতিা নেয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে মূল্যায়ণের ভিত্তিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের সর্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
আর্নষ্ট অ্যান্ড ইয়ং এর সরকারি খাত ন্যাশনাল লিডার গৌরভ তানেজা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করার জন্য সম্পৃক্ত হতে পেরে আমরা গর্বিত। আমার বিশ্বাস এদেশের গ্রাজুয়েট তরুণ-তরুণীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে এ খাতে আমরা চমৎকার কাজের পরিবেশ তৈরি করতে পারব।
এলআইসিটি প্রকল্পের যাত্রা শুরুর আগে প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কম্পেনেন্টের ‘কষ্ট বেনিফিট অ্যানালাইসিস’ (সিবিএ) করে বিশ্বব্যাংক। সিবিত্র প্রতিবেদনে বলা হয়, উন্নত প্রশিক্ষণের ফলে প্রকল্পের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একদিকে যেমন মেয়াদ শেষে ৩০,০০০ তরুণ-তরুণীর প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে, অন্যদিকে ১২০,০০০ তরুণ-তরুণীর অপ্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে। এ হার ১:৪। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কনজারভেটিভ হিসেবে এদের মধ্যে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হওয়া প্রত্যেকের প্রতি বছর আয় হবে কমপেক্ষে ৩,০০০ মার্কিন ডলার এবং অপ্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হওয়া প্রত্যেকের একই সময়ে কমপক্ষে ১৫০০ মার্কিন ডলার।
পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলা ও আইসিটি খাতে রপ্তাণী বৃদ্ধি, ডাটা সেন্টারের সম্প্রসারন, ই-গভমেন্টের ভিত্তি প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কম্পোনেন্টের বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে। ২০১৩ সালের ফেব্রæয়ারি থেকে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ৩০ হাজার তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণ থেকে কী অর্জন করল তা মূল্যায়ন করে তাদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৩:০৬ ৩৫৪ বার পঠিত